মধ্যপ্রাচ্যে চীনের বিপুল বিনিয়োগ

0
180
ডলারের বিনিয়োগ চুক্তি করল আরব বিশ্ব।

চীনের সঙ্গে ১০ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ চুক্তি করল আরব বিশ্ব। রোববার রাজধানী রিয়াদে অনুষ্ঠিত চীন-আরব ব্যবসায়িক সম্মেলনে এ ঘোষণা দেয় সৌদি আরব। চীন ও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর মধ্যে বাণিজ্যিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ক ক্রমশ জোরদারের মাঝে এ সম্মেলনের আয়োজন করা হলো। এ ছাড়া এটি বিবাদে জড়িত মধ্যপ্রাচ্যের শক্তিশালী দেশ ইরান ও সৌদি আরবের মধ্যে সম্প্রতি চীনের মধ্যস্থতায় আঞ্চলিক সম্পর্ক পুনঃস্থাপনেরও ফল।

সৌদি আরবের বিনিয়োগ মন্ত্রণালয় জানায়, দু’দিনের এই গুরুত্বপূর্ণ সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন চীন ও আরব দেশগুলোর সাড়ে ৩ হাজারের বেশি সরকারি কর্মকর্তা ও ব্যবসায়িক নেতা। এটি দশম চীন-আরব সম্মেলন হলেও প্রথমবারের মতো আয়োজন করছে তেলসমৃদ্ধ সৌদি আরব।

মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সম্মেলনের প্রথম দিন ১০ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ চুক্তি সই হয়েছে। এর অধিকাংশই সৌদি আরবের বিভিন্ন খাত ও সরকারি সংস্থার প্রকল্পে ব্যয় করা হবে। এ ছাড়া সৌদি বিনিয়োগ মন্ত্রণালয় এবং বৈদ্যুতিক ও চালকবিহীন গাড়ির চীনা নির্মাতা হিউম্যান হরাইজনসের মধ্যে ৫.৬ বিলিয়ন ডলারের সমঝোতা স্মারক রয়েছে।

বিবৃতি অনুসারে, ১০ বিলিয়নের মধ্যে অর্ধেকের বেশি সমঝোতা স্মারক, একটি পৃথক ‘সহযোগিতা চুক্তি’ এবং একটি ‘ফ্রেমওয়ার্ক চুক্তি’ বিভিন্ন কোম্পানির সঙ্গে করা হয়েছে। প্রযুক্তি, কৃষি, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, আবাসন খাত, প্রাকৃতিক সম্পদ, পর্যটনসহ বিভিন্ন খাতেও চুক্তি করেছে সৌদি আরব।

সম্মেলনের উদ্বোধনীতে সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান চীন ও আরব দেশগুলোর মধ্যে বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বৃদ্ধির সম্ভাবনা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের জনগণের সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য এ সম্মেলন একটি বড় সুযোগ। আর বিনিয়োগ মন্ত্রী খালিদ আল ফালিহ বলেন, ‘আমি মনে করি, এটি সৌদি আরবে চীনা বিনিয়োগ প্রবাহের সূচনা মাত্র।’ সৌদি আরব নিজেদের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগ বাড়াতে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগে নানা সুবিধা দিচ্ছে। দেশটি চায়, শুধু তেলের ওপর নির্ভর না থেকে অর্থনীতিতে বৈচিত্র্য আনতে। এরই অংশ হিসেবে নানামুখী সুযোগ-সুবিধা দিয়ে চীনা বিনিয়োগ আকর্ষণের চেষ্টাও চালাচ্ছে। সৌদির বিবৃতি অনুসারে, রিয়াদে একটি লোহার কারখানা স্থাপন করা হবে। এ জন্য এএমআর আল উলা কোম্পানি এবং হংকংয়ের জংগুমা ইন্টারন্যাশন গ্রুপের মধ্যে ৫৩৩ মিলিয়ন ডলারের চুক্তি হয়েছে। সৌদি এএসকে গ্রুপ এবং চায়না ন্যাশনাল জিওলজিক্যাল অ্যান্ড মাইনিং কর্প সৌদি আরবে তামা খনির জন্য ৫০০ মিলিয়ন ডলার সহযোগিতা চুক্তি সই করেছে।

এর আগে গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং সৌদি আরব সফর করেন। সে সময় রিয়াদে তিনি আরব দেশগুলোর একটি সম্মেলনে অংশ নেন। ঘোষণা দেন, বিনিয়োগ ও সম্পর্ক জোরদারের। সফরকালে সৌদি আরবের সঙ্গে ৫০ বিলিয়ন ডলারের চুক্তি সই করেন জিনপিং।

তবে সৌদি আরব আরও বেশি বিনিয়োগ প্রত্যাশা করে আসছে। তাঁর সফরকালে সৌদি আরবের জাঁকজমকপূর্ণ আতিথেয়তায় সমালোচনা করেছিল রিয়াদের দীর্ঘদিনের মিত্র ওয়াশিংটন। এ সম্পর্কে সৌদি জ্বালানিমন্ত্রী প্রিন্স আবদুল আজিজ বিন সালমান বলেছিলেন, যেখানে সুযোগ আসবে, সেখানেই ব্যবসায়ীরা যাবেন।

এদিকে, গত সপ্তাহে রিয়াদ সফর করেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.