দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে ৩১ বিলিয়ন ডলারের ঘরে নেমেছে। মঙ্গলবার এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) কাছে দায় হিসেবে ১০৫ কোটি ডলার পরিশোধ নিষ্পত্তির পর রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ৩১ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলারে। গত সোমবার রিজার্ভ ছিল ৩২ দশমিক ২২ বিলিয়ন ডলার। এক বছর আগে রিজার্ভ ছিল প্রায় ৪৪ বিলিয়ন ডলার। পতন ঠেকাতে এরই মধ্যে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ইতোমধ্যে আইএমএফের প্রথম কিস্তির প্রায় ৪৭ কোটি ডলার রিজার্ভে যোগ হয়েছে।
আকু হলো একটি আন্তঃদেশীয় লেনদেন নিষ্পত্তি ব্যবস্থা। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, ইরান, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, নেপাল ও পাকিস্তানের মধ্যকার লেনদেনের দায় পরিশোধ করা হয়। খারাপ অবস্থার কারণে গত অক্টোবরে আকু থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নিয়েছে শ্রীলঙ্কা। বাকি দেশগুলো প্রতি দুই মাস অন্তর নিজেদের মধ্যকার দায় নিষ্পত্তি করে। গত জানুয়ারি মাসে আকুতে ১১২ কোটি ডলার পরিশোধ হয়। সাম্প্রতিক সময়ে সর্বোচ্চ ২২৪ কোটি ডলার পরিশোধ হয় গত বছরের মে মাসে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, দেশের ইতিহাসে রিজার্ভ প্রথমবারের মতো ৪৮ বিলিয়ন ডলারের ঘর অতিক্রম করে ২০২১ সালের আগস্টে। তবে করোনা-পরবর্তী বৈশ্বিক চাহিদা বৃদ্ধি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে যে পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা দেশে আসছে, খরচ হচ্ছে সে তুলনায় বেশি। বাড়তি চাহিদা মেটাতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে প্রতিনিয়ত ডলার বিক্রি করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এতে করে ধারাবাহিকভাবে কমছে রিজার্ভ।
চলতি অর্থবছরের এ পর্যন্ত বিভিন্ন ব্যাংকের কাছে ১০ বিলিয়ন ডলারের বেশি বিক্রি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গত অর্থবছর বিক্রি করা হয় ৭ দশমিক ৬২ বিলিয়ন ডলার। এভাবে ডলার বিক্রির বিপরীতে বাজার থেকে টাকা উঠে আসছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে। এতে করে রিজার্ভ কমার পাশাপাশি টাকা তারল্যেও চাপ তৈরি হয়েছে। এ অবস্থার উন্নয়নে আমদানি দায় কমানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বিভিন্ন উদ্যোগের ফলে আমদানি কিছুটা কমেছে। এতে করে গত জানুয়ারি পর্যন্ত চলতি অর্থবছরের সাত মাসে বাণিজ্য ঘাটতি প্রায় সাড়ে ৫ বিলিয়ন ডলার কমে ১৩ দশমিক ৩৯ বিলিয়ন ডলারে নেমেছে। চলতি হিসাবের ঘাটতি নেমেছে ৫ বিলিয়নে। তবে আর্থিক হিসাবে বড় অঙ্কের ঘাটতির কারণে সামগ্রিক ঘাটতি সাড়ে তিন গুণ বেড়ে ৭ দশমিক ৩৯ বিলিয়ন ডলারে ঠেকেছে।