ইতিহাদে স্মরণীয় এক জয়ের সুবাস পেয়েছিল ১৯৯১ ইউরোপিয়ান কাপ চ্যাম্পিয়ন রেড স্টার বেলগ্রেড। সেটি প্রথমার্ধের একদম শেষ মিনিটে রেড স্টার উইঙ্গার ওসমান বুকারির গোলের পর। কিন্তু বিপক্ষ দলটার নাম তো ম্যানচেস্টার সিটি—গত মৌসুমে চ্যাম্পিয়নস লিগসহ ‘ট্রেবল’–জয়ী। এমন পরিস্থিতি থেকে উদ্ধার হতে না পারলে আর কিসের চ্যাম্পিয়ন! সিটির আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকার হুলিয়ান আলভারেজ সম্ভবত এমন কিছুই ভেবেছিলেন।
দ্বিতীয়ার্ধের ৯০ সেকেন্ডের মধ্যেই তাই সমতায় সিটি। আর্লিং হলান্ডের ফিরতি পাস পেয়ে রেড স্টার গোলকিপারকে দারুণ দক্ষতায় ফাঁকি দিয়ে গোল করেন আলভারেজ। ৪৭ মিনিটে করা সেই গোলের ১৩ মিনিট পর আবার গোল! এবারও গোলদাতা আলভারেজ। তবে এ যাত্রায় রেড স্টার গোলকিপার ওমরি গ্লেজারের ‘অবদান’ও কম নয়! ৬০ মিনিটে মাঠের বাঁ প্রান্তে ফ্রি–কিক পেয়েছিল সিটি। আলভারেজের বাঁকানো শট সহজেই রুখে দিতে পারতেন গ্লেজার। সেটি ‘ফিস্ট’ করে কিংবা বলটা নিজের ‘গ্রিপে’ও নিতে পারতেন। কিন্তু প্রথম কাজটি (ফিস্ট) করতে গিয়ে বল ঠিকমতো গ্লাভসে লাগাতে পারেননি গ্লেজার, গোল!
ফ্রি–কিক থেকে এই গোলেই আলভারেজ মনে করিয়ে দিয়েছেন লিওনেল মেসিকে। ফুটবলের পরিসংখ্যানভিত্তিক টুইটার অ্যাকাউন্ট ‘অপটা হাভিয়ের’ জানিয়েছে, মেসির পর দ্বিতীয় সর্বকনিষ্ঠ আর্জেন্টাইন খেলোয়াড় হিসেবে চ্যাম্পিয়নস লিগে ফ্রি–কিক থেকে সরাসরি গোল করলেন ২৩ বছর ২৩১ দিন বয়সী আলভারেজ। ১৪ বছর আগে অর্থাৎ, ২০০৯ সালে আর্জেন্টাইনদের মধ্যে রেকর্ডটি গড়েছিলেন মেসি। বার্সেলোনার খেলোয়াড় হিসেবে ২২ বছর ১৬৮ দিন বয়সে ডায়নামো কিয়েভের বিপক্ষে ফ্রি–কিক থেকে সরাসরি গোল করেছিলেন ইন্টার মায়ামি তারকা।
সিটির হয়ে এবার আলভারেজের শুরুটা হয়েছে দুর্দান্ত। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ৮ ম্যাচে ৪ গোল করার পাশাপাশি আরও ৪টি গোল বানিয়ে দিয়েছেন গত ডিসেম্বরে কাতার বিশ্বকাপ জেতা এই তারকা। সে বিশ্বকাপেই আর্জেন্টিনায় আলভারেজের তকমাটা জানা গিয়েছিল। ছোটবেলায় খেলার সময় এত বেশি সময় বল পায়ে রাখতেন যে মনে হতো দুই পা নয়, মাকড়সার মতো আট পা দিয়ে খেলছেন আলভারেজ। রিভারপ্লেটের বয়সভিত্তিক দলে থাকতেই তাই তাঁর নাম হয়ে যায় ‘লা আরানা’ বা মাকড়সা। এখনো সেই নামটা আছে, জাতীয় দলের সতীর্থরা অনেকেই তাঁকে ওই নামে ডাকেন, ডাকে আর্জেন্টাইন সংবাদমাধ্যমও।
ম্যাচ শেষে আলভারেজের প্রশংসায় সিটি কোচ পেপ গার্দিওলা বলেছেন, ‘সে এখনো তরুণ, আর্জেন্টিনা থেকে কী দারুণ একটি সই-ই না করানো হয়েছে! তার সব আছে—লড়াই করতে পারে, গোল করার সঙ্গে বানিয়েও দিতে পারে। আর আর্লিং হলান্ডের পেছনে খেলাও তো হুমকির মতো। আমি সত্যিই তাকে নিয়ে খুব সন্তুষ্ট।’