ভারতনিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরের পুঞ্চ জেলার সানগিওতে গ্রামের বাসিন্দারা আজ শনিবার পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে আনন্দ উদ্যাপন করছেন না। গত বৃহস্পতিবার ভারতীয় সেনাবাহিনীর ট্রাকে হামলায় পাঁচ সেনাসদস্য নিহত হওয়ার ঘটনায় শোক জানিয়ে ঈদের নামাজ পড়েছেন, কিন্তু আনন্দ উদ্যাপন থেকে বিরত থাকছেন।
বৃহস্পতিবার ভারতীয় সেনাবাহিনীর যে ট্রাকে হামলা হয়েছে, সেটির গন্তব্য ছিল সানগিওতে গ্রাম। সেদিন ওই গ্রামে ইফতারের আয়োজন ছিল। ওই আয়োজনের জন্য সেনাবাহিনীর ট্রাকটিতে করে ফল ও অন্যান্য দ্রব্য নেওয়া হচ্ছিল। পথে ট্রাকটিতে অতর্কিত হামলায় পাঁচ সেনাসদস্য নিহত হন।
সানগিওতে গ্রামে চার হাজার মানুষের বসবাস। স্থানীয় মানুষের তথ্যমতে, ওই ইফতার আয়োজনে অংশ নিতে গ্রামের বেশ কয়েকজন বাসিন্দাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। সেনাবাহিনীর রাষ্ট্রীয় রাইফেলস ইউনিট ওই আয়োজনের তদারক করছিল।
বালাকোটের বাসুনিতে অবস্থিত রাষ্ট্রীয় রাইফেলস ইউনিট থেকে ট্রাকটিতে করে এসব দ্রব্য নেওয়া হচ্ছিল। পথে ভিম্বান গলি এলাকা থেকে আরও কিছু পণ্য তোলা হয়। বেলা তিনটার দিকে ট্রাকটি টোটা গলি এলাকা পার হওয়ার সময় দুর্বৃত্তরা বিভিন্ন পাশ থেকে ট্রাকটির ওপর হামলা চালায়।
গাড়িটি তখন গন্তব্য থেকে মাত্র সাত থেকে আট কিলোমিটার দূরে ছিল। হামলার পরপরই সেনাসদস্য এবং ভাট্টা দুরিয়ান এলাকার আশপাশের বাসিন্দারা ঘটনাস্থলে পৌঁছান। সেখান থেকে পাঁচ সদস্যের দগ্ধ মরদেহ উদ্ধার করা হয়। গুরুতর অবস্থায় আরেকজনকে উদ্ধার করা হয়। ওই এলাকায় ফল ও অন্যান্য খাদ্যদ্রব্য ছড়িয়ে–ছিটিয়ে ছিল।
সানগিওতে পঞ্চায়েতের প্রধান মুখতিয়াজ খান বলেন, ইফতারের জন্য তিনিও আমন্ত্রণ পেয়েছিলেন। গতকাল শুক্রবার মুখতিয়াজ বলেন, ‘ওই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনায় আমাদের পাঁচ সেনা নিহত হয়েছে। কিসের আর ইফতার।’
মুখতিয়াজ আরও বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সন্ত্রাসী হামলার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর গ্রামে অন্ধকার নেমে এসেছে। আমরাও সেখানে যেতে চেয়েছিলাম, তবে ততক্ষণে পুলিশ ও সেনাবাহিনী এলাকাটি ঘিরে ফেলে।’
পঞ্চায়েতপ্রধান জানান, শনিবার পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গ্রামবাসী কোনো ধরনের উদ্যাপনে অংশ নেবেন না, শুধু ঈদের নামাজ আদায় করা হবে।\
এর কারণ উল্লেখ করে মুখতিয়াজ বলেন, ‘নিহত সেনাসদস্যরা আমাদের গ্রামে নিযুক্ত রাষ্ট্রীয় রাইফেলস ইউনিটের অংশ। তাঁদের পরিবারের প্রতি আমরা সমবেদনা জানাচ্ছি।’