দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গাইবান্ধায় দুটি আসনে ভোটের মাঠে নেমেছেন মা-ছেলে। মা মর্জিনা খান গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) এবং ছেলে জিয়া জামান খান গাইবান্ধা-২ (সদর) আসনে প্রার্থী হয়েছেন। দু’জনই ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) মনোনীত প্রার্থী। মনোনয়ন যাচাই-বাছাইয়ে মা-ছেলেকে বৈধ প্রার্থী ঘোষণা দিয়েছেন জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা।
নির্বাচনে মা ও ছেলের প্রার্থী হওয়ার বিষয়টি জানার পর এলাকার ভোটারদের মধ্যে আলোচনা ও কৌতূহলের জন্ম দিয়েছে। ভোটের মাঠে প্রতিদ্বন্দ্বিতার অভিজ্ঞতা থাকলেও জিয়া জামান রংপুর বিভাগের সর্বকনিষ্ঠ প্রার্থী। ১৯৮৮ সালে জন্ম নেওয়া এ প্রার্থীর বয়স ৩৫ বছর। ২০১৮ সালের নির্বাচনে গাইবান্ধা-২ (সদর) এবং গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনে প্রার্থী হন তিনি। তাঁর মা মর্জিনা খান এবারই প্রথম প্রার্থী হয়েছেন।
গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনে মর্জিনা খানসহ বৈধ প্রার্থী ১১ জন। এ আসনের হেভিওয়েট প্রার্থী বর্তমান এমপি জাতীয় পার্টির শামীম হায়দার পাটোয়ারী ও আওয়ামী লীগের আফরুজা বারী। গাইবান্ধা-২ (সদর) আসনে জিয়া জামানসহ বৈধ পাঁচ প্রার্থী হলেনু আওয়ামী লীগের বর্তমান এমপি মাহাবুব আরা বেগম গিনি, জাতীয় পার্টির সাবেক এমপি আব্দুর রশিদ সরকার, জাসদের গোলাম মারুফ মনা ও জাকের পার্টির জহুরুল ইসলাম। মাহাবুব আরা টানা তিনবার নির্বাচিত এমপি। তিনি জাতীয় সংসদের হুইপের দায়িত্বেও আছেন।
জানা গেছে, জিয়া জামান গাইবান্ধার মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক প্রয়াত খালেকুজ্জামান খান দুদুর একমাত্র ছেলে। তিনি এনপিপির যুগ্ম মহাসচিব ও প্রতিষ্ঠাকালীন শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক। তাঁর মা মর্জিনা খান দলের সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্য ও রংপুর বিভাগের সাংগঠনিক কমিটির আহ্বায়ক। পৌর শহরের ডেভিড কোম্পানিপাড়ায় পৈতৃক বাড়ি তাদের। মা মর্জিনাসহ পরিবার নিয়ে ঢাকায় থাকেন। তাঁর বড় বোন সাজিয়া খান বিপাশা পেশায় চিকিৎসক।
গাইবান্ধায় তাঁর পরিবারের জনপ্রিয়তা রয়েছে বলে দাবি জিয়া জামান খানের। তিনি বলেন, বাবা প্রয়াত খালেকুজ্জামান খান দুদু গাইবান্ধায় স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন। তিনি বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাংগঠনিক সম্পাদক ও জিয়াউর রহমানের রাজনৈতিক সচিব ছিলেন। বাবার জনপ্রিয়তার কারণে তাঁর প্রতি মানুষের আগ্রহ আছে। তরুণ ও যুবারাই রাষ্ট্রের শক্তি। সে শক্তি কাজে লাগিয়ে ভোটের লড়াইয়ে জয়ী হতে চান তিনি।
মা-ছেলের একসঙ্গে প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে মর্জিনা খান জানান, খালেকুজ্জামান খান দুদুর স্ত্রী হিসেবে তাঁর জনপ্রিয়তা এবং রাজনৈতিক ক্যারিয়ার আছে। তাঁর বাবা প্রয়াত মজির উদ্দিন তালুকদার দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটের জালালপুর এস্টেটের জমিদার ছিলেন। রাজনীতির পাশাপাশি দীর্ঘদিন শিক্ষা, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানে যুক্ত তিনি।
মর্জিনা খান আরও জানান, এলাকার মানুষ সমর্থন দিয়েছে বলেই তিনি ভোটের মাঠে নেমেছেন। আগে তিনটি নির্বাচনে প্রচারণা ও গণসংযোগসহ ছেলের ভোটের মাঠের কর্মকাণ্ড দেখেছেন। সুষ্ঠু ভোট হলে মানুষ ভোট দিয়ে মা-ছেলেকে জয়ী করবে বলে আশা তাঁর।