ইডেন গার্ডেনের সন্ধ্যা। গণমাধ্যমের গমগম উপস্থিতি, পশ্চিম বাংলার ক্রিকেট সংস্থার তৎপরতাই বলে দিচ্ছিল, পুরো দেশের দায়িত্ব পেয়ে কতটা ব্যস্ত কলকাতার মহারাজা সৌরভ গাঙ্গুলী। ফুলের তোড়া হাতে মানুষের ভিড় ক্রমে বাড়ছে। সে ভিড় ঠেলে কোনো রকম সিএবিতে নিজ রুমে ঢুকে পড়লেন সৌরভ, যে রুমে বসেই বাংলার ক্রিকেটকে নেতৃত্ব দিয়ে এসেছেন ‘পোস্টার অব কলকাতা’।
বিশ্ব ক্রিকেটের সবচেয়ে শক্তিশালী বোর্ডপ্রধানের চেয়ারে বসেছেন সৌরভ। এখন ভারতীয় ক্রিকেট প্রশাসনের শেষ কথা বাংলার ছেলে। আগামী দেড় বছর তাঁর সিদ্ধান্ত অনুযায়ীই চলবে ভারতের ক্রিকেট। অন্য জনপ্রিয় খেলা ফুটবলের মাঠেও দাদার ছোঁয়া আছে ঠিকই। ভারতীয় ফ্র্যাঞ্চাইজি অ্যাটলেটিকো ডি কলকাতার অন্যতম কর্তা। ইডেনে তাঁর অফিসে বসেই শোনা গেল ভারতীয় ঘরোয়া ফুটবলের আরও বড় দায়িত্ব বর্তেছে তাঁর কাঁধে। রোববার কোচিতে আইএসএলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তাঁকে থাকতে হচ্ছে ‘ফেস অব আইএসএল’ হিসেবে।
সৌরভের সঙ্গে গল্পে উঠে এল বাংলাদেশের ফুটবলও। তবে আগের দিন হয়ে যাওয়া বাংলাদেশ-ভারত উত্তাপের ম্যাচ নিয়ে নয়, ভারতীয় সুপার লিগ আইএসএল নিয়ে। ২০১৪ সালে তাঁর দল অ্যাটলেটিকো কলকাতা দলে টেনেছিল বাংলাদেশের তৎকালীন অধিনায়ক মামুনুল ইসলামকে। যদিও কলকাতার জার্সিতে মাঠে নামার সুযোগ হয়নি বাংলাদেশের প্লেমেকারের; তবে ক্রিকেটার সৌরভের স্মৃতির সিন্দুকে এখনো আছেন মামুনুল।
ভবিষ্যতে কলকাতা দলে বাংলাদেশের কোনো ফুটবলারকে দেখতে পাওয়ার সম্ভাবনা আছে কি না? এ প্রশ্নের জবাবেই মামুনুলের কথা জিজ্ঞাসা করলেন বিসিসিআইয়ের নব্য সভাপতি, ‘বাংলাদেশের মামুনুল তো একবার ছিল। ছেলেটার এখন কী অবস্থা! ভবিষ্যতে কেউ ভালো করতে পারলে অবশ্যই খেলবে। আমরা তো চাই বাংলাদেশের খেলোয়াড় দলে জায়গা করে নিক। আইপিএলে সাকিব খেলছে, মোস্তাফিজ খেলছে। তারা তো ভালো করছে। এ রকম ট্যালেন্টের প্রয়োজন।’
সেদিনের সেই ক্ষণিকের আড্ডায় ফুটবলের চেয়ে বাংলাদেশের ক্রিকেট নিয়েই আলোচনা হয়েছিল বেশি। ভারতীয় বোর্ড প্রধান হিসেবে বাংলাদেশের ক্রিকেটকে সব ধরনের সহায়তা করার জন্য তিনি প্রস্তুত। বাংলাদেশের ক্রিকেট নিয়ে যে তিনি ভালোই খোঁজখবর রাখেন, তা বোঝা গেল একটি প্রশ্নেই। এই প্রতিবেদকের কাছে খোঁজ নিলেন বাংলাদেশ এক বোলারের? কে হতে পারে আন্দাজ করুন তো! যার কথা ভাবছেন, সে মোস্তাফিজুর রহমান নয়, তাসকিন। এই ফাস্ট বোলার ছাড়াও বাংলাদেশের আরও একজন বোলারের নাম সৌরভের মাথায় ঘুরছিল—রুবেল হোসেন। বোলিং আক্রমণটা ঠিক হলে বাংলাদেশ আরও দুর্দান্ত দল হয়ে উঠবে বলে মনে করেন নব্য বিসিসিআই সভাপতি।
ব্যাট হাতে তাঁর ঝকঝকে ইনিংসের অভাব নেই। ব্যাট তুলে রেখে ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন অব বেঙ্গলের দায়িত্ব পেয়ে চার বছরে দেখিয়েছেন তাঁর সাংগঠনিক দক্ষতাও।