যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশি পোশাকের সুদিন

0
330
নারায়ণগঞ্জের একটি পোশাক কারখানায় কাজ করছেন নারী শ্রমিকেরা।

অটেক্সার তথ্যানুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশ থেকে গত মার্চে সর্বোচ্চ ১০৩ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়। পরের ২ মাসে রপ্তানি হয় যথাক্রমে ৮২ ও ৮১ কোটি ডলারের পোশাক। জুনে সেটি বেড়ে ৯০ দাঁড়ায় কোটি ডলারে। জুলাইয়ে কমে ৬৯ কোটি ডলার হলেও আগস্টে তা আবার বেড়ে ৯২ কোটিতে দাঁড়ায়। গত সেপ্টেম্বর মাসে ৯১ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছে।

অটেক্সার তথ্যানুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশ তৃতীয় শীর্ষ পোশাক রপ্তানিকারক দেশ। এই বাজারে গত বছর বাংলাদেশ ৭১৫ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছে। ২০২০ সালের চেয়ে এ আয় ছিল প্রায় ৩৭ শতাংশ বেশি।

যুক্তরাষ্ট্র বরাবরই বাংলাদেশি পোশাকের বড় বাজার। ২০১৩ সালে রানা প্লাজা ধসের পর পোশাক কারখানার কর্মপরিবেশ নিয়ে প্রশ্ন উঠলে বাজারটিতে রপ্তানি কমে যায়।

নানাবিধ কারণে চীন থেকে ক্রয়াদেশ একটু একটু করে সরছে। সেই ক্রয়াদেশের একটি অংশ বাংলাদেশও পাচ্ছে। সব মিলিয়েই যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের অবস্থান শক্তিশালী হচ্ছে।

মহিউদ্দিন রুবেল, পরিচালক, বিজিএমইএ

চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার বাণিজ্যযুদ্ধের কারণে ২০১৯ সালে অবস্থার পরিবর্তন হতে শুরু করে। কারখানার কর্মপরিবেশ উন্নয়নেও ব্যাপক অগ্রগতি হয় বাংলাদেশের। তাতে ২০১৯ সালে ৫৯৩ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়। পরের বছরও শুরুটা দুর্দান্ত হয়েছিল। তবে করোনা মহামারির থাবায় রপ্তানি নিম্নমুখী হতে থাকে। শেষ পর্যন্ত ৫২৩ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি হয় ২০২০ সালে। গত বছরের মে মাস থেকে বাজারটিতে ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ।

এ বিষয়ে তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে শীর্ষ তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক দেশের তুলনায় বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি বেশি। এটি খুবই ইতিবাচক। তিনি আরও বলেন, করোনাকালে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিয়ে কারখানা সচল রাখার কারণে ক্রেতাদের মধ্যে আস্থা তৈরি হয়। তা ছাড়া নানাবিধ কারণে চীন থেকে ক্রয়াদেশ একটু একটু করে সরছে। সেই ক্রয়াদেশের একটি অংশ বাংলাদেশও পাচ্ছে। সব মিলিয়েই যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের অবস্থান শক্তিশালী হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে শীর্ষ পোশাক রপ্তানিকারক দেশ হচ্ছে চীন। চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসে চীন ১ হাজার ৭৭২ কোটি ৬০ লাখ ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছে। গত বছরের একই সময়ে তাদের রপ্তানি ছিল ১ হাজার ৩৭৪ কোটি ডলারের। সেই হিসাবে চলতি বছরের জানুয়ারি-সেপ্টেম্বরে চীনের রপ্তানি বেড়েছে ২৮ দশমিক ৯৪ শতাংশ। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে গত বছর চীন ১ হাজার ৯৬১ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছিল। ২০২০ সালে তাদের রপ্তানি ছিল ১ হাজার ৫১৫ কোটি ডলার।

যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে দ্বিতীয় শীর্ষ রপ্তানিকারক দেশ ভিয়েতনাম। চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসে দেশটি ১ হাজার ৪৫৯ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩৪ দশমিক ৬৯ শতাংশ বেশি। গত বছর ১ হাজার ৪৩৭ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছিল ভিয়েতনাম। সে সময় তাদের প্রবৃদ্ধি ছিল ১৪ দশমিক ৩৩ শতাংশ।

এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসে ইন্দোনেশিয়া ৪৪৪ কোটি, ভারত ৪৬৩, মেক্সিকো ২৪০, হন্ডুরাস ২৩৯, কম্বোডিয়া ৩৫২, পাকিস্তান ২১৮, কোরিয়া ১৭ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.