ভিয়েতনামে টানা বৃষ্টি ও বন্যায় ৪১ জনের মৃত্যু

0
19
ভিয়েতনামের পুরো না ত্রাং শহর বন্যার পানিতে ডুবে গেছে,ছবি: এএফপি

টানা বৃষ্টি ও বন্যায় ভিয়েতনামের মধ্যাঞ্চলে গত সপ্তাহের শেষ থেকে এ পর্যন্ত অন্তত ৪১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এখনো নিখোঁজ রয়েছেন ৯ জন, তাঁদের উদ্ধারে অভিযান চলছে।

ভিয়েতনামের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম এই খবর দিয়েছে। প্রকাশিত প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বন্যার পানিতে ৫২ হাজারের বেশি বাড়িঘর ডুবে গেছে এবং পাঁচ লাখের বেশি পরিবার ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বিদ্যুৎহীন অবস্থায় রয়েছে।

গত তিন দিনে দেশটির কয়েকটি এলাকায় ১ দশমিক ৫ মিটারের (৫ ফুট) বেশি বৃষ্টি হয়েছে। কিছু অঞ্চলে বন্যার পানির উচ্চতা ১৯৯৩ সালের বন্যার সময়ে হওয়া সর্বোচ্চ ৫ দশমিক ২ মিটারের রেকর্ডকেও ছাড়িয়ে গেছে।

সবচেয়ে ক্ষতির শিকার হওয়া এলাকাগুলোর মধ্যে রয়েছে উপকূলীয় শহর হোই আন ও না ত্রাং। এ দুটি জায়গা কফি উৎপাদনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। সেখানকার চাষিরা এখনো আগের ঝড়গুলোর প্রভাব কাটিয়ে উঠতে পারেননি। তার মধ্যে নতুন দুর্যোগ নেমে এল।

সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ভিয়েতনাম চরম দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া মোকাবিলা করছে। কয়েক সপ্তাহের ব্যবধানে হওয়া দুটি বড় ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষয়ক্ষতির চিহ্ন এখনো থেকে গেছে।

সরকারি হিসাব অনুযায়ী, বছরের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ভিয়েতনামের প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২০০ কোটি ডলার।

স্থানীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে দেখা গেছে, ঘরে পানি ঢুকে যাওয়ায় মানুষ বাড়ির ছাদে আটকে পড়েছেন। অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে দেখা গেছে, লাম দং প্রদেশে বন্যার তোড়ে একটি ঝুলন্ত সেতু খুলে যাচ্ছে।

প্রদেশটি ইতিমধ্যেই জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে। কারণ, ভূমিধসে প্রধান সড়ক ও মহাসড়কগুলো মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ভূমিধসে প্রধান সড়ক ও মহাসড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় প্রদেশটিতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে।

বার্তা সংস্থা এএফপির খবরে বলা হয়েছে, জনপ্রিয় পর্যটন শহর দা লাতের প্রবেশপথ হিসেবে পরিচিত গুরুত্বপূর্ণ সড়ক মিমোসা পাসের একটি অংশ ধসে পড়েছে। এতে ওই পথে যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেছে। একটি বাস অল্পের জন্য সড়কে ধসে পড়া অংশের গর্ত থেকে রক্ষা পায়।

না ত্রাং এলাকার এক রেস্তোরাঁ মালিক এএফপিকে বলেছেন, তাঁর দোকানগুলো প্রায় এক মিটার পানির নিচে তলিয়ে গেছে।

রেস্তোরাঁ মালিক বুই কক ভিনহ বলেন, ‘আমার রেস্তোরাঁ ও দোকানের আসবাব নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি, কিন্তু এখন কিছুই করার নেই। আমার মনে হচ্ছে না পানি দ্রুত নামবে। কারণ, বৃষ্টি এখনো থামেনি।’

বন্যাকবলিত অঞ্চলগুলোর হাজার হাজার বাসিন্দাকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে আশ্রয়শিবির তৈরি করার জন্য সেনা ও পুলিশ সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে।

কর্তৃপক্ষ অন্তত রোববার পর্যন্ত ভিয়েতনামের মধ্যাঞ্চলে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টির আভাস দিয়েছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.