যেসব শিক্ষক-কর্মকর্তার নামে কাফনের কাপড় পাঠানো হয়েছে, তাঁরা হলেন সদ্য সাবেক উপাচার্য মো. রফিকুল ইসলাম শেখ, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মো. সেলিম হোসেন, পরিচালক (গবেষণা ও সম্প্রসারণ) মো. ফারুক হোসেন, পরিচালক ছাত্রকল্যাণ মো. রবিউল আওয়াল, উপপরিচালক (ছাত্রকল্যাণ) মো. মামুনুর রশীদ, পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) জগলুল সাদত, কম্পট্রোলার নাজিম উদ্দিন আহম্মদ, প্রকৌশলী মো. হারুন অর রশিদ ও প্রকৌশলী মো. রাইসুল ইসলাম।
নগরের মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাফিজুর রহমান বলেন, ডাক বিভাগের খামে পাঠানো ওই কাপড় তিনি দেখেছেন। ছোট ছোট দুটি কাপড়। এটা যে কাফনের, না কিসের কাপড়, তা তো লেখা নেই। এ ব্যাপারে শিক্ষকদের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে। একটি জিডি হয়েছে। কোন পোস্ট অফিস থেকে এ খাম পোস্ট করা হয়েছে ইত্যাদি প্রাসঙ্গিক বিষয়ে তদন্ত করা হবে। প্রমাণ পাওয়া গেলে অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শুদ্ধাচার কমিটির সঙ্গে অপ্রীতিকর ও অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার ব্যাপারে জানতে চাইলে ওই কমিটির একটি সূত্র জানিয়েছে, ৬ ডিসেম্বর শুদ্ধাচার বাস্তবায়নসংক্রান্ত নৈতিকতা কমিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের নিচতলায় রেজিস্ট্রারের আওতাধীন পরিষদ শাখা পরিদর্শন করে। কমিটি পরিষদ শাখা আকস্মিক পরিদর্শনের বিষয়টি পরিষদ শাখায় উপস্থিত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জানান। ওই সময় পরিষদ শাখার ডেপুটি রেজিস্ট্রার শাহ মো. আল বেরুনীর অনুপস্থিতির বিষয়টি কমিটি লক্ষ করেন। এ বিষয়ে ওই শাখায় উপস্থিত কর্মকর্তা ও কর্মচারীর কাছে জানতে চাওয়া হয়। এ ছাড়া পরিদর্শনের বিষয়টি তাঁকে পরবর্তীকালে জানানোর জন্য উপস্থিত কর্মকর্তাকে বলা হয়। এ পর্যায়ে পরিষদ শাখার সেকশন কর্মকর্তা সোহেল রানা মুঠোফোনে শাহ মো. আল বেরুনীকে পরিদর্শন কমিটির উপস্থিতির বিষয়টি জানান।
পরবর্তীকালে পরিদর্শন কমিটি প্রধান প্রকৌশলীর অফিসকক্ষে প্রবেশের সময় পরিষদ শাখার ডেপুটি রেজিস্ট্রার শাহ মো. আল বেরুনী পেছন দিক থেকে কমিটির উদ্দেশ্যে উচ্চ স্বরে আজেবাজে কথা ও কটূক্তি করেন। পরিদর্শন কমিটির সদস্য ফারুক হোসেন তাঁকে ওই স্থান ত্যাগ করে তাঁর অফিসকক্ষে (পরিষদ শাখায়) ফিরে যেতে অনুরোধ জানালে শাহ মো. আল বেরুনী উপাচার্যসহ কমিটির সদস্যদের সামনে এসে উচ্চ স্বরে আপত্তিকর ও আজেবাজে কথা বলেন, ঔদ্ধত্য ও অশালীন আচরণ করেন এবং কমিটির কাজে ব্যাঘাত সৃষ্টি করেন। একই অভিযোগ প্রশাসন ও সংস্থাপন শাখার জুনিয়র সেকশন কর্মকর্তা মো. মুরাদ হোসেন এবং প্রকৌশল দপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোতাহার হোসেনের (সাময়িকভাবে বরখাস্ত) বিরুদ্ধেও পরিদর্শন প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। এ উদ্ধৃতিই জিডিতে দেওয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে শাহ মো. আল বেরুনী বলেন, ‘আমি ওই দিন ঘটনাস্থলে উপস্থিত রুয়েটের উপাচার্য মহোদয়কে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, ১৫০ টাকার ফটোকপি বইয়ের মূল্য ৫ হাজার টাকা দেখিয়ে ক্রয় করা হয়েছে। এটা বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় এসেছে। তার ব্যবস্থা না নিয়ে, আবার যাঁরা কোনো দিনই রুয়েট অফিসে না এসে বেতন তুলে নিয়ে যান, তাঁদের কক্ষে গিয়ে খোঁজ না নিয়ে আমি ব্যাংকে টাকা ওঠাতে গিয়ে গিয়েছিলাম, সেই সময় বারবার আমার খোঁজ কেন করা হয়েছে?’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি উত্তেজিত হইনি। কাউকে কটূক্তিও করিনি। বই ক্রয়ের অনিয়মের প্রতিবাদ করার কারণেই পরিদর্শন প্রতিবেদনে আমার নামে কটূক্তির প্রসঙ্গ উল্লেখ করা হয়েছে। পরিদর্শন কমিটির সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিজেই মীমাংসা করে দেন।’
এ ব্যাপারে উপাচার্য সাজ্জাদ হোসেনের মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।