রামুর বৌদ্ধবিহারে অগ্নিকাণ্ড, নাশকতা

0
116
গ্রেপ্তার শাহজাহান।

কক্সবাজারের রামুর বৌদ্ধবিহারে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তার নাম আবদুল ইয়াছির ওরফে শাহজাহান। তিনি উপজেলার ফতেখাঁরকুল ইউনিয়নের পূর্ব মেরুংলা এলাকার বিএনপি নেতা আবদুল করিমের ছেলে বলে জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

নির্বাচনের আগে অস্থিরতা তৈরি করতে পরিকল্পিত নাশকতার অংশ হিসেবে অগ্নিকাণ্ডটি ঘটানো হয়েছিল বলে আজ বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেছেন পুলিশ সুপার (এসপি) মাহাফুজুল ইসলাম।

সংবাদ সম্মেলনে এসপি মাহাফুজুল বলেন, গত ৫ জানুয়ারি রামুর প্রায় দেড়শ বছরের প্রাচীন কাঠের তৈরি উসাইচেন বড় ক্যাং বৌদ্ধবিহারে অগ্নিসংযোগ করা হয়। এর ২০ মিনিট আগে স্থানীয় ফায়ার সার্ভিস স্টেশনে ফোন করে বলা হয়– ‘ঈদগড় বাজারে আগুন লেগেছে।’ সেই খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট দ্রুত উপজেলা সদর থেকে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দূরে ঈদগড়ের উদ্দেশে রওনা হয়। গন্তব্যে পৌঁছার পর তারা জানতে পারেন, খবরটি ছিল ভুয়া। এরই মধ্যে রামু সদরের চেরাংঘাটা এলাকায় বৌদ্ধবিহারে আগুন দেওয়া হয়। স্থানীয়দের সহায়তায় দ্রুত তা নিয়ন্ত্রণে আনতে পারায় বড় ক্ষয়ক্ষতি থেকে রক্ষা পাওয়া গেছে। এরপরই ঘটনায় জড়িতদের ধরতে মাঠে নামে পুলিশ।

পরদিন অজ্ঞাত পরিচয় আসামির নামে রামু থানায় মামলা করেন বিহার পরিচালনা কমিটির সভাপতি মংকিউ রাখাইন। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পান থানার এসআই সুনয়ন বড়ুয়া। এক পর্যায়ে অভিযুক্ত হিসেবে শাহজাহানকে শনাক্ত করা হয়। ৯ জানুয়ারি চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
অভিযুক্তের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী, বুধবার সন্ধ্যায় রামুর ফতেখাঁরকুলের হাইটুপি ভূতপাড়ায় অভিযান চালিয়ে ঘটনার দিন অগ্নিকাণ্ড নিয়ে ভুয়া সংবাদ দেওয়ায় ব্যবহৃত মোবাইল ফোনের সিমটি উদ্ধার করা হয়। তবে ফোনটি পাওয়া যায়নি। তার বাবা আবদুল করিম ফতেখাঁরকুল ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক।

শাহজাহান বৌদ্ধবিহারে আগুন দেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন দাবি করে পুলিশ সুপার বলেন, গত ৭ জানুয়ারি জাতীয় নির্বাচন হয়। এর আগে ৫ জানুয়ারি নাশকতার পরিকল্পনা করা হয়। সেই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে রাতেই বৌদ্ধবিহারে আগুন দেন শাহজাহান। বৃহস্পতিবার তাঁকে আদালতে উপস্থাপন করেছে রামু থানা পুলিশ। এ ঘটনায় আরও কেউ জড়িত আছে কিনা তা জানার জন্য জিজ্ঞাসাবাদ করতে তাঁর সাত দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়েছে। তবে এ বিষয়ে পরে শুনানি করা হবে বলে জানিয়ে আসামিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।

উপজেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক আবুল কাশেম বলেন, রামুর বৌদ্ধবিহারে অগ্নিকাণ্ডের সঙ্গে বিএনপির কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। দলের পক্ষ থেকে এমন ঘৃণ্য কাজের পরিকল্পনাও কখনও করা হয়নি। রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের জন্য বিষয়টিকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করছে পুলিশ।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.