মহা হিসাব নিয়ন্ত্রক পদে নিয়োগ নিয়ে আলোচনা

0
195

জ্যেষ্ঠতার ধারাবাহিকতা অনুসরণ করে মহা হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক (সিএজি) পদে মো. নুরুল ইসলাম নিয়োগ পাওয়ার পর আলোচনা চলছে, কে হচ্ছেন পরবর্তী হিসাব মহা নিয়ন্ত্রক (সিজিএ)। বর্তমান সিজিএ নুরুল ইসলাম গত বৃহস্পতিবার সিএজি পদে নিয়োগ পেলেও শপথ গ্রহণের আগ পর্যন্ত তিনি সিজিএ হিসেবেই থাকছেন।

আগামী আগস্ট মাসের ৪ তারিখ নুরুল ইসলামের শপথ গ্রহণের কথা রয়েছে। ভারপ্রাপ্ত মহা হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক হিসেবে তাঁর আগপর্যন্ত দায়িত্ব পালন করবেন উপ মহা হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক ফাহমিদা ইসলাম। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ সূত্রে এসব কথা জানা গেছে।

সিজিএ একটি গ্রেড-১ পদ। সিজিএ হতে গেলে বিসিএস (নিরীক্ষা ও হিসাব) ক্যাডারের কর্মকর্তাদের গ্রেড-২ পদে কমপক্ষে দুই বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হয়। আলোচনা চলছে, সিজিএ হওয়ার জন্য কার কার আছে, সেই অভিজ্ঞতা। সিএজি পদে নিয়োগ দেওয়ার ক্ষেত্রে জ্যেষ্ঠতার লঙ্ঘন করা হয়নি, তবে সিজিএ পদে সেটা হবে কি না, তা নিয়েও আলোচনা আছে। সিএজি সাংবিধানিক পদ হলেও সিজিএ অর্থ বিভাগের আওতাধীন একটি পদ।

কন্ট্রোলার জেনারেল ডিফেন্স ফাইন্যান্স (সিজিডিএফ) মনোয়ারা হাবিব এ বছরের ২৩ মার্চ অবসর উত্তর ছুটিতে (পিআরএল) যাবেন উল্লেখ করে সিএজি কার্যালয় গত ১৯ ফেব্রুয়ারি অর্থসচিব ফাতিমা ইয়াসমিনকে এক চিঠি পাঠায়। এতে জ্যেষ্ঠতা বিবেচনায় গ্রেড-২ থেকে গ্রেড-১-এ উন্নীত করতে এসএফসি (আর্মি) মোহাম্মদ গোলাম ছরওয়ার ভুঁঞার ব্যাপারে সুপারিশ করা হয়। বলা হয়, অর্থ বিভাগ যেন এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়। চিঠিতে আরও চারজন কর্মকর্তার গ্রেড-২ পদে কার কত দিনের অভিজ্ঞতা আছে, তার বিবরণ তুলে ধরা হয়।

দেখা যায়, গ্রেড-২ পদে মোহাম্মদ গোলাম ছরওয়ার ভুঁঞা দুই বছর কাজ করার মেয়াদ পূর্ণ করেছেন গত ১৮ জানুয়ারি। অন্য তিনজনের মধ্যে ডিসিএজি খান মো. ফেরদাউসুর রহমানের গ্রেড-২-এ দুই বছর কাজ করার অভিজ্ঞতা হবে ২০২৪ সালের ৩ জানুয়ারি। এ ছাড়া ফিন্যান্সিয়াল ম্যানেজমেন্ট একাডেমির মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদ এবং অতিরিক্ত হিসাব মহা নিয়ন্ত্রক মো. সাইফুর রহমানের ২০২৪ সালের ১৬ নভেম্বর দুই বছরের অভিজ্ঞতার মেয়াদ পূরণ হবে। অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অর্থ) বাংলাদেশ রেলওয়ের কামরুন নাহার গ্রেড-৩ পদে ২০১৯ সালের ২৭ আগস্ট থেকে আছেন বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।

অর্থসচিব যা করলেন

সিএজি কার্যালয় থেকে চিঠি পাওয়ার ১২ দিন পর গত ২ মার্চ অর্থসচিব ফাতিমা ইয়াসমিন সুপিরিয়র সিলেকশন বোর্ডের (এসএসবি) জন্য একটি সারসংক্ষেপ তৈরি করেন। এতে বলা হয়, গ্রেড-১-এর তিনটি পদের বিপরীতে বর্তমানে তিন কর্মকর্তা আছেন। গ্রেড-১ পদে পদোন্নতির জন্য মোহাম্মদ গোলাম ছরওয়ার ভুঁঞা যোগ্যতা অর্জন করেছেন। ফিডার পদে দুই বছরসহ ৩১ বছর চাকরিকালও পূর্ণ হয়েছে তাঁর। তাঁর বিরুদ্ধে কোনো বিভাগীয় মামলা ও দুর্নীতিবিষয়ক মামলা নেই। তাঁর পদোন্নতিতে আদালতে নিষেধাজ্ঞা নেই। তাঁর পদোন্নতির সুপারিশ হলে আদালত অবমাননার কোনো আশঙ্কাও নেই।

অর্থসচিব অন্য চারজনের ক্ষেত্রেও একই মন্তব্য করেছেন। কামরুন নাহার ১১তম হলেও বাকি সবাই ১০ম ব্যাচের কর্মকর্তা।

এসএসবির বৈঠক

মার্চের পর থেকে এসএসবির বেশ কয়েকটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হলেও অর্থসচিবের সুপারিশ এসএসবির কোনো বৈঠকের আলোচ্যসূচির মধ্যে আসেনি। এমনকি আজ বুধবার বিকেল চারটায় একটি বৈঠক রয়েছে। এখানে বিষয়টি আলোচনায় থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এসএসবির একটি বৈঠকে অনুমোদিত হয়েছে খান মো. ফেরদাউসুর রহমানের গ্রেড-১ পদের পদোন্নতি। গত ১০ মে তাঁর পিআরএলে যাওয়ার কথা ছিল। আগের মাস এপ্রিলে তাঁর পিআরএলের আবেদন মঞ্জুর হয়। তারপরও গত ৮ মে তাঁকে গ্রেড-১ দেওয়া হয়।
ফিডার পদে অর্থাৎ গ্রেড-২ পদে দুই বছর কাজ করার অভিজ্ঞতা না থাকলেও তাঁকে এ পদোন্নতি দেওয়ায় বিসিএস নিরীক্ষা ও হিসাব ক্যাডারের কর্মকর্তারা এখনো বিস্ময় প্রকাশ করে যাচ্ছেন।

আজকের এসএসবির বৈঠকে আলোচ্যসূচিতে বিসিএস নিরীক্ষা ও হিসাব ক্যাডারের কর্মকর্তাদের পদোন্নতির বিষয়টি থাকা না থাকার ওপর নির্ভর করছে, কে হচ্ছেন সিজিএ।

অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বিদেশে বাংলাদেশের একজন রাষ্ট্রদূতের পক্ষ থেকে সম্ভাব্য একজন সিজিএর বিরুদ্ধে অভিযোগ দেওয়া আছে সরকারের কাছে। তবে জানা গেছে, মিশন অডিটে গিয়ে সেই রাষ্ট্রদূতের অনিয়ম ধরেছিলেন সম্ভাব্য সিজিএ।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.