ব্যবস্থা ৮০ শিশুর, থাকে ৮

0
130
কুমিল্লা নগরের পুরোনো মৌলভীপাড়া এলাকার দিবাযত্ন কেন্দ্র

মাসিক ১০০ টাকা চাঁদায় প্রতিদিন সকাল সাড়ে আটটা থেকে বিকেল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত শিশুদের রাখা হয়।

কুমিল্লায় আট বছর আগে নগরের পুরোনো মৌলভীপাড়া এলাকার দিবাযত্ন কেন্দ্র (ডে-কেয়ার সেন্টার) কার্যক্রম শুরু করে। সেখানে ৮০ শিশুর থাকার ব্যবস্থা থাকলেও বর্তমানে আছে মাত্র ৮ জন। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, দিবাযত্ন কেন্দ্র সম্পর্কে এলাকার লোকজন জানেন না। এ ছাড়া কেন্দ্রটি নগরের এক প্রান্তে। দূরত্বের কারণেও অনেকে এখানে শিশু ভর্তি করছেন না।

কুমিল্লার বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার প্রত্যয়ের নির্বাহী পরিচালক মাহমুদা আক্তার বলেন, কুমিল্লা রপ্তানিপ্রক্রিয়া এলাকা (ইপিজেড) ও কুমিল্লা বিসিক শিল্পনগরী এলাকার আশপাশে দিবাযত্ন কেন্দ্রটি হলে কর্মজীবী মায়েরা তাঁদের সন্তানদের সহজে রাখতে পারতেন। বর্তমানে কেন্দ্রটি নগরের এক প্রান্তে অবস্থিত। সেখানে কর্মজীবী নারী অপেক্ষাকৃত কম। তার ওপর কেন্দ্র সম্পর্কে প্রচারণা কম। সরকার দিবাযত্ন কেন্দ্রে এত সুযোগ-সুবিধা দিয়েছে, এরপরও আসন পূরণ হয়নি। এটা বাড়াতে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

জেলা মহিলা অধিদপ্তর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, নিম্ন আয়ের নারীদের সন্তানদের দেখভালের জন্য ২০১২ সালে কুমিল্লা নগরের হাউজিং এস্টেট এলাকায় ভাড়া বাড়িতে প্রথমবারের মতো দিবাযত্ন কেন্দ্র চালু হয়। পরবর্তী সময়ে ২০১৫ সালে পুরোনো মৌলভীপাড়ায় আরও বড় জায়গা ভাড়া নিয়ে কেন্দ্রের কার্যক্রম শুরু হয়। ৬ মাস থেকে ৬ বছর বয়সী ৮০টি শিশু রাখার ব্যবস্থা আছে এ কেন্দ্রে। বর্তমানে মাত্র ৮টি শিশু আছে। এখানে ভর্তি ফি ১০০ টাকা আর মাসিক চাঁদা ১০০ টাকা। ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন সকাল সাড়ে আটটা থেকে বিকেল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত শিশুদের রাখা হয়। শিশুদের সুষম খাবার, প্রাথমিক চিকিৎসা, খেলাধুলা, অক্ষরজ্ঞান ও ছবি আঁকা শেখানোরও ব্যবস্থা আছে।

গত রোববার দুপুরে দিবাযত্ন কেন্দ্রের কর্মকর্তারা বলেন, কেন্দ্রে নয়টি পদ আছে। এর মধ্যে চারটি পদ শূন্য, পাঁচজন কর্মরত আছেন। দিবাযত্ন কেন্দ্রের কর্মকর্তা কানিজ ফাতেমা বলেন, এখানে শিশুদের ভর্তির জন্য এলাকায় মাইকিং করা হয়। কিন্তু শিশুরা এখানে ভর্তি হয় না। অথচ এখানে শিশুদের উন্নত মানের খাবার দিচ্ছে সরকার। প্রতিদিন সকালে দুধ, পরোটা ও সুজি দিয়ে নাশতা দেওয়া হচ্ছে। দুপুরে সপ্তাহে দুই দিন মুরগি, দুই দিন ডিম ও এক দিন মাছ দেওয়া হয়। বিকেলে নাশতা দেওয়া হয়। রাতে এখানে কোনো শিশু থাকে না। গত এক বছরে মাত্র ২৮টি শিশু ভর্তি হয়েছে। তা-ও তারা অনিয়মিত।

কাঁসারিপট্টি এলাকার নাজমা আক্তারের সন্তান দিবাযত্ন কেন্দ্রে থাকে। তিনি বলেন, ‘সব সময় বাচ্চাকে দিয়ে আসতে পারি না। কোনো দিন ঘরের লোকজনের কাছে রাখি। যেদিন যায়, সেদিন ওরা ভালোভাবে যত্ন করে। রুটিনমতো খাবার দেয়। পরিবেশ ভালো।’

মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের উপপরিচালক জেসমিন আরা বলেন, গত রোববার দুপুরে তিনি দিবাযত্ন কেন্দ্র পরিদর্শনে গিয়ে আটটি শিশু দেখতে পান। তিনি কেন্দ্রটি অন্যত্র সরানোর জন্য বলেছেন। কেন্দ্রটি ইপিজেড এলাকার পাশে হওয়া দরকার। তাহলে কর্মজীবী মায়েরা কাজ শেষে বাচ্চা নিয়ে বাড়ি ফিরতে পারবেন। বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলবেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.