রপ্তানিতে উৎসে কর বাড়তে পারে

0
101
এনবিআর

রপ্তানি আয়ে উৎসে কর বাড়িয়ে দ্বিগুণ করার পরিকল্পনা করছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। রাজস্ব সংগ্রহ বাড়াতে আগামী অর্থবছরের বাজেটে এই কর হার বাড়ানোর প্রস্তাব আসতে পারে। সংশ্নিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

বর্তমানে সব ধরনের পণ্য রপ্তানির আয় থেকে দশমিক ৫০ শতাংশ হারে উৎসে কর নেওয়া হচ্ছে। আগামী ৩০ জুন এর মেয়াদ শেষ হবে। এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরে এই কর হার ১ শতাংশ করা হতে পারে। তবে দেশের প্রধান রপ্তানি পণ্য তৈরি পোশাক খাতের উদ্যোক্তারা বলছেন, উৎসে কর বাড়ানো হলে রপ্তানি আয়ে বিরূপ প্রভাব পড়বে। দেশে বর্তমানে বৈদেশিক মুদ্রার যে সংকট চলছে, তা আরও বাড়িয়ে দিতে পারে।

এনবিআর সূত্র জানায়, দেশের রপ্তানি আয়ে উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি রয়েছে। পাশাপাশি রপ্তানি পণ্যের দামও কিছুটা বেড়েছে। অন্যদিকে ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় রপ্তানিকারকরা আগের চেয়ে বেশি অর্থ পাচ্ছেন। এ অবস্থায় রপ্তানি খাত থেকে আগামী অর্থবছরে রাজস্ব সংগ্রহ বাড়ানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে।

এর আগেও বিভিন্ন অর্থবছরের বাজেটে রপ্তানি আয়ে ১ শতাংশ উৎসে কর কেটে রাখার প্রস্তাব ছিল। যদিও পরে তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকদের দুই সংগঠন বিজিএমইএ, বিকেএমইএসহ অন্যান্য ব্যবসায়ী সংগঠনের দাবির মুখে তা বাজেট পাসের সময় কমানো হয়।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের ১০ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) ৪ হাজার ৩৩৪ কোটি ডলারের রপ্তানি আয় হয়েছে। আশা করা হচ্ছে, অর্থবছর শেষে মোট রপ্তানি আয় ৫ হাজার কোটি ডলার স্পর্শ করবে। ১০ মাসে রপ্তানি আয়ে ৩৫ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এনবিআর আশা করছে, চলতি অর্থবছরে রপ্তানি আয়ের উৎসে কর থেকে প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আসবে। যদিও আগামী অর্থবছরে রপ্তানি খাতে এত প্রবৃদ্ধি না হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। অর্থ বিভাগ মনে করছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে রপ্তানি আয়ে ২০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হতে পারে।

অর্থ বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, আগামী অর্থবছরের বাজেটে ভর্তুকি বাবদ বেশি ব্যয় করতে হবে সরকারকে। বিশ্ববাজারে জ্বালানি, সার, ভোগ্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় সরকারকে ভর্তুকি বাড়াতে হচ্ছে। কিন্তু সে অনুযায়ী রাজস্ব আয় বাড়ানোর সুযোগ হচ্ছে না। এ ছাড়া রপ্তানি বেড়ে যাওয়ায় সরকারকে নগদ সহায়তা বাবদ ব্যয়ও বাড়াতে হচ্ছে। করোনার সময়ে শ্রমিকদের বেতন দেওয়ার জন্য যে প্রণোদনা তহবিল সরকার দিয়েছে, সেখানে ভর্তুকি বাবদ বরাদ্দ রাখতে হচ্ছে সরকারকে। সামগ্রিকভাবে সরকার বাড়তি ব্যয়ের চাপে রয়েছে।

এ বিষয়ে মতামত জানতে চাইলে তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএর সহসভাপতি শহীদুল্লাহ আজিম সমকালকে বলেন, বিশ্বে এক ধরনের মন্দা শুরু হয়েছে। অনেক জায়গায় বিক্রয়কেন্দ্র বন্ধ হচ্ছে। এ দিকে দেশে উৎপাদন খরচ বেড়েছে। বেড়েছে জাহাজ ভাড়াসহ অন্যান্য পণ্য পরিবহন খরচ। আগামীতে গ্যাসের দাম বাড়বে বলে শোনা যাচ্ছে। এ অবস্থায় রপ্তানি আয়ের উৎসে কর বাড়ানো হলে তা তৈরি পোশাক শিল্পের জন্য ব্যাপক চাপ সৃষ্টি করবে। প্রতিষ্ঠান পরিচালনার তহবিলে সংকট দেখা দেবে। দেশে বৈদেশিক মুদ্রার আয় কমে যাবে।

শেখ আবদুল্লাহ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.