লেটস টক: আবারও তরুণদের মুখোমুখি হলেন প্রধানমন্ত্রী

0
64
লেটস টক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: সংগৃহীত

‘লেটস টক’ অনুষ্ঠানে আবারও তরুণদের মুখোমুখি হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্মার্ট বাংলাদেশ নিয়ে তরুণ প্রজন্মের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তরুণদের মতামতগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেই সঙ্গে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, এখান উপস্থিত তরুণরাই সামনে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার মতো যোগ্যতা রাখেন।

শুক্রবার আওয়ামী লীগের গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই) আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ইস্যু, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র নীতি এবং তরুণদের নিয়ে ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা ও নীতিনির্ধারণ বিষয়ে কথা বলেন শেখ হাসিনা। এ সময় তরুণ প্রজন্মের প্রতিনিধিরা তাদের চাওয়া-পাওয়ার কথা জানান প্রধানমন্ত্রীকে। সিআরআই জানায়, অনুষ্ঠানটি করে সম্প্রচার করা হবে তা শনিবার জানানো হবে।

অনুষ্ঠানে চেঞ্জমেকার, ইনফ্লুয়েন্সার, ক্ষুদ্র-নৃ-গোষ্ঠীর ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধি, তৃতীয় লিঙ্গের প্রতিনিধিসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দেশ গঠনে কাজ করে যাওয়া তরুণদের মুখোমুখি হয়ে তাদের প্রশ্নের উত্তর দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তৃতীয় লিঙ্গের প্রতিনিধিত্বকারী মনীষা মীম নিপুণ জানতে চান, কীভাবে আমরা আমাদের সমাজকে ট্রান্সজেন্ডার সম্প্রদায়ের প্রয়োজনগুলোর প্রতি আরও সহানুভূতিশীল করতে পারি? এ সময় একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্প্রতি তৃতীয় লিঙ্গের এক অ্যাক্টিভিস্টের উপস্থিতিকে কেন্দ্র করে অনুষ্ঠান বাতিল করার বিষয়টিও উল্লেখ করেন তিনি।

বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার নিয়ে কথা বলা যুক্তরাষ্ট্র ফিলিস্তিনদের ওপর চলমান গণহত্যায় ইসরাইলিদের সমর্থন দিচ্ছে। এটি তাদের ডাবল স্ট্যান্ডার্ড কিনা তা জানতে চান দেশ গঠনে তরুণদের সংগঠন নিয়ে কাজ করে যাওয়া শাহরিয়ার বাবলা।

নারীর প্রতি হয়রানি বন্ধে সুস্পষ্ট আইন কবে হবে তা জানতে চান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অরিত্রি রায় প্রিয়তা। গণমাধ্যমে কাজ করা তরুণী এ আর তাহসীন জাহান জানতে চান, কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ আরও বাড়াতে সরকারের তরফ থেকে ডে-কেয়ার সেন্টার করা হবে কিনা?

ভালো কাজের হোটেলের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান এবং তরুণ সংগঠক আরিফুর রহমান প্রধানমন্ত্রীর কাছে জানতে চান, সরকারি প্রতিটি কর্মকর্তা-কর্মচারীকে দিনে একটি ভালো কাজের বিষয় উৎসাহ প্রদান বা বাধ্যতামূলক করা সম্ভব কিনা? এর ব্যাখ্যা হিসেবে তিনি বলেন, একটি ভালো কাজ করতে উৎসাহিত বা বাধ্য হলে তা আরও অনেক খারাপ কাজ থেকে এমনিতেই মানুষকে বিরত রাখে।

সামাজিক কার্যক্রমের ইনফ্লুয়েন্সার তাশরীফ খান জানতে চান, দেশের পর্যটন ক্ষেত্রের উন্নয়ন নিয়ে কী ভাবনা আছে প্রধানমন্ত্রীর। সামনে নতুন কিছু দেখতে পাব কিনা?

দুর্যোগ প্রবণ দেশগুলোতে ক্ষতিপূরণ প্রদানে উন্নত দেশগুলোর গড়িমসির বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন পরিবেশকর্মী শামীম মৃধা। তিনি জানতে চান, কপ২৮ আয়োজন হয়ে গেল। কিন্তু এখনও উন্নত দেশগুলো দুর্যোগ প্রবণ দেশগুলোর জন্য ফান্ড নিশ্চিত করেনি। এমন অবস্থায় বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী কী ভাবছেন এবং এর বিকল্প কী ব্যবস্থা রয়েছে বাংলাদেশের?

বাংলাদেশ হুইলচেয়ার স্পোর্টস ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা নূর নাহিয়ান জানতে চান, শারীরিকভাবে বিশেষ-সক্ষমতা সম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য এই ধরনের প্রয়োজনীয় অবকাঠামো বাড়ানোর জন্য সরকারের পরিকল্পনা কী?

অবশ্য শুধু নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে প্রশ্ন নয়, তরুণরা তাদের আগ্রহ থেকে প্রধানমন্ত্রীর কাছে ব্যক্তিগত বেশকিছু প্রশ্নও করেন। বিদেশ থেকে বাংলাদেশে এসে কনটেন্ট তৈরি করা মারিয়ার কাছে বেশ আকর্ষণীয় গ্রামের জীবনযাপন। প্রধানমন্ত্রী গ্রামে গিয়ে থাকতে চান কিনা এবং গ্রামীণ জীবনযাপন তার কাছে কেমন লাগে এ বিষয়ে প্রশ্ন করেন তিনি।

ফুড ব্লগার রাফসান প্রধানমন্ত্রীর সেরা রান্না কোনটি সে বিষয়ে জানতে চান। আরও জানতে চান, বাহিরে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর খেতে ইচ্ছে করে কিনা? বাহিরে খাবার খাওয়ার সুযোগ আছে কিনা তার?

এ ছাড়াও প্রধানমন্ত্রী হলে দেশের কোন বিষয়ে পরিবর্তন আনতেন এবং কেন এই পরিবর্তনগুলো আনা জরুরি সে বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিজেদের মতামত ও পরামর্শ দেন উপস্থিত তরুণরা।

২০১৮ সালে লেটস টক অনুষ্ঠানে প্রথমবারের মতো তরুণদের মুখোমুখি হয়ে তাদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এবারের এই আয়োজনটি আগামী সপ্তাহে সরাসরি ব্রডকাস্ট করা হবে বলে জানান আয়োজকরা। সেখানেই জানা যাবে তরুণদের এসব প্রশ্নের উত্তরে কী বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। সেই সঙ্গে জানা যাবে প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চাওয়া-পাওয়ার অনেক অজানা তথ্য।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.