মৃত্যুর আগে জঙ্গলে ৭ দিন একাকী ছিল নোরা

0
512
নোরা কুয়োইরিন। ছবি: এএফপি

গভীর জঙ্গল থেকে উদ্ধার হওয়া কিশোরী নোরা কুয়োইরিনের মরদেহের ময়নাতদন্ত করেছে মালয়েশিয়ার পুলিশ। ময়নাতদন্ত শেষে পুলিশ জানিয়েছে, মৃত্যুর আগে সাত দিন জঙ্গলে একাকী ছিল নোরা। খাবারের অভাবে তার মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে বলেও জানিয়েছে পুলিশ।

মালয়েশিয়ার পুলিশের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নোরাকে অপহরণ করে জঙ্গলে নিয়ে যাওয়ার কোনো প্রমাণ মেলেনি। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন বলছে, লাশ উদ্ধারের দুই থেকে চার দিন আগেই মৃত্যু হয়েছিল নোরার। মরদেহ থেকে আরও নমুনা সংগ্রহ করে তদন্ত সাপেক্ষে আরও নতুন তথ্য জানা যাবে।

নোরার বাবা-মা আজ শনিবার বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছেন, ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে পুরোপুরি সন্তুষ্ট হতে পারছেন না তাঁরা। মৃত্যুর আগে নোরার কী হয়েছিল, সেটি নিশ্চিত হতে দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত করারও আহ্বান জানিয়েছেন তাঁরা। দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্ত করা হলে অনেক ‘অজানা প্রশ্নের’ উত্তর মিলবে বলে মনে করছেন তারা মা-বাবা।

এর আগে গতকাল শুক্রবার দেওয়া আরেকটি বিবৃতি দিয়েছিল নোরার পরিবার। ওই বিবৃতিতে তাঁরা বলেছিলেন, প্রাথমিক ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে এমন কিছু তথ্য তাঁরা পেয়েছেন, যা নোরার মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে বুঝতে সাহায্য করবে।

গত ৪ আগস্ট মালয়েশিয়ার এক রিসোর্ট থেকে হারিয়ে যায় ১৫ বছরের বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী কিশোরী নোরা। যুক্তরাজ্য থেকে মালয়েশিয়ায় এক রিসোর্টে মা-বাবার সঙ্গে বেড়াতে গিয়েছিল সে। নোরাকে খুঁজে পেতে মালয়েশিয়া পুলিশের সাড়ে ৩০০ সদস্য কাজ করেছেন। নোরার সন্ধান পেলে যেন তাৎক্ষণিকভাবে খবর পাওয়া যায়, সে কারণে আলাদা একটি হটলাইন নম্বরও চালু করা হয়েছিল। এ ছাড়া কেউ নোরার সন্ধান দিতে পারলে তাঁকে ১০ হাজার পাউন্ড পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণাও দিয়েছিল নোরার পরিবার।

নিখোঁজ হওয়ার নয় দিন পর ১৩ আগস্ট রিসোর্ট থেকে প্রায় পৌনে দুই মাইল দূরে গভীর জঙ্গলের ভেতর থেকে নোরার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। মালয়েশিয়ার সহকারী পুলিশ প্রধান মাজলান মানসুরের বরাত দিয়ে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, জঙ্গলের ভেতরে ‘পাহাড়ি এলাকায়’ একটি জলপ্রবাহের কাছ থেকে নোরার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। উদ্ধারের সময় তার শরীরে কোনো কাপড় ছিল না বলেও জানান তিনি।

জন্মের পর থেকেই স্বাভাবিক মানসিক বিকাশ না হওয়া নোরাকে নিয়ে যুক্তরাজ্যে বসবাস করতেন তাঁর আইরিশ মা ও ফরাসি বাবা। কয়েক সপ্তাহ আগে তাঁরা মালয়েশিয়ার দুসান ফরেস্ট ইকো রিসোর্টে বেড়াতে যান। ৪ আগস্ট সকালে ঘুম থেকে উঠে নোরার বাবা দেখেন, নিজের কক্ষ থেকে নিখোঁজ হয়ে গেছে নোরা। সে সময় নোরার ঘরের জানালা খোলা দেখতে পান তাঁরা। নোরার পরিবারের দাবি, একা একা সে কোথাও যাতায়াত করত না।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.