রাজশাহীতে বাসায় ঢুকে বিচারকের স্কুলপড়ুয়া ছেলেকে ছুরিকাঘাতে হত্যা, স্ত্রী আহত

0
16
হামলার ঘটনায় আহত বিচারকের স্ত্রী তাসনিম নাহারকে অস্ত্রোপচার কক্ষ থেকে ওয়ার্ডে নেওয়া হচ্ছে। আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে

রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আবদুর রহমানের ভাড়া বাসায় ঢুকে ছেলে তাওসিফ রহমানকে (সুমন) ছুরিকাঘাত করে হত্যার ঘটনা ঘটে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে বেলা আড়াইটার পর নগরের ডাবতলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

দুর্বৃত্তের হামলায় বিচারক আবদুর রহমানের স্ত্রী তাসমিন নাহার গুরুতরও আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মুখপাত্র শংকর কুমার বিশ্বাস বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

আবদুর রহমানের গ্রামের বাড়ি জামালপুর জেলায়। তিনি পরিবার নিয়ে নগরের ডাবতলা এলাকায় ভাড়া বসবাস করতেন। তাওসিফ রহমান নবম শ্রেণিতে পড়ত বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

রাজশাহী নগরের ডাবতলা এলাকার এই ভবনের পাঁচতলায় ভাড়া থাকেন বিচারক আব্দুর রহমান। হামলার পর পুলিশ বাসাটি ঘিরে রেখেছে। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে
রাজশাহী নগরের ডাবতলা এলাকার এই ভবনের পাঁচতলায় ভাড়া থাকেন বিচারক আব্দুর রহমান। হামলার পর পুলিশ বাসাটি ঘিরে রেখেছে। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে

হাসপাতালের মুখপাত্র শংকর কুমার বিশ্বাস বলেন, তাসমিন নাহারকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার শরীরে অস্ত্রপচার করা হচ্ছে। ঘটনাস্থল থেকে একজন দুর্বৃত্তকে আটক করা হয়েছে। আহত হওয়ায় তাকেও রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, হামলাকারী হিসেবে আটক ব্যক্তির নাম ইমন। তাঁর বাড়ি গাইবান্ধায়। ভবনে ঢোকার সময় ওই যুবক দারোয়ানের কাছে থাকা খাতায় নিজের নাম লিখেছেন লিমন। ‘বিচারকের ভাই’ পরিচয় দিয়ে তিনি পাঁচতলার ফ্ল্যাটে যান।

ভবনটির দারোয়ান মেসের আলী বলেন, ওই যুবককে তিনি আগে কখনো দেখেননি। বিচারককে ভাই পরিচয় দেওয়ায় তিনি ঢুকতে দেন। তবে তার আগে নাম ও মুঠোফোন নম্বর লিখিয়ে নেন। দুপুর আড়াইটার দিকে ওই যুবক ফ্ল্যাটে যান। এর প্রায় ৩০ মিনিট পর ফ্ল্যাটের গৃহকর্মী তাকে এসে জানান, ফ্ল্যাটে বিচারকের ছেলেে ও স্ত্রীকে কুপিয়ে আহত করা হয়েছে। এরই মধ্যে ভবনের অন্য ফ্ল্যাটের বাসিন্দারাও চলে আসেন। তারা সবাই ফ্ল্যাটে ঢুকে তিনজনকেই আহত পান। এরপর তিনজনকেই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, নিহত সুমনের মরদেহ মর্গে রাখা হয়েছে। আর হামলকারী যুবক ও বিচারকের স্ত্রীকে অস্ত্রোপচার কক্ষে নিয়ে যাওয়াা হয়েছে।

হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন রাজশাহী মহানগর পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে
হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন রাজশাহী মহানগর পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে

খবর পেয়ে বিকেল ৫টার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান। পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এসে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, হামলাকারী ব্যক্তির পকেটে একটি ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে তিনি চালক। তার সঙ্গে পূর্ববিরোধ থাকতে পারে।

পুলিশ কমিশনার জানান, সিলেটের সুরমা থানায় এই ব্যক্তির বিরুদ্ধে জিডি করেছিলেন তাসমিন নাহার। কেন এই ঘটনা ঘটেছে তা তারা এখনো বিস্তারিত জানেন না।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.