রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে গোটা বিশ্বের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়লেও অস্ত্র উৎপাদন ও বিক্রি যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিকে করেছে আরও চাঙ্গা। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার পর প্রতিরক্ষা খাতে ব্যাপক ব্যয় বাড়ায় যুক্তরাষ্ট্র। এটা মার্কিন অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখছে। চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) মোট দেশীয় উৎপাদন (জিডিপি) বৃদ্ধিতে কেবল প্রতিরক্ষা খাতের অবদানই পাঁচ ভাগের এক ভাগ বলে রিপোর্ট প্রকাশ করেছে মার্কিন বাণিজ্য বিভাগ। চলতি অর্থবছরে প্রতিরক্ষা খাতে বাজেট বাড়িয়েছে জো বাইডেন প্রশাসন। সেই ধারাবাহিকতায় আগামী বছর আরও বড় বাজেট পেতে যাচ্ছে পেন্টাগন। খবর ব্লুমবার্গের
গত বৃহস্পতিবার প্রকাশিত যুক্তরাষ্ট্রের মোট অভ্যন্তরীণ পণ্যের পরিসংখ্যান অনুসারে, যুদ্ধের কারণে গত বছরজুড়ে যুক্তরাষ্ট্রের ক্রমবর্ধমান প্রতিরক্ষা ব্যয় দেশটির মন্থর অর্থনীতিকে গতিশীল করতে সহায়তা করছে।
চলতি অর্থবছরের বাজেটে মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগের জন্য ৮১৬ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ রাখা হয়েছে, যা ২০২২ অর্থবছরের তুলনায় ৭৬ বিলিয়ন বেশি। এ ছাড়া আগামী অর্থবছরের বাজেটে সামরিক ব্যয় আরও বাড়তে পারে।
ইউক্রেন যুদ্ধের আগে বাজেট পাস নিয়ে অচলাবস্থার কারণে মার্কিন প্রতিরক্ষা ব্যয় আংশিকভাবে সীমিত ছিল। ফলে অর্থায়ন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পেন্টাগনের জন্য নতুন চুক্তি বা অস্ত্র উৎপাদন বাড়ানো কঠিন হয়ে পড়ে। কিন্তু ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা শুরুর পর নতুন করে তোড়জোড় শুরু হয় অস্ত্র উৎপাদনে। শুধু ইউক্রেনের যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠানোর জন্যই নয়, যুক্তরাষ্ট্রের কমে যাওয়া মজুত পূরণের জন্যও যুদ্ধাস্ত্রের উৎপাদন বাড়ায় পেন্টাগন।
এদিকে, যুদ্ধ বন্ধে চীনের মধ্যস্থতার ভূমিকা নেওয়ার সম্ভাবনাকে অবাস্তব নয় বলে মন্তব্য করেছেন ইউক্রেনের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্দ্রি মেলনিক। জার্মানিতে তিনি বলেন, চীন নিজের স্বার্থ দেখে পা ফেলছে। তবে, বিশ্বের জন্য বিপদ ডেকে আনা এই যুদ্ধ বন্ধ হলে তাতে চীনেরও লাভ। ইউক্রেনের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে পশ্চিম রাশিয়ার একটি গ্রামে চারজন নিহত হয়েছে। তারা সবাই বেসামরিক নাগরিক।
অন্যদিকে, ক্রিমিয়ার তেলের ডিপোতে হামলার ঘটনায় ইউক্রেনকে দায়ী করেছে রাশিয়া। আর ইউক্রেনের দাবি, ওই বিস্ফোরণে ১০টিরও বেশি তেল ট্যাঙ্ক ধ্বংস হয়েছে। এ হামলায় ইউক্রেনের জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেননি দেশটির সামরিক গোয়েন্দা কর্মকর্তা আন্দ্রি ইউসভ। এদিকে, পাল্টা হামলার জন্য নিজেদের বাহিনী পুরোপুরি প্রস্তুত বলে জানিয়েছে ইউক্রেন। যে কোনো সময় হামলা শুরু হবে। আর সেটি হবে দক্ষিণ থেকে।