মুক্তিকে হত্যা করতে কাওছার ২০০ টাকা দিয়ে দা কেনেন: পুলিশ

0
98
নেত্রকোনার বারহাট্টায় স্কুলছাত্রী হত্যায় অভিযুক্ত কাওছারকে আটকের পর জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়। বুধবার বিকেল পাঁচটার দিকে

নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলায় স্কুলছাত্রী মুক্তি বর্মণকে (১৫) কুপিয়ে হত্যা করা দায়ের দাম ২০০ টাকা। গত শনিবার বারহাট্টা সদরের গোপালপুর বাজার থেকে ২০০ টাকা দিয়ে দাটি কেনেন তিনি। ক্রয় করা দাটি তিনি বড়িতে এনে খাটের নিচে লুকিয়ে রেখেছিলেন। এর আগের দিন একটি বাড়িতে দিনমজুরের কাজ করে ৫০০ টাকা রোজগার করেন কাউছার।

গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে কাঁচা আম কাটার কথা বলে বাড়ি থেকে দা নিয়ে বের হন কাউছার। এদিন বেলা পৌনে তিনটার দিকে ওই দা দিয়ে মুক্তি বর্মণকে কুপিয়ে হত্যা করেন। আজ বুধবার বিকেল পাঁচটার দিকে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ বলেন, ‘আমরা আটক হওয়া কাওছারকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানিয়েছেন, মেয়েটি যখন ষষ্ঠ শ্রেণিতে লেখাপড়া করত, তখন থেকেই বখাটে কাওছার তার পিছু লাগে। তিনি বিভিন্ন সময় মেয়েটিকে প্রেম প্রস্তাব দিয়ে প্রত্যাখ্যাত হন। এই ক্ষোভ থেকেই তাকে কুপিয়ে হত্যা করেছেন।’

হারুন অর রশিদ আরও বলেন, কাওছারের দায়ের কোপে স্কুলছাত্রী মুক্তি যখন মাটিতে লুটিয়ে পড়ে, এ সময় স্থানীয় লোকজন চলে এলে তিনি দৌড়ে পালিয়ে যান। পরে ঘটনাস্থল থেকে আধা কিলোমিটার দূরে একটি জঙ্গলে লুকিয়ে থাকেন তিনি। আজ বেলা তিনটার দিকে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ সেখান থেকে তাঁকে আটক করে।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) সাহেব আলী পাঠান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) লুৎফর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বারহাট্টা সার্কেল) মোহাম্মদ রবিউল ইসলাম, জেলা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক মোহাম্মদ আবদুল আহাদ খান, ডিবি পরিদর্শক সায়েদুর রহমান প্রমুখ।

গতকাল মঙ্গলবার বেলা তিনটার দিকে বিদ্যালয় থেকে ফেরার পথে উপজেলার ছালিপুরা এলাকায় মুক্তি বর্মণকে এলোপাতাড়ি কোপান কাওছার। বিকেল পাঁচটার দিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা ওই স্কুলছাত্রীকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত মুক্তি উপজেলার প্রেমনগর গ্রামের নিখিল বর্মণের মেয়ে এবং প্রেমনগর ছালিপুরা উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। কাওছার একই গ্রামের শামসু মিয়ার ছেলে।

এ বিষয়ে আজ সন্ধ্যায় বারহাট্টা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খোকন কুমার সাহা বলেন, মুক্তির মরদেহ ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের মর্গ থেকে বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেওয়া হয়েছে। তার বাবা মামলা করতে বিকেল থেকে থানায় আছেন। মামলাটি দায়ের করা হচ্ছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.