যুদ্ধ শুরুর প্রস্তুতি নিচ্ছে চীন, অভিযোগ তাইওয়ানের

0
147
তাইওয়ানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোসেফ উ ফাইল ছবি: রয়টার্স

তাইওয়ানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোসেফ উ অভিযোগ করেছেন, তাঁর দেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করার প্রস্তুতি নিচ্ছে চীন। তাইওয়ানের চারপাশে সম্প্রতি শেষ হওয়া তিন দিনের বড় ধরনের সামরিক মহড়া দেখে চীনের এ অভিপ্রায় বোঝা গেছে।

সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তাইওয়ানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ মন্তব্য করেছেন। গতকাল মঙ্গলবার সাক্ষাৎকারটি প্রকাশ করা হয়েছে।

এতে জোসেফ উ বলেন, ‘চীনের সামরিক মহড়ার দিকে দেখুন, চীনা নেতৃত্বের বক্তৃতাগুলো শুনুন, দেখেশুনে মনে হচ্ছে, তারা তাইওয়ানের বিরুদ্ধে একটি যুদ্ধ শুরুর প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে।’

জোসেফ উর মতে, আন্তর্জাতিক বিরোধ মোকাবিলায় জাতিসংঘ সনদের মূল ভিত্তি শান্তিপূর্ণ কৌশল অবলম্বন। কিন্তু চীন সেই পথে হাঁটছে না। তাইওয়ান ও চীনের মধ্যকার বিরোধে বেইজিং জবরদস্তি, সামরিক হুমকি এবং শক্তি প্রয়োগের হুমকির পথ বেছে নিয়েছে। তাইওয়ানের কাছে এই কৌশল সমালোচিত ও অগ্রহণযোগ্য।

শেষ পর্যন্ত চীন যুদ্ধ শুরু করলে আত্মরক্ষার জন্য তাইওয়ানের কাছে পর্যাপ্ত অস্ত্র আছে কি না—এ প্রশ্নের জবাবে জোসেফ উ বলেন, বহু বছর ধরেই যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে অস্ত্র কিনছে তাইওয়ান। এমনকি জো বাইডেন প্রশাসন তাইওয়ানকে অস্ত্রের নয়টি চালান দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। তাইওয়ান সামরিক প্রশিক্ষণ বাড়িয়েছে।

তাইওয়ানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এ পরিস্থিতিতে অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জামের চেয়ে দৃঢ়তা বেশি গুরুত্বপূর্ণ।’ জোসেফ উ সতর্ক করে আরও বলেন, তাইওয়ানে যুদ্ধ শুরু হলে বিশ্ব অর্থনীতিতে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। এমন ধ্বংসাত্মক উদ্যোগ না নেওয়ার জন্য চীনকে চাপ দিতে হবে। এ জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে একযোগে এগিয়ে আসতে হবে।

চীনের হুঁশিয়ারি উপেক্ষা করে তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট সাই ইং-ওয়েন গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রে যান। ক্যালিফোর্নিয়ায় তিনি মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার কেভিন ম্যাকার্থির সঙ্গে বৈঠক করেন। এর প্রতিক্রিয়ায় তাইওয়ান ঘিরে তিন দিনের বড় ধরনের সামরিক মহড়া চালায় বেইজিং।

এই সামরিক মহড়া শেষ হয় গত সোমবার। মহড়া সফল হয়েছে বলে দাবি করেছে চীনের সামরিক বাহিনী। একই সঙ্গে মহড়ায় প্রকৃত যুদ্ধ পরিস্থিতিতে দেশটির বিভিন্ন বাহিনীর সক্ষমতা যাচাই করে দেখা হয়েছে বলেও জানিয়েছে বেইজিং। প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট সাই ইং-ওয়েন বলেন, এটা দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ।

তবে মহড়া শেষ হলেও তাইওয়ানের চারপাশ থেকে চীনা যুদ্ধবিমান ও জাহাজ সরানো হয়নি। তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, মঙ্গলবার সকালেও তারা তাইওয়ানের চারপাশে চীনা নৌবাহিনীর ৯টি জাহাজ ও ২৬টি যুদ্ধবিমান দেখেছে। এগুলো দ্বীপটির চারপাশে ‘যুদ্ধ প্রস্তুতির’ টহল দিচ্ছিল।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.