মুক্তিযুদ্ধের সময় চার সাঁওতালসহ ১৫ জনকে হত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার বাঁশবাড়িয়া এলাকার আবদুস সামাদ ওরফে ফিরোজ খাঁ ওরফে মুসার বিরুদ্ধে করা মামলার রায় ঘোষণা করা হবে মঙ্গলবার।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বেঞ্চ সোমবার রায়ের জন্য এই দিন ধার্য করেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে প্রসিকিউটর ছিলেন ঋষিকেশ সাহা ও জাহিদ ইমাম। আসামিপক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আবদুস সাত্তার পালোয়ান।
এর আগে গত ৮ জুলাই উভয়পক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখেন ট্রাইব্যুনাল।
গত বছরের ১৪ জানুয়ারি এই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। প্রতিবেদনে আসামি মুসার বিরুদ্ধে ১৫ জনকে হত্যা, ২১ জনকে নির্যাতন, ৮-১০টি বাড়িঘর লুণ্ঠনসহ ৫০-৬০টি বাড়িঘর অগ্নিসংযোগে ধ্বংস করার পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়।
তদন্ত সংস্থার সূত্রে জানা যায়, পুঠিয়ার বাঁশবাড়িয়া এলাকার প্রয়াত আব্বাস আলীর ছেলে আবদুস সামাদ (মুসা) ওরফে ফিরোজ খাঁ মুক্তিযুদ্ধের আগে মুসলিম লীগ সমর্থক ছিলেন। যুদ্ধের সময় জামায়াতের সমর্থক হিসেবে শান্তি কমিটির স্থানীয় নেতার নেতৃত্বে মানবতাবিরোধী অপরাধে লিপ্ত ছিলেন। একটি ফৌজদারি মামলায় ২০১৭ সালের ২২ জানুয়ারি তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপর ২৪ জানুয়ারি তাকে যুদ্ধাপরাধ মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়।
তদন্ত সংস্থার অভিযোগে বলা হয়, ‘৭১ সালের ১৯ এপ্রিল মুসা ও তার সহযোগীরা পুঠিয়ার ৪ নম্বর ভালুকগাছী ইউনিয়নের পশ্চিমভাগের সাঁওতালপাড়ায় নিজ হাতে তরবারি দিয়ে ও পাকিস্তানি সেনারা গুলি করে লাডে হেমরম, কানু হাসদা, টুনু মাড্ডি ও জটু সরেনকে হত্যা করে। তার বিরুদ্ধে গত বছরের ১২ এপ্রিল ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হয়। ২০ এপ্রিল অভিযোগ আমলে নেওয়ার পর শুনানি শেষে ৯ সেপ্টেম্বর মুসার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ দেওয়া হয়। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় পুঠিয়ার বাঁশবাড়িয়া, পশ্চিমভাগ ও গোটিয়া গ্রামের আদিবাসী ও বাঙালিদের ওপর নৃশংস হত্যাযজ্ঞ চালান রাজাকার মুসা। এরপর তিনি ভারতে পালিয়ে যান। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর ‘৭৫ সালে গোপনে তিনি দেশে ফিরে আসেন।