আলোচিত নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের প্রয়োগ স্থগিতের আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। আইনটি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে নোটিশ দিয়েছেন দেশটির সর্বোচ্চ আদালত। ওই আইনের বৈধতা খতিয়ে দেখতে এ নোটিশ দেওয়া হলো আজ বুধবার। আগামী ২২ জানুয়ারি ওই আইনের বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে করা মামলার পরবর্তী শুনানি হবে দেশের সুপ্রিম কোর্টে। এনডিটিভি অনলাইনের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
ভারতের প্রধান বিচারপতি এস এ বোবদের নেতৃত্বে সুপ্রিম কোর্টের তিন বিচারপতির বেঞ্চ ওই আইনের প্রয়োগ স্থগিত রাখার আবেদন খারিজ করেন। তাঁরা বলেন, আগামী ২২ জানুয়ারি ‘এই আইনটি স্থগিত রাখার বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।’
নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরোধিতা করে ৬০টি আবেদন জমা পড়ে সুপ্রিম কোর্টে। বিতর্কিত এই আইনটির বিরোধিতা করে আরও অনেকের মতো দেশের শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হন কংগ্রেসের প্রবীণ নেতা জয়রাম রমেশ, ইন্ডিয়ান ইউনিয়ন মুসলিম লীগ এবং আসামে ক্ষমতাসীন বিজেপির সহযোগী দল অসম গণ পরিষদ এবং ডিএমকে।
ভারতের প্রধান বিচারপতি এস এ বোবদের নেতৃত্বে তিন বিচারপতির বেঞ্চ এই আবেদন গ্রহণ করেন। বেঞ্চের অন্য বিচারপতিরা হলেন বিআর গাভাই ও সূর্যকান্ত।
বিতর্কিত নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে আদালতের দ্বারস্থ হয়ে আবেদনকারীরা যুক্তি দেখিয়েছেন যে ধর্মের ভিত্তিকে কখনোই নাগরিকত্ব প্রদান করা যায় না। তাঁরা বলেন, নতুন আইনটির মাধ্যমে ধর্মের ভিত্তিতে বিবেচনা করে অবৈধ অভিবাসীদের দেশের নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া সংবিধানের মূল কাঠামোর পরিপন্থী। এই আইন নাগরিকদের জীবন ও মৌলিক অধিকার তথা সাম্যের অধিকার লঙ্ঘন করে। কংগ্রেস নেতা আনন্দ শর্মা বলেছেন, আইনটি সংবিধানের মূল কাঠামোকে আঘাত করেছে।
এই আইন নিয়ে মোদি সরকারকে তীব্র আক্রমণ করেন তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন। তিনি বলেন, হিটলারের মতো একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পথে হাঁটছে কেন্দ্রীয় সরকার।
নতুন নাগরিকত্ব আইনে বলা হয়, পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে যেসব অমুসলিম মানুষ ধর্মীয় নিপীড়নের শিকার হয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন, তাঁরা এবার ভারতীয় নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
এই আইন বাতিলের দাবিতে রাজধানী দিল্লিসহ ভারতের বিভিন্ন এলাকায় কয়েক দিন ধরে চলেছে বিক্ষোভ, জ্বালাও–পোড়াও।
বিক্ষোভের মুখে গতকাল ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছেন, এই আইন বাস্তবায়ন তাঁরা করবেনই।