
কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে দাতব্য সংস্থা পরিচালিত একটি হাসপাতাল আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। আজ শুক্রবার সকালে মধুরছড়া আশ্রয়শিবিরের (ক্যাম্প-৪) ডি-২ ব্লকে এ ঘটনা ঘটে। এর আগে গতকাল রাতে পৃথক অগ্নিকাণ্ডে কুতুপালং রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরের বি-ব্লকের পাঁচটি বসতঘর পুড়ে যায়।
আগুনে পুড়ে যাওয়া হাসপাতালটির নাম ‘ওবাট হেলথ পোস্ট’। এটি ওবাট হেলপারস নামে একটি আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা পরিচালনা করে। জানতে চাইলে অগ্নিকাণ্ডের সত্যতা নিশ্চিত করেন শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) ও অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ মিজানুর রহমান। তিনি প্রথম আলোকে জানান, আগুনে হাসপাতালটির দুটি শেডের ১৩টি কক্ষসহ চিকিৎসা সরঞ্জাম পুড়ে গেছে। তবে আগুনে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
উখিয়া ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার ডলার ত্রিপুরা বলেন, ‘খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার তৎপরতা চালায়। আগুন লাগার কারণ অনুসন্ধান করা হচ্ছে।’
জানতে চাইলে ওবাট হেলথ পোস্টের স্বাস্থ্য সমন্বয়ক চিকিৎসক মাহামুদুল হাসান সিদ্দিকী বলেন, ‘আকস্মিক অগ্নিকাণ্ডে পুরো হাসপাতালটি পুড়ে গেছে। এই হাসপাতালে রোহিঙ্গাদের পাশাপাশি আশপাশের এলাকার বাসিন্দারাও বিনা মূল্যে স্বাস্থ্যসেবা পেয়ে আসছেন।’
পুড়ল পাঁচ বসতঘর
এদিকে গতকাল রাতে কুতুপালং রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরের বি-ব্লকে পাঁচটি বসতঘর আগুনে পুড়ে গেছে। তবে এতে কেউ হতাহত হননি। আশ্রয়শিবিরটিতে ৭০ হাজার রোহিঙ্গা বসবাস করেন।
ক্যাম্প সূত্র জানায়, আশ্রয়শিবিরের ঘরগুলো একটির সঙ্গে আরেকটি লাগানো। বাঁশ ও ত্রিপলের ছাউনি দিয়ে এসব ঘর তৈরি করা হয়েছে। একটি ঘর থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়ে পরে তা আরও চারটি ঘরে ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে ফায়ার সার্ভিস।
জানতে চাইলে আশ্রয়শিবিরের নেতা (মাঝি) আমান উল্লাহ বলেন, ‘আগুন লাগার সময় অধিকাংশ বাসিন্দা ঘুমিয়ে ছিলেন। রান্নাঘরের চুলা থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।’
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আগুন লাগার ঘটনা এবারই প্রথম নয়। এর আগেও অনেকবার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। রোহিঙ্গা নেতারা জানান, গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর কুতুপালং আশ্রয়শিবিরে অগ্নিকাণ্ডে এক হাজারের বেশি বসতি পুড়েছে। এ ঘটনায় একজনের মৃত্যুও হয়। গত সাত বছরে আশ্রয়শিবিরে আগুন লেগেছে অন্তত ২০০ বার।
বর্তমানে উখিয়া ও টেকনাফের ৩৩টি আশ্রয়শিবিরে নিবন্ধিত রোহিঙ্গার সংখ্যা প্রায় ১৪ লাখ। এর মধ্যে ৮ লাখ এসেছে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পরের কয়েক মাসে। এ ছাড়া গত এক বছরে আরও দেড় লাখ রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে এসেছেন।

















