ভোজ্যতেলের দাম কমলেও বাজারে প্রভাব নেই

0
147

দেশের বাজারে ভোজ্যতেলের দাম বুধবার থেকে ৮ থেকে ১২ টাকা পর্যন্ত কমানোর ঘোষণা দিয়েছিল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। তবে বাস্তবে এদিন রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, কোথাও নতুন দাম এখনও কার্যকর হয়নি। অর্থাৎ সব বাজারেই এখনও আগের বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে তেল।

খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, কোম্পানিগুলো আগেই প্রচুর তেল দিয়ে রেখেছে। সেগুলো বিক্রি শেষ হওয়ার আগে নতুন তেল নিলে আগেরগুলো কেউ কিনবে না। এ কারণে কোম্পানির ডিলাররা নতুন দরের তেল সরবরাহ করেননি। তবে কোম্পানিগুলোর দাবি, আজ থেকেই তারা মিলগেটে নতুন দর কার্যকর করেছে। কিন্তু ভোক্তা পর্যায়ে কম দামের তেল পৌঁছাতে চার-পাঁচ দিন লাগতে পারে।

মঙ্গলবার ভোজ্যতেলের দাম কমানোর ঘোষণা দেয় বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন। সংগঠনটির নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বোতলজাত এক লিটার সয়াবিন তেলের দাম ১০ টাকা কমিয়ে ১৭৯ টাকা এবং খোলা সয়াবিনের লিটারে ৮ টাকা কমিয়ে ১৫৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এতদিন এ দুই ধরনের তেলের দাম ছিল যথাক্রমে– ১৮৯ এবং ১৬৭ টাকা। একই সঙ্গে পাঁচ লিটারের বোতলে ৪৩ টাকা কমিয়ে ৮৭৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ ছাড়া খোলা পাম অয়েলের লিটার ৫ টাকা কমিয়ে ১২৮ এবং বোতলজাত পাম অয়েলের লিটার ১২ টাকা কমিয়ে ১৪৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

বুধবার কারওয়ান বাজার থেকে ১৮৭ টাকা দরে দুই লিটার তেল কিনেছেন বেসরকারি চাকরিজীবী মনোয়ার হোসেন।

তিনি বলেন, খবরে দেখছি তেলের দাম কমছে; কিন্তু বাজারে এসে কিনলাম আগের দামে। দাম কমানোর ঘোষণা কাগজে-কলমে হয়, বাস্তবে তো দেখি না। এটা মানুষের সঙ্গে এক ধরনের ভাঁওতাবাজি।

নতুন কম দরের তেল পেতে কতদিন লাগতে পারে– জানতে চাইলে কারওয়ান বাজারের ইয়াসিন জেনারেল স্টোরের স্বত্বাধিকারী মো. আলী বলেন, অন্তত এক সপ্তাহের আগে নতুন কম দরের তেল পাওয়া যাবে না। কোম্পানিগুলো সব সময় দাম বাড়ানোর আগে বাজারে তেলের সরবরাহ কমিয়ে দেয়। অন্যদিকে, দাম কমানোর আগে প্রচুর তেল সরবরাহ করে। ফলে দাম কমালেও খুচরা বিক্রেতাদের কাছে আগের তেল থেকে যায়। সেগুলো বিক্রি শেষ না হলে নতুন তেল নেওয়া যায় না। এ কারণে ভোক্তাদের দাম কমার সুফল পেতে সময় লেগে যায়।

মহাখালী কাঁচাবাজারের মাসুমা স্টোরের স্বত্বাধিকারী আল-আমীন বলেন, নতুন দরের তেল আসেনি বাজারে। দোকানে থাকা আগের তেল বাড়তি দরেই বিক্রি করতে হচ্ছে। তবে দু-একটি কোম্পানি আগের বেশি দরের তেল নতুন দরে দিচ্ছে। দু-এক দিন পর সেগুলো কম দরে বিক্রি করা যাবে।

ভোজ্যতেলের অন্যতম বিপণন প্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা মাল্টি ফুড অ্যান্ড বেভারেজ ইন্ডাস্ট্রির বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের পরিচালক রেদোয়ানুর রহমান বলেন, মিলগেটে বুধবার থেকেই নতুন দর কার্যকর করা হয়েছে। অর্থাৎ নতুন দরে ক্রয়াদেশ নেওয়া হয়েছে তেলের। তবে এ তেল ভোক্তা পর্যায়ে যেতে কিছুটা সময় লাগবে। কারণ, কোম্পানি থেকে প্রথমে তেল যাবে ডিলারদের কাছে। এর পর তারা সরবরাহ করবে খুচরা বিক্রেতাদের কাছে। তার পরই পাবেন ভোক্তারা। তবে ঢাকার ভোক্তারা তিন-চার দিনের মধ্যে পেলেও প্রত্যন্ত অঞ্চলে কম দামের তেল পৌঁছাতে আরেকটু বেশি সময় লাগতে পারে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.