ভারতের পাশাপাশি পাকিস্তান থেকেও মার্কিন তৈরি পোশাকের ক্রয়াদেশ আসছে

0
28
আরশাদ জামাল, চেয়ারম্যান, তুসুকা গ্রুপ ও সাবেক সহসভাপতি, বিজিএমইএ

যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পণ্য রপ্তানিতে পাল্টা শুল্ক কার্যকর হওয়ার পর মার্কিন ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে আমরা ইতিবাচক সাড়া পাচ্ছি। পাল্টা শুল্কে প্রতিযোগী দেশগুলোর কাছাকাছি থাকার পাশাপাশি চীন ও ভারতের চেয়ে বাংলাদেশ সুবিধাজনক অবস্থায় থাকার কারণে তৈরি পোশাকের বাজার চাহিদা বাড়ছে।

ভূরাজনৈতিক বাস্তবতার অনেক দিন ধরেই চীন থেকে মার্কিন ক্রেতাদের তৈরি পোশাকের ক্রয়াদেশ স্থানান্তরিত হচ্ছিল। তার সঙ্গে উচ্চ শুল্কের বাড়তি চাপ যুক্ত হওয়ায় দেশটি থেকে ক্রয়াদেশ সরে আসার গতি বেড়েছে। তার একটি অংশ বাংলাদেশেও আসছে। আবার চীনের উচ্চ মূল্যের অনেক ক্রয়াদেশ যাচ্ছে ভিয়েতনামে। সেখান থেকে (ভিয়েতনাম) মধ্যম দামের তৈরি পোশাকের ক্রয়াদেশ বাংলাদেশে আসছে।

এদিকে ভারতের পণ্যে মোট ৫০ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপ হওয়ায় দেশটি থেকে মার্কিন ক্রয়াদেশ বাংলাদেশে আসছে। পাশাপাশি পাকিস্তান থেকেও ক্রয়াদেশ আসছে। তার কারণ, দেশটিতে খরচ বেড়ে গেছে। তা ছাড়া এবার তুলা উৎপাদন ভালো হয়নি। তারা নিজেদের তুলা দিয়ে তৈরি পোশাকই বেশি রপ্তানি করে। ব্যাংকিং ব্যবস্থা নিয়েও ঝামেলায় আছেন পাকিস্তানের উদ্যোক্তারা। সে জন্য পাকিস্তান থেকে সরে আসা ক্রয়াদেশ আমরা পাচ্ছি।

বাড়তি ক্রয়াদেশ নেওয়ার ক্ষেত্রে আমরা বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করেছি। আমরা সক্ষমতার অতিরিক্ত ক্রয়াদেশ নিচ্ছি না। এমনকি হুট করে বড় বিনিয়োগেও যাচ্ছি না। কারণ, বর্তমান শুল্ক কাঠামো যেকোনো সময় পরিবর্তিত হতে পারে। আবার ভূরাজনৈতিক কারণেও নতুন কোনো চ্যালেঞ্জ আসাটাও অস্বাভাবিক নয়। ফলে সতর্কভাবে আমাদের পা ফেলতে হবে।

বর্তমান প্রেক্ষাপটে বাড়তি ক্রয়াদেশ নেওয়ার ক্ষেত্রে আর্থিক সহায়তা নিশ্চিত করা জরুরি। তার কারণ, অনেক কারখানাই নিজেদের চাহিদা অনুযায়ী ব্যাংকে ব্যাক টু ব্যাক ঋণপত্র খুলতে পারছে না। তবে আমরা দেখছি বাংলাদেশ ব্যাংক প্রি-শিপমেন্ট ক্রেডিট খাতে পুনঃঅর্থায়ন স্কিম চালু করেছে। এ ধরনের সহায়তা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি রপ্তানিতে নগদ সহায়তা দেওয়ার বিষয়েও সরকারকে পরিষ্কার বার্তা দিতে হবে। তার কারণ, একটি ক্রয়াদেশ শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বেশ কয়েক মাসের ব্যাপার। হঠাৎ করে নীতি পরিবর্তন হলে উদ্যোক্তারা বিপদে পড়েন।

বর্তমান বাস্তবতায় বিদেশি বিনিয়োগে সুযোগ কাজে লাগাতে হবে। বিদেশি বিনিয়োগ আমাদের অনুমোদন দিতে হবে। তাহলে আমাদের পণ্য রপ্তানির পাশাপাশি আমাদের সক্ষমতা বাড়াতে বেশ কাজে দেবে।

—আরশাদ জামাল, চেয়ারম্যান, তুসুকা গ্রুপ ও সাবেক সহসভাপতি, বিজিএমইএ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.