ডিএনএ পরীক্ষায় পরিচয় মিলল ১৪টি লাশের

0
117
ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডে মারা যান ৪৭ জন

বরগুনা জেলা প্রশাসনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে ১৪টি লাশের পরিচয় মিলেছে। এর মধ্যে বরগুনা সদর উপজেলার ১০ জন। তাঁরা হলেন হনুফা আক্তার (১৯), মোতাচ্ছিম (১১), ইদ্রিস খান (৫২), হাকিম শরীফ (৪৫), মোসা. পাখি (৪৫), মো. নসরুল্লাহ (১ বছর ৩ মাস), মো. মহিন (৩৭), মোসা. সুমাইয়া আক্তার (১৫), আবদুল্লাহ (৪) ও আছিয়া (১ বছর)। এ ছাড়া বেতাগী উপজেলার মো. আরিফুর রহমান (৩৬), তাহসিনা আকতার (৪), রিনা বেগম (৩২) ও রুশ্মি আক্তার (১২) রয়েছেন।

নিহত মহিনের স্ত্রী মোসা. স্ত্রী লিপি বেগম (২৩) বলেন, ‘ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে আমার স্বামীর লাশ শনাক্ত করা হয়েছে। অজ্ঞাতনামা পরিচয়ে দাফন করা লাশের মধ্যে ১৯ নম্বর কবরটি আমার স্বামীর। সরকারের কাছে আমার স্বামীর কবর নিজেদের বাড়িতে আনার জন্য আবেদন করব। এক বছরে এখন পর্যন্ত আমরা সরকারিভাবে কোনো অনুদান পাইনি। ইউপি চেয়ারম্যান বা মেম্বারদের কাছ থেকেও না। ধার-দেনা করে আমাদের সংসার চলছে। সামনের দিনগুলো সন্তান-শ্বশুর-শাশুড়ি নিয়ে কীভাবে চলব, তা নিয়ে চিন্তায় আছি। যাদের কারণে আমাদের একমাত্র আয়ের লোক হারিয়ে গেছে, সেই লঞ্চ কর্তৃপক্ষ আমাদের কোনো ক্ষতিপূরণ দেয়নি।’

নিহত হাকিম শরীফের মা আহাজারি করে বলেন, ‘ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে নিখোঁজ থাকা ছেলে, ছেলের বউ ও নাতির লাশ শনাক্ত করা হয়েছে। ঘটনার সময় ২৩ জনের পরিচয় শনাক্ত না হওয়ায় তাঁদের বরগুনা সদরের পোটকাখালী গ্রামে গণকবরে দাফন করা হয়। আমি সেখানে গিয়ে তাঁদের কবর দিয়ে এসেছি। গত এক বছর ধরে মানুষের সহায়তায় আমাদের পরিবারের ভরণপোষণ চলছে। বর্তমানে আমাদের পরিবারের অবস্থা খুবই খারাপ। আমার ছেলের তিনটি মেয়ে পড়াশোনা করে। ওদের লেখাপড়ার খরচ চালাতে হিমশিম খেতে হয় আমাদের। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আমাদের দুই বস্তা চাল দিয়েছিলেন, তাতে কোনোমতে চলছে।’

জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান  বলেন, ‘ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে নিখোঁজ যাত্রীদের মধ্যে ১৪ জনকে শনাক্ত করতে পেরেছি। ওই ১৪ পরিবারকে আর্থিক সহায়তার জন্য আমরা নৌ মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছি। তাদের আর্থিক সহায়তা প্রস্তুত করা হয়েছে। যেকোনো দিন তারা এসে এই ১৪ পরিবারকে সহায়তা দেবে। যদি কোনো স্বজন শনাক্ত কবরের অংশবিশেষ নিতে চান, তাহলে ধর্মীয় রীতিনীতি পালন করে কবর হস্তান্তর করা হবে।’

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.