ব্রয়লার মুরগি আর ডিমের দামে আগুন

0
120
ব্রয়লার মুরগি আর ডিমের বাজার

আমিষের চাহিদা পূরণে ডিম আর ব্রয়লার মুরগি স্বল্প আয়ের মানুষের দারুণ পছন্দ। বাজারে এই দুটি পণ্যের দামেও লেগে আছে ‘আগুন’। এর মধ্যে রেকর্ড দামে বিক্রি হচ্ছে ডিম। এখন প্রতিটি ডিমের দাম সাড়ে ১২ টাকা!

রেকর্ড না হলেও অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে ব্রয়লার মুরগির দাম। কেজি বিক্রি হচ্ছে সর্বোচ্চ ২১০ টাকায়। লাগামহীন দামের কারণে অনেকেই খাবারের তালিকা থেকে বাদ দিতে বাধ্য হচ্ছেন ব্রয়লার মুরগি। ডিমও কিনছেন আগের চেয়ে পরিমাণে কম।

শনিবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার থেকে দুই হালি (আটটি) ডিম কেনেন বেসরকারি চাকরিজীবী হারুনুর রশিদ। তিনি জানান, দাম বাড়ার কারণে এক ডজন না কিনে দুই হালি কিনেছেন। শুধু ডিম নয়, খরচ বাঁচাতে অন্য জিনিসের ক্ষেত্রেও একই রকম কাটছাঁট করছেন।

এই বাজারের মা রোকেয়া ব্রয়লার হাউস থেকে ২০০ টাকা কেজি দরে এক কেজি ৮০০ গ্রাম ওজনের একটি ব্রয়লার মুরগি কিনেছেন রিপন মিয়া। তিনি বলেন, ‘ডিজেলের দাম বাড়লেও এক লাফে মুরগরি দাম এত বাড়ার কোনো কারণ নেই। এক সপ্তাহ আগেও দেড়শ টাকার মধ্যে ব্রয়লার কিনতে পেরেছি। এমন কী ঘটনা ঘটল যে, কেজিতে ৫০ টাকা বাড়াতে হবে?’

এ ব্যাপারে এক বিক্রয়কর্মী জানান, ডিজেলের দাম বাড়ার কারণে মুরগি আনতে তাদের গাড়ি ভাড়া বেড়েছে। মুরগির খাদ্যের দামও বেড়েছে। এ ছাড়া মুরগি মরেও যায়। সব মিলিয়ে মুনাফার হিসাব করতে হয়।

কতটা অস্থিতিশীল পণ্য দুটির দাম- তা সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) বাজার দরের প্রতিবেদন দেখলে টের পাওয়া যায়।

সংস্থাটির তথ্য বলছে, গত ২ আগস্ট প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম ছিল ১৪৫ থেকে ১৫৫ টাকা। আর আজ বিক্রি হয়েছে ১৮৫ থেকে ২০০ টাকা। টিসিবির হিসাবে ১১ দিনে মুরগির দাম বেড়েছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা। তবে বাস্তবে বাজারে বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২১০ টাকা।

এ ছাড়া সোনালি জাতের মুরগির দামও বাড়তি। ১০ দিন আগে ২৫০ থেকে ২৭০ টাকায় বিক্রি হওয়া এই জাতের মুরগির বিক্রি হচ্ছে ২৯০ থেকে ৩১০ টাকায়।

দেশের ইতিহাসে ডিমের ডজন কখনোই দেড়শ টাকা স্পর্শ করেনি। গরিবের ‘মাংস’ খ্যাত এই খাদ্যপণ্যটির প্রতি ডজন কিনতে এখন ক্রেতার খরচ পড়ছে ১৫০ টাকা। টিসিবির তথ্য বলছে, এক সপ্তাহ আগেও ফার্মের প্রতি ডজন ডিম কেনা যেত ১২০ থেকে ১২৬ টাকায়। সেই হিসাবে এক সপ্তাহের ব্যবধানে দাম বেড়েছে ২৪ থেকে ৩০ টাকা।

টাঙ্গাইলের অন্যতম ব্রয়লার মুরগি ও ডিম উৎপাদনকারী সোহেল রানা বলেন, মুরগি পালনে মোট খরচের ৭৫ শতাংশই হয় খাবারের পেছনে। সম্প্রতি খাবারের দাম আরও বেড়েছে। এ ছাড়া অনেক খামারি লোকসানে পড়ে উৎপাদন বন্ধ রেখেছেন। কেউ কেউ ব্যবসা ছেড়েও দিয়েছেন। এ কারণে দাম বাড়ছে।

এক সপ্তাহের ব্যবধানে এত দাম বাড়ার পেছনে মূল কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই বাড়তি দরের কতটুকু পাচ্ছেন খামারিরা, সেটাও দেখতে হবে। খামার থেকে খুচরা পর্যায়ে যাওয়া পর্যন্ত যে মধ্যস্বত্বভোগীরা রয়েছেন তাঁরাও এর থেকে মুনাফা নিচ্ছেন। দাম বাড়ার পেছনে এটিও একটি কারণ।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.