চট্টগ্রামে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, ‘নির্বাচনে গুরুতর অসদাচরণ করলে প্রার্থিতা বাতিল করা হবে। কয়েকজন প্রার্থীকে এরই মধ্যে নোটিশ দিয়ে ডেকেও পাঠিয়েছি। আমরা শতভাগ নিশ্চিত করে বলতে পারি আগের রাতে ভোট হওয়ার কোনো ঘটনা ঘটবে না, সুযোগও নেই। এ জন্য অনেক কেন্দ্রে ব্যালট পেপার সকালে যাবে। এমনকি কোনো রিটার্নিং কর্মকর্তার মাধ্যমে ভোটের ফলাফল পরিবর্তনেরও কোনো সুযোগ নেই। এ ধরনের ঘটনা ঘটলে সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মঙ্গলবার চট্টগ্রাম নগরের আইস ফ্যাক্টরি রোডে পিটিআই মিলনায়তনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা, সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ সব কথা বলেন।
কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘ভোট বাক্সগুলো স্বচ্ছ। ব্যালট পেপার সকালে না গিয়ে ১০ দিন আগে অথবা ১০ মাস আগেও যদি যায়, তাহলেও প্রার্থীর পোলিং এজেন্ট সকালে ভোটকেন্দ্রে স্বচ্ছ বাক্সগুলো খালি কি-না সেটি দেখে তারপর সবার উপস্থিতিতে বাক্স বন্ধ করা হবে। সেক্ষেত্রে ভোটকেন্দ্রে অবৈধ কোনো ব্যালট বাক্স ঢোকার সুযোগ নেই। তারপরও আমরা বিশ্বাস এবং আস্থা অর্জনের জন্য ব্যালট পেপার সকালে পাঠাব।’
অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য পেশিশক্তি নিয়ন্ত্রণ রাখার আহ্বান জানিয়ে সিইসি বলেন, ‘আর মাঝখানে যদি কোনো পেশীশক্তির উদ্ভব ঘটে তাহলে প্রিসাইডিং অফিসারকে বলা হয়েছে তিনি ভোট বন্ধ করে দেবেন। তিনি যদি বন্ধ না করেন রিটার্নিং অফিসার অবহিত হলে তিনি বন্ধ করে দেবেন। তিনিও যদি বন্ধ না করেন, আমরা অবহিত হলে ঢাকা থেকে বন্ধ করে দেব। ভোট নিয়ে একটা অনাস্থার পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে, সেটি যাতে দূর হয়। সে কারণে ভোট কেন্দ্রে মিডিয়া ঢুকে ছবি তুলতে পারবে। মিডিয়ার মাধ্যমে সত্য-মিথ্যা জনগণ জানাতে পারবে। অধিকতর ঝুঁকিপূর্ণ ভোটকেন্দ্রে অধিক সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’
সিইসি বলেন, ‘নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন, তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছি। তাদের বক্তব্য শুনেছি। আমরাও যথাযথ নির্দেশনা দিয়েছি। চট্টগ্রামে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ রয়েছে। কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া বড় ধরণের কোন ঘটনা ঘটেনি। পোস্টার ছেঁড়া ও দুয়েক ক্যাম্পে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন। কিন্তু সার্বিকভাবে যারা প্রার্থী হয়েছেন, তারা আমাদের জানিয়েছেন যে, রিটার্নিং কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্টদের আচরণে আমরা সন্তুষ্ট।’
সিইসি আউয়াল আরও বলেন, ‘আমরা একটি অ্যাপস তৈরি করেছি। যেখানে দুই ঘণ্টা পরপর প্রতিটি সংসদীয় আসনে কত শতাংশ ভোট পড়ল তা সেখানে ইনপুট দেওয়া হবে। এর উদ্দেশ্য হচ্ছে দশটার সময় দেখা গেল ১০ শতাংশ ভোট পড়ল। কিন্তু ১২টার দিকে হঠাৎ ৮০ শতাংশ হয়ে গেল। এটি বিশ্বাসযোগ্য হবে না। এ জন্য এ অ্যাপস তৈরি করা হয়েছে ‘
এ সময় উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন কমিশন সচিব মো. জাহাংগীর আলম, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার তোফায়েল আহমেদ, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায়, রেঞ্জ পুলিশের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) নুরে আলম মিনা ও জেলা প্রশাসক এবং রিটার্নিং কর্মকর্তা আবুল বাশার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান প্রমুখ।