মিস ইউনিভার্স প্রতিযোগিতার আসরে সব মিলিয়ে ১৯ দিনের মিশন। এই মিশনের শুরুটা ব্যাংকক থেকে, শেষটাও সেখানে। এর মধ্যে ফুকেট, পাতায়াসহ থাইল্যান্ডের নানা জায়গায় মিস ইউনিভার্স প্রতিযোগীদের ক্যাম্পিং হয়। এসবের মধ্যে ১২১ জন প্রতিযোগীকে পিপলস চয়েসে ভোট এবং বিচারকদের নানা পরীক্ষায় অংশ নিতে হয়। পিপলস চয়েসে আশা জাগালেও শেষ পর্যন্ত সেরার মুকুট ওঠেনি তানজিয়া জামান মিথিলার মাথায়। ঘোষিত হয়েছে নতুন মিস ইউনিভার্স। ৭৪তম আসরে সেরা নির্বাচিত হয়েছেন ‘মিস মেক্সিকো’ ফাতিমা বশ। আজ শুক্রবার সকালে থাইল্যান্ডের ব্যাংককে চূড়ান্ত পর্বে তাঁর নাম ঘোষণা করা হয়। তবে এ নিয়ে মোটেও আফসোস নেই মিথিলার। ফাতিমাকে তাঁর অর্জনের জন্য হাসিমুখে শুভকামনা জানিয়েছেন মিথিলা।

আজ শুক্রবার দপুরে কথা বলেন মিথিলা। বললেন, ভীষণ ব্যস্ত সময় যাচ্ছে। গতকাল সারা রাত ঘুমাতে পারেননি। ব্যাংকক থেকে তিনি বলেন, ‘একটা অসাধারণ জার্নি শেষ হলো। সেরা ৩০–এ জায়গা করতে পেরেছি, এটাও আমাদের জন্য দারুণ গর্বের। আমার পরিবার, বিনোদন অঙ্গনের সহকর্মী ও দেশের মানুষের যে ভালোবাসা ও আন্তরিক সমর্থন পেয়েছি, তা আমাকে ভীষণভাবে অনুপ্রাণিত করেছে, আত্মবিশ্বাসী করে তুলেছে। সবার ভালোবাসা নিয়ে সামনের দিকে এগোতে চাই।’

মিস ইউনিভার্স প্রতিযোগিতার প্রথম থেকে বিচারকদের নজর কাড়েন মিথিলা। নিজের আত্মবিশ্বাসী উপস্থাপনা, মঞ্চের পরিবেশনা এবং সামগ্রিক প্রস্তুতির জন্য তিনি ইতিবাচক সাড়া পান। সুইমস্যুট রাউন্ডে তাঁর উপস্থিতি প্রশংসা কুড়ায়। ‘পিপলস চয়েস’ ভোটিংয়েও তিনি এগিয়ে ছিলেন। অনেকের প্রশ্ন ছিল—ভোটিংয়ে এগিয়ে থেকেও কেন সেরা ৩০-এর পর তিনি আর এগোতে পারলেন না? নিয়ম অনুযায়ী, দর্শক ভোট ছাড়াও প্রতিযোগীর পারফরম্যান্স, বুদ্ধিমত্তা, তাৎক্ষণিক উপস্থাপন দক্ষতা এবং বিচারকদের বিশ্লেষণ চূড়ান্ত তালিকা নির্ধারণে ভূমিকা রাখে। শেষ পর্যন্ত মিথিলার সেরা ৩০-এ ওঠা নিয়ে ভক্তদের মধ্যে উচ্ছ্বাস দেখা গেছে।

‘মিস ইউনিভার্স বাংলাদেশ’ কর্তৃপক্ষও এক বিবৃতিতে লিখেছে, এটি বাংলাদেশের জন্য ইতিহাস গড়ার মুহূর্ত। অভিনন্দন মিথিলা এবং ধন্যবাদ সব সমর্থককে।’ এ ছাড়া দেশের বিনোদন অঙ্গনের অনেক তারকা মিথিলার এই অর্জনকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। মিস ইউনিভার্স ক্যাম্পে ১৯ দিনে শিখেছেন সময় ব্যবস্থাপনা, শৃঙ্খলা এবং নিজেকে নতুনভাবে তুলে ধরার কৌশল। বললেন, ‘এখানে অনেকের সঙ্গে বন্ধুত্ব হয়েছে। সিস্টারহুড তৈরি করে কীভাবে সম্পর্ক এগিয়ে নিতে হয়, শিখেছি। সবচেয়ে বড় বিষয়, মিস ইউনিভার্স আমাকে একটা নতুন মানুষ হিসেবে তৈরি করেছে। আমার যোগাযোগের দক্ষতা বাড়িয়েছে।’

নানা বিতর্কের মধ্য দিয়ে শেষ পর্যন্ত ‘মিস ইউনিভার্স ২০২৫’-এর মুকুট জিতেছেন মেক্সিকোর ফাতিমা বশ। প্রতিযোগিতা শুরুর আগে মিস ইউনিভার্স কর্তৃপক্ষের হাতে অপমানিত হয়েছিলেন তিনি, যা নিয়ে প্রতিযোগীদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছিল। তবে শেষ পর্যন্ত সবকিছু পেছনে ফেলে বিজয়ী হন ২৫ বছর বয়সী এই সমাজকর্মী। ফাতিমাকে মুকুট পরিয়ে দেন গতবারের বিজয়ী ডেনমার্কের ভিক্টোরিয়া কেজার থেলভিগ। এবারের আসরে প্রথম রানারআপ হয়েছেন মিস থাইল্যান্ড প্রবিনার সিং। মিস ইউনিভার্স প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত ফল ঘোষণার তিন দিন আগে দুই বিচারক পদত্যাগ করেন। তাঁদের একজন প্রতিযোগিতার নির্বাচনপ্রক্রিয়া অস্বচ্ছ বলে অভিযোগ তুলেছেন।

















