রাশিয়ায় মার্কিন অস্ত্র ব্যবহারে অনুমতির পরই ইউক্রেনের খারকিভে হামলা

0
73
রাশিয়া হামলায় বিধ্বস্ত খারকিভ অঞ্চলের একটি এলাকা, ৩০ মে, ছবি: রয়টার্স

ইউক্রেনের খারকিভ শহরে রাশিয়ার বিমান হামলায় তিনজন নিহত হয়েছেন। রাশিয়ায় হামলা চালাতে মার্কিন অস্ত্র ব্যবহারের জন্য ইউক্রেনকে যুক্তরাষ্ট্রের অনুমতির কয়েক ঘণ্টা পরই এ হামলা চালানো হলো।

রাশিয়া সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ইউক্রেনের দখলকৃত বেশ কয়েকটি এলাকা পুনর্দখলে নিয়েছে।  রাশিয়ার ভূখণ্ডে আঘাত হানার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের অপেক্ষাকৃত দীর্ঘ পাল্লার অস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি পেতে জোরালো আহ্বান জানাচ্ছিল ইউক্রেন। তবে যুক্তরাষ্ট্র তাতে সায় দেয়নি। তাদের আশঙ্কা, এতে মস্কোর সঙ্গে সরাসরি সংঘাতে জড়িয়ে পড়তে পারে ন্যাটো। তবে চলতি মাসে খারকিভ অঞ্চলে রুশ বাহিনী নতুন করে অভিযান শুরু করার পর এসব হিসাব–নিকাশ পাল্টে গেছে বলে মনে হচ্ছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার একাধিক মার্কিন কর্মকর্তা জানান, খারকিভ অঞ্চলের সুরক্ষার স্বার্থে রাশিয়ায় হামলার জন্য মার্কিন অস্ত্র ব্যবহার করতে ইউক্রেনকে অনুমতি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এর কয়েক ঘণ্টা পরই খারকিভে হামলা চালায় রাশিয়া।

আজ শুক্রবার ভোরে এক টেলিগ্রাম পোস্টে খারকিভের আঞ্চলিক গভর্নর ওলেগ সিনেগুভব বলেন, রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ৩ জন নিহত এবং ১৬ জন আহত হয়েছেন। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে একজন জরুরি চিকিৎসাকর্মীও আছেন। হামলায় একটি অ্যাম্বুলেন্স ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলেও জানান তিনি।

সিনেগুবভ বলেন, ‘শত্রুপক্ষ আবারও নতুন কৌশল ব্যবহার করেছে। চিকিৎসাকর্মী, উদ্ধারকর্মী এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা ইতিমধ্যে ঘটনাস্থলে কাজ করছেন।’

খারকিভের মেয়র ইগর তেরেখোভ স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, আরও অনেকে আবাসিক ভবনের ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে থাকতে পারেন। তিনি আরও বলেন, ঘটনাস্থলে একজন সেনা সদস্যও ছিল না, একটিও সামরিক সরঞ্জাম ছিল না।

তেরেখোভ বলেছেন হামলায় আহত মানুষের সংখ্যা ২৩।
রাশিয়ার বেলগোরোদ সীমান্তের অপর পাশে ইউক্রেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর খারকিভের অবস্থান। খারকিভে নিয়মিতই রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়ে থাকে। সম্প্রতি সেখানকার একটি হার্ডওয়্যার স্টোরে রাশিয়ার বিমান হামলায় ১৬ জন নিহত হয়েছেন।

গতকাল যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা জানান, রাশিয়ার ভূখণ্ডে হামলা চালাতে মার্কিন অস্ত্র ব্যবহার করার ব্যাপারে ইউক্রেনের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের যে বিধিনিষেধগুলো ছিল, তা প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। তবে শুধু খারকিভ অঞ্চলের সুরক্ষা নিশ্চিতের স্বার্থেই এমনটা করা যাবে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, ‘খারকিভ অঞ্চলে হামলার জবাবে পাল্টা হামলার জন্য ইউক্রেন যেন যুক্তরাষ্ট্রের সরবরাহ করা অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে, তা নিশ্চিত করার জন্য প্রেসিডেন্ট সম্প্রতি তাঁর দলকে নির্দেশ দিয়েছেন। এর মধ্য দিয়ে যেন ইউক্রেন হামলাকারী বা হামলার প্রচেষ্টাকারী রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে পাল্টা আঘাত হানতে পারে।’

নীতিমালায় পরিবর্তন আনার বিষয়টি দ্বিতীয় এক মার্কিন কর্মকর্তাও রয়টার্সকে নিশ্চিত করেছেন।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন গত বুধবারই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, বাইডেন নীতিমালায় পরিবর্তন আনতে পারেন।

চলতি মাসের শুরুর দিকে ইউক্রেন সফরে গিয়েছিলেন ব্লিঙ্কেন। বুধবার মলদোভায় সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘যুদ্ধক্ষেত্র পাল্টে যাওয়ায়’ সে অনুযায়ী পদক্ষেপ নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।

ন্যাটোর বৈঠককে সামনে রেখে জোটপ্রধান জেনস স্টোলটেনবার্গও বারবার বলে আসছেন, সদস্য দেশগুলোর উচিত রাশিয়ায় হামলা চালানোর ক্ষেত্রে যে সীমাবদ্ধতা আরোপ করা আছে, তা পুনর্বিবেচনা করা।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.