পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার বৈবুনিয়া গ্রামে কোমেলা বেগম (৫০) নামের এক নারীকে হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার প্রতিবেশী হাসান সরদার (২৫) আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। গতকাল বুধবার বিকেলে পিরোজপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট গোলাম রসুলের আদালতে তাঁর জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়।
জবানবন্দিতে হাসান সরদার বলেন, ১৬ আগস্ট তিনি ও তাঁর এক সহযোগী চুরির উদ্দেশ্যে ওই নারীর বাড়িতে গিয়ে হত্যাকাণ্ড ঘটান। পরে স্বর্ণালংকার ও মুঠোফোন নিয়ে তাঁরা পালিয়ে যান। জবানবন্দি গ্রহণ শেষে বিচারক হাসান সরদারকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
জবানবন্দির বরাত দিয়ে নাজিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হুমায়ুন কবির বলেন, কোমেলা বেগম বাড়িতে মেয়ে ও জামাতা নিয়ে থাকতেন। তাঁর স্বামী ওমর ফারুক দীর্ঘদিন ধরে সৌদি আরবে রয়েছেন। ১৬ আগস্ট কোমেলা বেগম বাড়িতে একা ছিলেন। মেয়ে ও জামাতা বেড়াতে গিয়েছিলেন। ওই দিন রাতে কোমেলার প্রতিবেশী শাহজাহান সরদারের ছেলে হাসান সরদার বাড়ির কাছে ধানের খেতে মাছ ধরতে যান। এ সময় হাসান সরদারের সঙ্গে ছিলেন আরেক তরুণ। সেখানে তাঁরা দুজন গল্প করছিলেন। হাসান সরদার ওই তরুণকে জানান, কোমেলা বেগম ঘরে একা। তাঁর ঘরে নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার আছে। এরপর তাঁরা দুজন কোমেলা বেগমকে হত্যা করে চুরির পরিকল্পনা করেন।
জবানবন্দির বর্ণনা অনুযায়ী, ভোর চারটার দিকে হাসান সরদার ওই তরুণকে নিয়ে কোমেলা বেগমের বাড়িতে গিয়ে জানালা দিয়ে কৌশলে ঘরের দরজা খোলেন। এরপর হাত, মুখ ও চোখ বেঁধে ফেলে শ্বাসরোধে তাঁকে হত্যা করে গলার সোনার চেইন, কানের দুল ও মুঠোফোন নিয়ে যান। এ ঘটনার এক দিন পর ১৮ আগস্ট সকালে প্রতিবেশীরা ঘরে গিয়ে খাটের ওপর কোমেলার লাশ পড়ে থাকতে দেখেন।
ওসি মো. হুমায়ুন কবির আরও বলেন, এ ঘটনায় কোমেলার ভাই শহর আলী বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে থানায় হত্যা মামলা করেন। এরপর পুলিশ খোঁজখবর নিয়ে এ হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে হাসান সরদারকে সন্দেহ করে। গত মঙ্গলবার বিকেলে আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে হাসান সরদারকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে হাসান সরদার হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। এরপর তাঁর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী কোমেলা বেগমের মুঠোফোন উদ্ধার করা হয়। হাসান সরদার জানান, চুরি হওয়া স্বর্ণালংকার তাঁর সঙ্গে থাকা তরুণের কাছে রয়েছে। তাঁকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।