ভারত-পাকিস্তানের নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের যোগাযোগ, কবে নামবে শান্তি?

0
9
পাকিস্তানের এনএসএ লেফটেন্যান্ট জেনারেল ও আইএসআই প্রধান আসিম মুনির এবং ভারতের এনএসএ অজিত ডোভাল

জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলা ঘিরে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সৃষ্ট উত্তেজনা যুদ্ধের রূপ ধারণ করতে চলেছে ক্রমশ। দুই সপ্তাহ ধরে চলা হুমকি-ধমকির পর গত মঙ্গলবার (৬ মে) মধ্যরাতে বাস্তবিকই পাকিস্তানের আজাদ কাশ্মীরসহ সীমান্তবর্তী বেশ কয়েকটি স্থানে বড় ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে দিয়েছে ভারত। এ হামলার কঠিন জবাব দিতে উঠেপড়ে লেগেছে পাকিস্তানও। প্রতিশোধের নেশায় রীতিমতো ফুঁসছে তারা। এরই মধ্যে ভারতকে কঠিন জবাব দিতে প্রয়োজনীয় যে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির কাছ থেকে অনুমতিও পেয়ে গেছে পাকিস্তান সেনাবাহিনী। ভারতকে তার হামলার চরম মূল্য দিতে হবে বলে হুঙ্কার ছেড়েছেন পাক প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফও।

এদিকে পারমাণবিক শক্তিধর দুই প্রতিবেশী রাষ্ট্রের যুদ্ধের মতো এমন চূড়ান্ত পরিস্থিতির দিকে ধাবিত হওয়ার ঘটনা নাড়িয়ে দিয়েছে পুরো বিশ্বকে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার আগে দুপক্ষকেই শান্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন বিশ্বনেতারা। এ অবস্থায় পরিস্থিতি শান্ত হওয়ার ক্ষীণ একটা আশা জেগে উঠেছে পাকিস্তান ও ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের (এনএসএ) সরাসরি যোগাযোগ করার খবরে। দুই দেশের মধ্যে চরমে ওঠা উত্তেজনা কমানোর প্রচেষ্টারই অংশ বলে ধারণা করা হচ্ছে এ পদক্ষেপকে।

পাকিস্তানের এনএসএ লেফটেন্যান্ট জেনারেল ও আইএসআই প্রধান আসিম মুনির এবং ভারতের এনএসএ অজিত ডোভালের সঙ্গে কথা বলেছেন বলে নিশ্চিত করেছেন দেশটির উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার। খবর সামা নিউজের।

পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভারয়-পাকিস্তানের মধ্যকার সাম্প্রতিক উত্তেজনা নিয়ে দুই দেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা পরস্পরের সঙ্গে আলাপ করেছেন বলে নিশ্চিত করেছেন পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার। তবে আলোচনার বিস্তারিত বিষয়ে কিছু জানাননি তিনি।

এদিকে কূটনৈতিক সূত্রগুলোর দাবি, এই যোগাযোগের পেছনে আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক কূটনৈতিক প্রচেষ্টার বড় একটা ভূমিকা রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মার্কো রুবিও পাকিস্তান ও ভারতের নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের সঙ্গে আলাদাভাবে কথা বলেছেন বলেও জানা গেছে।

প্রসঙ্গত, গত ২২ এপ্রিল জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হয়। ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার পর কাশ্মীরে এটিই সবচেয়ে বড় হামলা। পরোক্ষভাবে পাকিস্তান এ হামলায় জড়িত, এমন অভিযোগ তুলে বুধবার দেশটির সঙ্গে ১৯৬০ সালের সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করে ভারত। পাশাপাশি আরও বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয় দেশটি। জবাবে সিমলা চুক্তি স্থগিত ও ভারতীয় বিমানের জন্য নিজেদের আকাশসীমা বন্ধের ঘোষণা দেয় পাকিস্তান। স্থগিত করে দেওয়া হয় ভারতের সঙ্গে সবরকম বাণিজ্যও।

এরপর থেকে দুদেশের পাল্টাপাল্টি হুমকি-ধমকিতে ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে উঠতে শুরু করে পরিস্থিতি, রীতিমতো যুদ্ধের মতো ধ্বংসাত্মক এক প্রতিস্থিতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে যা এখন।

গত মঙ্গলবার (৬ মে) মধ্যরাতে পাকিস্তানের আজাদ কাশ্মীরের অন্তত ৯টি স্থানে একযোগে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ভারত। এতে অন্তত ৩১ জনের প্রাণহানি ঘটেছে বলে দাবি করছে পাকিস্তান। ভারতের হামলার পরপরই দেশটির ৫টি অত্যাধুনিক বিমানসহ একটি সেনা সদরদপ্তর গুঁড়িয়ে দিয়েছে তাদের সেনারা। মূলত, এরপর থেকেই নতুন মাত্রা লাভ করেছে দুই দেশের মধ্যকার উত্তেজনা; বড় যুদ্ধের শঙ্কায় কাঁপছে সমগ্র দক্ষিণ এশিয়া।

 

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.