সংসারের বয়স মাত্র চার বছর, এর মধ্যেই ভারতের ছোট পর্দা ও বড় পর্দার অন্যতম জনপ্রিয় নায়িকা অনন্যা চট্টোপাধ্যায়ের বিয়েটা ভেঙে যাচ্ছে। তাঁর স্বামী রাজর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায় আজ বৃহস্পতিবার সকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এই ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, ‘আমি এবং আমার স্ত্রী অনন্যা চট্টোপাধ্যায় একে অপরের থেকে আলাদা হয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। শুধু আইনিপ্রক্রিয়া বাকি রয়েছে।’ শুরুতেই তিনি লিখেছেন, ‘নতুন বছর, নতুন জীবন, অসফল সম্পর্কের শেষ। সব পরিণয় আনন্দ ও সুখের হয় না।’
বিয়ে ভাঙার কোনো কারণ উল্লেখ না করলেও এই দীর্ঘ স্ট্যাটাসে তিনি আরও লিখেছেন, ‘আমাদের বিয়েটা চার বছরের আর সম্পর্ক আরও চার বছরের পুরোনো। সব মিলিয়ে আট বছরের সম্পর্ক। আমি সৌভাগ্যবান, কারণ আমার মতো একজন ছা-পোষা মানুষ তাঁর মতো একজন প্রতিভাবান মানুষের সঙ্গে কাটাতে পেরেছি।’

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাওয়া অভিনেত্রী অনন্যা চট্টোপাধ্যায়ের জন্য শুভকামনা জানিয়ে তিনি লিখেছেন, ‘আশা করব, ও জীবনে যা কিছু চাইবে, তাতে যেন ও সফল হয়।’
রাজর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই ঘোষণার ব্যাপারে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম থেকে যোগাযোগ করা হয় অনন্যা চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে। কিন্তু তিনি এখনই বিবাহবিচ্ছেদের ব্যাপারে প্রকাশ্যে কোনো মন্তব্য করতে চাননি।

২০১৫ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি কলকাতার কসবার লীলা রিসোর্টে রাজর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায় ও অনন্যা চট্টোপাধ্যায়ের বিয়ে হয়। রাজর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায় একটি প্রতিষ্ঠিত বিজ্ঞাপনী সংস্থার ভাইস প্রেসিডেন্ট। একটা ছবিতে কাজ করার ব্যাপারে অন্যন্যা চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলতে এসে তাঁর পরিচয়। তখন অনন্যা চট্টোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘শেষ পর্যন্ত ছবিটা হয়নি, কিন্তু আমাদের আলাপটা জমে উঠল। যোগাযোগটা রয়েই গেল।’
ওই সময় রাজর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব্যাপারে অনন্যা চট্টোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘খুব নম্রভদ্র আর খুব সিম্পল। ওর সারল্যটাই আমার ভালো লেগেছে। তা ছাড়া বড়দের সম্মান করতে জানে। আমার তো মা আর দিদাকে নিয়ে সংসার। বাবা নেই। মা আর দিদাকে দেখার দায়িত্ব আমার। সেই দিকটা ও খুব ভালো বুঝতে পেরেছে।’

ঋতুপর্ণ ঘোষের ‘আবহমান’ ছবিতে অভিনয় করে ২০১০ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান অনন্যা চট্টোপাধ্যায়। তাঁর প্রথম চলচ্চিত্র ‘রাত বারোটা পাঁচ’ (২০০৫)। এরপর তিনি অতনু ঘোষের ‘অংশুমানের ছবি’ (২০০৯), কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘ল্যাপটপ’ (২০১০), অপর্ণা সেনের ‘ইতি মৃণালিনী’ (২০১২), বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের ‘আনোয়ার কা আজব কিস্সা’ (২০১৩), অভিজিৎ গুহের ‘যদি লাভ দিলে না প্রাণে’ (২০১৪) সহ আরও কয়েকটি ছবিতে তিনি অভিনয় করেছেন।
ছোট পর্দায় জি বাংলার জনপ্রিয় সিরিয়াল ‘সুবর্ণলতা’য় নাম ভূমিকায় অভিনয় করেন তিনি। এই একটি মাত্র সিরিয়াল তাঁকে দর্শকদের খুব কাছাকাছি পৌঁছে দেয়। এ ছাড়া স্টার জলসায় তাঁর ‘জয় কালী কলকাত্তাওয়ালী’ (২০১৭-১৯) সিরিয়ালটিও প্রশংসিত হয়েছে। তাঁর অন্য দুটি জনপ্রিয় সিরিয়াল হলো স্টার জলসার ‘গানের এপারে’ (২০১০-২০১১) এবং ‘বধূ কোন আলো লাগল চোখে’ (২০১২-১৪)।