মৌসুমের শেষ সময়ে এসেছে ‘ডেঙ্গু’ অ্যাপ

সাড়া মেলেনি আগেরটিতে

0
190
‘ডেঙ্গু’ অ্যাপ

ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকার নানা ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বললেও এর প্রকোপ কমছে না। এরই মধ্যে চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত ১ লাখ ৩৩ হাজার ১৩৪-এ দাঁড়িয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ৬৪৬ জনের। এমন অবস্থায় ‘ডেঙ্গু’ নামে একটি মোবাইল অ্যাপ চালু করছে স্বাস্থ্য বিভাগ। আজ মঙ্গলবার অ্যাপটি উন্মুক্ত করা হবে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের ঢাকা মেডিকেলে ‘ডেঙ্গু’ অ্যাপ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে। এর আগে ২০১৯ সালে এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে এমন একটি অ্যাপ চালু করা হলেও তাতে সাড়া মেলেনি।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, নতুন অ্যাপের মাধ্যমে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা ডেঙ্গু রোগীর ‘ফ্লুইড ম্যানেজমেন্ট’ করতে পারবেন। রোগীর কখন কী পরিমাণ ফ্লুইড প্রয়োজন, তা এই অ্যাপের মাধ্যমে জানা যাবে। এ ছাড়া কোন হাসপাতালে কত শয্যা ফাঁকা, তা জানতে পারবে সাধারণ মানুষ। করোনার সময় করোনাডটবিডি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে এমন সেবা দেওয়া হয়।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সরকার নানা উদ্যোগ নিয়েছে। অ্যাপ তৈরি সরকারের নতুন উদ্যোগ। এবার প্রযুক্তি ব্যবহার করে ডেঙ্গু রোগীর ব্যবস্থাপনা ও এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’ এই অ্যাপের মাধ্যমে নাগরিক সচেতনতা বাড়ানো ও সবার কাছে সঠিক তথ্য পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আস্তে আস্তে প্রত্যেক নাগরিককে এই অ্যাপে যুক্ত করার চেষ্টা করা হবে।’

অ্যাপটি প্লে-স্টোর থেকে ডাউনলোড করা যাবে। ইনস্টলেশনের সময় মোবাইল ফোনের ক্যামেরা ও লোকেশন ব্যবহারের অ্যাক্সেস দিতে হবে। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) এক দল শিক্ষক অ্যাপটি বানিয়েছেন। তবে সার্বিক সহযোগিতা করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

এর আগে ২০১৯ সালে সরকারের পাঁচটি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ এবং চারটি সংস্থা মিলে ‘স্টপ ডেঙ্গু’ নামে একটি অ্যাপ তৈরি করে। অ্যাপটি তৈরির কাজ তত্ত্বাবধান করে ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব)। সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং ত্রাণ মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার বিভাগ, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ, স্বাস্থ্যসেবা অধিদপ্তর, অ্যাক্সেস টু ইনফরমেশন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এবং বাংলাদেশ স্কাউটস এ কাজে যুক্ত ছিল। ওই অ্যাপের মাধ্যমে ডেঙ্গু নিয়ে জনসচেতনতা বাড়ানোর কথা বলা হয়েছিল। কোথাও এডিস মশার উৎপত্তিস্থল বা পানি জমে থাকতে দেখলে তার ছবি তুলে অ্যাপে আপলোড করতে বলা হয়েছিল। কিন্তু পাঁচ বছরেও এতে তেমন সাড়া মেলেনি।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ডা. আহমেদুল কবীর বলেন, ‘এ বছর ডেঙ্গু জটিল আকার ধারণ করেছে। প্রাইমারি, সেকেন্ডারি ও টারশিয়ারি লেভেলে সংক্রমণ হচ্ছে।’ তাঁর মতে, প্লাটিলেট এখানে ইস্যু নয়, ফ্লুইড ম্যানেজমেন্ট বড় ইস্যু। যদি রোগীর ফ্লুইড ম্যানেজমেন্ট অ্যাপের মাধ্যমে জানা যায়, তাহলে নতুন অ্যাপটি কাজে আসবে।

স্বাস্থ্য বাতায়নের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘সরকারের স্বাস্থ্য বাতায়ন ১৬২৬৩-এর মাধ্যমে ২৪ ঘণ্টা ডেঙ্গুবিষয়ক স্বাস্থ্যসেবা মিলছে। নতুন অ্যাপ যদি ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে কাজে আসে, তাহলে অবশ্যই ভালো উদ্যোগ।’ তাঁর মতে, ডেঙ্গু সারাদেশে ছড়িয়ে গেছে। এখন কারিগরিভাবে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে। পরিকল্পিত ও বাস্তবমুখী সিদ্ধান্ত না হলে সংকট দীর্ঘতর হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

তবিবুর রহমান

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.