মেসি-রোনালদোর দৌরাত্ম থামিয়ে গেল বছর ইউরোপ সেরা ফুটবলার হন লুকা মডরিচ। রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগ জয় এবং রাশিয়া বিশ্বকাপে ক্রোয়েশিয়াকে ফাইনালে তোলেন মডরিচ। পারফরম্যান্সের পুরস্কার হিসেবে উয়েফার ইউরোপ সেরা ফুটবলার হন। এবার বার্সেলোনা তারকা লিওনেল মেসি এবং জুভেন্টাস ফরোয়ার্ড ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর সঙ্গে ইউরোপ সেরার লড়াইয়ে আছেন ভার্জিল ভ্যান ডাইক। লিভারপুল ডিফেন্ডার মেসি-রোনালদোকে খালি হাতে ফেরাতে পারবেন? বৃহস্পতিবার জানা যাবে প্রশ্নের উত্তর।
লিভারপুলের হয়ে দুর্দান্ত মৌসুম কাটিয়েছেন নেদারল্যান্ডস ডিফেন্ডার ভ্যান ডাইক। দলের চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়ে বড় অবদান রেখেছেন। প্রিমিয়ার লিগে লিভারপুল দুইয়ে শেষ করেছে। লিগে লিভারপুল অন্য দলের চেয়ে সবচেয়ে কম ২২ গোল খেয়েছে। তার পেছনে ভ্যান ডাইকের বড় অবদান আছে। তারপরও ভ্যান ডাইকের ইউরোপের সেরা ফুটবলার হওয়ার পথে বড় বাঁধা তিনি ডিফেন্ডার। এর আগে কোন ডিফেন্ডার ইউরোপ সেরার পুরস্কার জেতেননি।
উয়েফা ২০১১ সাল থেকে ইউরোপ সেরা ফুটবলারের পুরস্কার দিচ্ছে। প্রথম বছর পুরস্কার জেতেন লিওনেল মেসি। পরের দুই বছর যথাক্রমে আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা ও ফ্রাঙ্ক রিবেরির হাতে ওঠে পুরস্কার। এরপর ২০১৪ সালে রোনালদো প্রথমবার ইউরোপ সেরা ফুটবলার হন। ২০১৫ সালে মেসি আবার তার রাজত্ব ফিরে পান। ২০১৬ এবং ২০১৭ মৌসুমে ইউরোপ সেরা ফুটবলার হন সিআরসেভেন। আর সর্বশেষ ইউরোপের সেরা ফুটবলার হন মডরিচ।
এবার অবশ্য ইউরোপ সেরা ফুটবলার হওয়ার দৌড়ে মেসি এবং ভ্যান ডাইকই বেশি এগিয়ে। মেসি ২০১৮ সালের ৩১ জুলাই থেকে চলতি বছরের ৩১ জুলাই পর্যন্ত বার্সেলোনা এবং আর্জেন্টিনার হয়ে ৫৮ ম্যাচ খেলে গোল করেছেন ৫৪টি। বার্সেলোনাকে লা লিগা জিতিয়েছেন। তবে চ্যাম্পিয়নস লিগে দুর্দান্ত শুরু করেও সেমিফাইনালে হেরে বিদায় নেয় তারা। ওদিকে রোনালদো জাতীয় দল এবং জুভেন্টাসের হয়ে খেলেছেন ৪৭ ম্যাচ। গোল করেছেন ৩১টি। জুভেন্টাসের হয়ে প্রথম সিরি আ’ জিতেছেন পর্তুগিজ যুবরাজ রোনালদো।
গোলের তুলনা টানলে মেসি-রোনালদোর সঙ্গে ভ্যান ডাইকের তুলনা চলে না। কারণ তিনি ডিফেন্ডার। তার কাজ গোল বাঁচানো। ভ্যান ডাইক সেই কাজটাই করেছেন দুর্দান্তভাবে। সঙ্গে গেল মৌসুমে লিভারপুল এবং জাতীয় দলের হয়ে নয় গোল করেছেন এই ডাচ ফুটবলার। ক্লাবের হয়ে গেল মৌসুমে ৫০ ম্যাচ খেলেছেন তিনি। এর মধ্যে ৪৯ ম্যাচে কোন ফুটবলার তাকে কাটিয়ে (ড্রিবলিং) বল নিয়ে যেতে পারেননি। প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়ের থেকে তিনি ৭৩ ভাগ বল কেড়ে নিতে সক্ষম হয়েছেন। ক্লাব ও জাতীয় দলের হয়ে এরিয়াল বলেও (ওপরের বল) তিনি ৭৩ ভাগ সাফল্য পেয়েছেন।
লিভারপুল কোচ জার্গেন ক্লপ তাই বলেন, ‘ডিফেন্ডার হওয়ার জন্য ভ্যান ডাইক ইউরোপ সেরার পুরস্কার পাবে না এটা হতে পারে না। পূর্বের এই ধারা ভাঙার এটাই সেরা সময়। আধুনিক ফুটবল এই জায়গাগুলোতে আগের থেকে অনেক উন্মুক্ত। মেসি-রোনালদো কোন মাপের খেলোয়াড় তা বলার অবকাশ নেই। আমি যদি গত মৌসুমের কথা বলি তবে ভ্যান ডাইকের এই পুরস্কার প্রাপ্য। ডিফেন্ডারও ইউরোপ সেরার পুরস্কার জিততে পারে, নতুনদের এই বার্তা দেওয়ার এটাই সেরা সময়।’