কামার মহসিন শেখের জন্ম পাকিস্তানে। বিয়ে করেন ভারতীয় এক ব্যক্তিকে। বিয়ের পর ১৯৮৬ সালে স্বামীর সঙ্গে ভারতে চলে যান। বসবাস শুরু করেন আহমেদাবাদ শহরে। স্বজনদের ছেড়ে নতুন দেশে আসার পর একাকিত্বে ভোগেন তিনি। একদিন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে এক অনুষ্ঠানে দেখা হয় তাঁর। মোদি তখন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী। আলাপচারিতার সময় মোদির আন্তরিকতায় মুগ্ধ হন তিনি। রক্তের সম্পর্ক না হলেও মোদির প্রতি ভ্রাতৃত্বের টান অনুভব করেন।
সেদিনের ঘটনার পর প্রতিবছর রাখিবন্ধনের দিন মোদিকে রাখি পাঠিয়ে আসছেন মহসিন শেখ। সময় সুযোগ পেলেই দেখা করেন মোদির সঙ্গে। তাঁর এমন আন্তরিকতাকে ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করেন মোদিও। ধীরে ধীরে দুজনের মধ্যে বন্ধুত্ব গাঢ় হতে থাকে।
করোনা মহামারির কারণে গত তিন বছর মোদির সঙ্গে দেখা করতে পারেননি মহসিন শেখ। কিন্তু তাতেও সম্পর্কে ভাটা পড়েনি। ওই সময় ডাকযোগে মোদিকে রাখি পাঠিয়েছেন। ২০২৪ সালের নির্বাচনে মোদির বিজয় কামনা করে রাখি পাঠিয়েছেন তিনি। ৩০ আগস্ট ভারতে রাখিবন্ধন উৎসবে। এই উৎসবে মোদির হাতে নিজ উপস্থিত থেকে রাখিবন্ধন পরাতে চাইছেন মহসিন শেখ। পাশাপাশি বই পড়ার প্রতি মোদির আগ্রহ থাকায় তাঁকে কৃষির ওপর লেখা একটি বইও উপহার দেওয়ার পরিকল্পনা করছেন।
এ বিষয়ে মহসিন শেখ বার্তা সংস্থা এএনআইকে বলেন, ‘এবার আমি নিজের হাতে রাখি তৈরি করেছি। তাঁর (নরেন্দ্র মোদি) যেহেতু বই পড়ার শখ আছে, তাই কৃষিবিষয়ক একটি বইও তাকে উপহার দিতে চাই। কোভিডের কারণে ২-৩ বছর তাঁর সঙ্গে দেখা করতে যেতে পারিনি। কিন্তু এবার সামনাসামনি দেখা করব।’
আপন ভাই না হলেও মোদির জন্য প্রতিদিন প্রার্থনা করেন বলে জানান পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত এই ভারতীয় বধূ। তিনি বলেন, ‘আমি প্রতিদিন তাঁর (মোদি) সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে প্রার্থনা করি। আমার বিশ্বাস, আমার সব আশা একদিন পূরণ হবে। মোদি যেন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী হতে পারেন, সে জন্য প্রার্থনা করেছিলাম। শেষ পর্যন্ত তিনি মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন।’
ভাই-বোনের সম্পর্ক আরও মজবুত করতে প্রতিবছর রাখিবন্ধন উৎসব হয়। ৩০ আগস্ট রাখিবন্ধন উৎসব। এই উৎসবে ভাইয়ের হাতে রাখি বেঁধে তাঁর উন্নতি ও দীর্ঘায়ু কামনা করেন বোনেরা। অন্যদিকে বোনকে রক্ষা ও সহযোগিতা করার প্রতিশ্রুতি দেন ভাইয়েরা।