ওজন কমানোর জন্য বিশেষজ্ঞরা খাবারের তালিকায় শর্করার পরিমাণ কমানোর পরামর্শ দেন। এ কারণে অনেকে ওজন কমাতে বা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে ভাতের বদলে রুটি খান। কেউ কেউ আবার রাতের খাবারে কোনটি বেছে নেবেন তা নিয়ে দ্বিধায় ভোগেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাতের খাবার হালকা সবসময় হালকা হওয়া উচিত। ওজন কমানোর জন্য ভাত না রুটি -কোনটি উপকারী তা জানানো হয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভাত ও রুটির মধ্যে পুষ্টিগুণে খুব একটা পার্থক্য নেই। দুটি শস্য প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে পাওয়া যায়। দুটির একমাত্র পার্থক্য হলো সোডিয়ামের পরিমাণ। চালে খুব সামান্য পরিমাণে সোডিয়াম থাকে। যে পরিমাণ চালে ১২০ গ্রাম সোডিয়াম পাওয়া যায়, ঠিক একই পরিমাণ গমে ১৯০ মিলিগ্রাম সোডিয়াম থাকে।
ভাত আর রুটি দুটিই শর্করা। সব শর্করাই খাওয়ার পর পরিপাকতন্ত্রে গিয়ে ভেঙে যায়, তারপর রক্তে গ্লুকোজ বা মনোস্যাকারাইড হিসেবে শোষিত হয়। সেই গ্লুকোজ হলো আমাদের মূল চালিকা শক্তি। শরীরের প্রায় প্রতিটি শারীরবৃত্তীয় কাজে দরকার হয় এ গ্লুকোজ। কিন্তু প্রয়োজনের অতিরিক্ত গ্লুকোজ বা শর্করা দেহে সঞ্চিত হয় চর্বি বা ফ্যাট হিসেবে।
ডায়েটেশিয়ান লাভলিন কৌরের মতে, ভাত ও রুটি- দুটিরই স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে। চাল এবং ডালে একসাথেই সব অ্যামিনো অ্যাসিড থাকে এবং প্রোটিনের একটি সম্পূর্ণ উৎস তৈরি করে যা বেশিরভাগ উদ্ভিদ-ভিত্তিক খাবারে অনুপস্থিত।
কৌর জানান, ভাত বা রুটি দুটিই দিনে খাওয়া যায়। তবে ওজন কমানোর জন্য রাতে খেলে অবশ্যই রাত ৮ টার মধ্যে খাবার খেয়ে নিতে হবে।
তিনি আরও জানান, বেশি রাতে শর্করাসমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার ফলে পেট ফোলাভাব হতে পারে। সেক্ষেত্রে শরীর পুষ্টি শোষণে বাধা সৃষ্টি করতে পারে।
রুটির গুণাগুণ বিবেচনা করলে এটি ফাইবার সমৃদ্ধ। এছাড়াও এটি আপনাকে দীর্ঘক্ষণ তৃপ্ত রাখতে সাহায্য করে। এছাড়াও রুটির মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, সোডিয়াম রয়েছে। এটি ভাতের মতো দ্রুত রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়ায় না। অন্যদিকে ভাতে রুটির তুলনায় কম পরিমাণে ডায়াটরি ফাইবার, প্রোটিন ও ফ্যাট থাকে।
যদি রুটি খান, তাহলে ময়দার রুটি একদমই খাবেন না। দুটি রুটির সঙ্গে এক বাটি সবজির তরকারি অবশ্যই রাখবেন। সেক্ষেত্রে এমন সবজি বেছে নেবেন যাতে শরীরে পুষ্টির চাহিদা পূরণ হবে এবং যাতে ফাইবারের পরিমাণ বেশি থাকবে।
রাতে যদি ভাত খাওয়ার পরিকল্পনা করেন তাহলে ভাতের সঙ্গে সব সময় হালকা খাবার খাবেন। ভাতের সঙ্গে ডাল ও এক বাটি সবজির তরকারি খেলেই যথেষ্ট। সেক্ষেত্রে ব্রাউন রাইস বেছে নেওয়াই ভাল।
ওজন কমানোর ক্ষেত্রে যে বিষয়টি মাথায় রাখতে হয়, তা হল কম পরিমাণে শর্করা গ্রহণ করা। এই ক্ষেত্রে ভাত ও রুটির মধ্যে যে বিশেষ কোনও পার্থক্য রয়েছে তা নয়। তবে যাই খান না কেন তা খেতে হবে পরিমিত আকারে।