ব্যাংকের মতো মন্ত্রীদেরও জবাবদিহি নেই: সংসদে কাজী ফিরোজ রশীদ

0
122
জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ

টাকা পাচারের জবাবদিহি কে করবে—এই প্রশ্ন রেখে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ বলেছেন, মন্ত্রী এখানে (সংসদ) থাকেন না। কোন মন্ত্রীর কী দায়িত্ব, সেটাও তিনি জানেন না। কে কী কাজ করেন, তার কোনো জবাবদিহিও নেই। ব্যাংকের যেমন জবাবদিহি নেই, মন্ত্রীদেরও জবাবদিহি নেই।

আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে কাজী ফিরোজ রশীদ এসব কথা বলেন। কোথাও জবাবদিহি না থাকলে দেশ কীভাবে চলবে—সেই প্রশ্ন রেখে কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী ব্যাংকের লাইসেন্স দেন। সেটা কীভাবে চলবে, তা ঠিক করবে বাংলাদেশ ব্যাংক, অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংকিং বিভাগ। তাদের জবাবদিহির মধ্যে আনতে হবে। কেন জনগণের টাকা লুটপাট হচ্ছে, কে এসবের জন্য দায়ী, তা খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি গঠনের দাবি জানান তিনি।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দিয়ে কাজী ফিরোজ রশীদ অভিযোগ করেন, সাউথ বাংলা ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন এক হাজার কোটি টাকা নিয়ে চলে গেছেন। জাতীয় পার্টির এই সংসদ সদস্য বলেন, তিনি (আমজাদ) পাচার করা অর্থে যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান ও একাধিক বাড়ি কিনে বসবাস করছেন। তিনি একা এই কাজ করেননি। বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতিনিয়ত প্রত্যেক ব্যাংকে অডিট করে। এক হাজার কোটি টাকা তো এক দিনে নেওয়া হয়নি। বাংলাদেশ ব্যাংক ও অর্থ মন্ত্রণালয় কী করল?

অর্থমন্ত্রীর সমালোচনা করে কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, ‘এটা নিয়ে আমরা কথা বলতে পারব না। এখানে অর্থমন্ত্রী কখনো থাকেন না। উনি কোনো কথাই শুনতে চান না।’

একটি পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন দেখিয়ে জাতীয় পার্টির এই সংসদ সদস্য বলেন, অর্থমন্ত্রী বা অর্থ মন্ত্রণালয় কোনো প্রতিবাদ করেনি। তারা জানে, এক হাজার কোটি টাকা কোনো টাকাই না। এখানে পাঁচ হাজার কোটি টাকা হলে তারা নড়েচড়ে বসে। ১০ হাজার কোটি টাকা হলে আরেকটু নড়েচড়ে বসে।

এর আগে রাজধানীর বঙ্গবাজারের অগ্নিকাণ্ড নিয়ে জাতীয় সংসদে ৩০০ বিধিতে বিবৃতি দেন ত্রাণ ও দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান। তাঁর বিবৃতির সমালোচনা করেন কাজী ফিরোজ রশীদ। তিনি বলেন, ‘ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী বিরাট-লম্বা-চওড়া বিবৃতি শোনালেন, কত ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগ, কৃষক লীগ, উনি নিজে দিনরাত পরিশ্রম করে আগুন নিভিয়েছেন। আসলে আগুন নিভান নাই, আগুন আইজও জ্বলছে।’

কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, শত চেষ্টার পরেও বঙ্গবাজারের কোনো দোকান রক্ষা পায়নি। আর যত বেশি লোকজন গেছে, তত বেশি লুটপাট হয়েছে। আগে ব্যবস্থা নিলে লুটপাট হতো না।

মন্ত্রীদের সমালোচনা করে কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, মন্ত্রীরা একেক সময় একেক কথা বলেন। একেক সময় একেক আইনের ব্যাখ্যা দেন। আইনের ব্যাখ্যা দেবেন আইনমন্ত্রী। অর্থের ব্যাখ্যা দেবেন অর্থমন্ত্রী। কিন্তু তাঁরা কারও কাছে ব্যাখ্যা পান না।

অনির্ধারিত আলোচনায় জাতীয় পার্টির আরেক সংসদ সদস্য পীর ফজলুর রহমান বলেন, দেশে প্রতিনিয়ত অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে। মোকাবিলায় প্রস্তুতির অবস্থা খারাপ। বঙ্গবাজারে হাজার হাজার দোকান পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। ঢাকার ভেতর স্থাপনা অপরিকল্পিত। এখানে আগুন নেভানোর সুযোগ নেই। চুরিপট্টি সরানোর কথা, সেটা এখনো হয়নি। যাদের এসব দেখার কথা, তারা কী করছে?

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.