ব্যক্তিগত কোনো ইস্যু নিয়ে কথা বললে খারাপ লাগে

0
74
অভিনেত্রী হিমি।

ঈদের ২১টি নাটকে দেখা গেছে জান্নাতুল সুমাইয়া হিমিকে। এর মধ্যে ইউটিউব ট্রেন্ডিংয়ে রয়েছে দুষ্টু শ্বশুর মিষ্টি জামাই। প্রশংসা পাচ্ছেন মোহন আহমেদের তরী নাটক দিয়েও। নাটক ও অন্যান্য প্রসঙ্গে ‘বিনোদন’-এর সঙ্গে কথা বলেন তিনি।

অভিনেত্রী হিমি। ছবি: হিমির সৌজন্যে
অভিনেত্রী হিমি।

ঈদে কতগুলো নাটক প্রচারিত হয়েছে?

ঈদ উপলক্ষে ২৫টির মতো নাটকে অভিনয় করেছিলাম। তার মধ্যে ২১টি প্রচারিত হয়েছে। কিছু নাটক দর্শক বেশি পছন্দ করেছেন। কিছু নাটক নিয়ে সমালোচনাও করেছেন। দর্শকেরা নাটক নিয়ে কথা বলছেন, এটা সেরা প্রাপ্তি।

নাটক সংখ্যায় বেশি মনে হয়নি?

এগুলো বছরের বিভিন্ন সময়ে শুটিং করা। অনেক কাজ ঈদের আগেই প্রচারিত হওয়ার কথা ছিল। তবে এসব কাজের মধ্যে কমেডি, রোমান্টিক, ড্রামা—সব ঘরানার নাটকই ছিল। যে কারণে কিছু নাটক ভিউ বেশি হচ্ছে, কিছু নাটকের ভিউ কম হলেও দর্শকদের প্রশংসা সবচেয়ে বেশি পেয়েছি।

অভিনেত্রী হিমি। ছবি: হিমির সৌজন্যে
অভিনেত্রী হিমি।

কোনটি ইউটিউবে বেশি ভিউ হবে, এটা ভেবে অভিনয় করেন?

কোনটি ভিউ হবে আর কোনটি হবে না, এটা কাজ করার সময় কখনোই মাথায় থাকে না। এমনকি বাধ্য হয়েও আমি কাজ করি না। আমি কাজ করার আগে চিত্রনাট্য দেখি। তখন কোনো বিষয় নিয়ে কথা থাকলে পরিচালককে মতামত জানাই। কিন্তু কাজ করার সময় বোঝা যায়, এই কাজ মজার বা প্রেমের—এটা দর্শক দেখবেন। কিন্তু ভিউ কত হবে, এটা বলা যায় না।

ঈদে আপনার পছন্দের কাজ কোনটি?

‘তরী’ আমার পছন্দের কাজ। বানিয়েছেন মোহন আহমেদ। আমি বেশির ভাগ শহরকেন্দ্রিক কাজ করি। কাজটির জন্য আমাদের যেতে হয়েছে চট্টগ্রামে। ইমোশনাল গল্প, পাহাড়ি রাস্তাঘাট, চরিত্র—সবই দারুণ ছিল। আমি একটি হাসপাতালের আয়া। আর নিলয় ভাই লাশের গাড়ি চালায়। মানবিক গল্প। প্রথমেই আমরা নিশ্চিত ছিলাম, এই কাজের ভিউ বেশি হবে না। দুঃখ-কষ্ট আমাদের লাইফে এমনিতেই বেশি। বিনোদন নিতে গিয়ে সেগুলো দর্শকেরা দেখতে চান না। আবার কমেডি-নির্ভর দুষ্টু শ্বশুর মিষ্টি জামাই নাটকটি শুরু থেকেই ইউটিউব ট্রেন্ডিংয়ে রয়েছে। সেটাও আমার পছন্দের।

অভিনয়শিল্পী হিসেবে কাজ দিয়ে সামাজিক দায়িত্ব কতটুকু পালন করা সম্ভব হয়?

অবশ্যই দায়িত্ব পালন করা যায়। আমি ভিউ বিচার করে কখনোই কাজ দেখি না। কোন কাজ নিয়ে কতটা আলোচনা হচ্ছে, সেই নামগুলো যখন বারবার আসে, তখন মনে হয় নাটকটি দেখি। এ ধরনের কাজগুলো আমাদের পারিবারিক সম্পর্ক, মানবিকতা ও শিক্ষামূলক ঘটনা নিয়ে। দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে এমন কাজ করে যেতে চাই।

একজন অভিনয়শিল্পী হিসেবে কখনো মনে হয় ঝরে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে?

আমি চেষ্টায় বিশ্বাসী। সব সময় মনে হয়, আরও নতুন কী কাজ করা যায়। নিজের কাজ নিয়ে কখনোই সন্তুষ্ট থাকি না। নিজের খুঁত নিজেই বের করি। প্রত্যেক শিল্পী এমন একটা জায়গায় যেতে চান, যেখানে হয়তো যেতে পারিনি। আবার সেখানে পৌঁছালে হয়তো আর কাজ করতাম না। এখনো অনেক ভালো কাজ করতে হবে।

অভিনেত্রী হিমি। ছবি: হিমির সৌজন্যে
অভিনেত্রী হিমি।

ঈদে নিশ্চয়ই অনেক আত্মীয়স্বজন বাসায় এসেছিলেন, তাঁদের সঙ্গে নিজের কোনো নাটক দেখেছেন?

সব সময় চেষ্টা করি একসঙ্গে নাটক না দেখার। কখনো ড্রয়িংরুমে কাউকে আমার নাটক দেখতে দেখলে লক্ষ করি, তাঁরা কি আগ্রহী হয়ে নাটকটি দেখছেন নাকি বিরক্ত হচ্ছেন। মজার ব্যাপার, এবার একই সঙ্গে আমাকে টিভিতে ও সামনে দেখে শিশুরা অবাক হয়ে যাচ্ছিল। বেশ মজা লাগছিল। আমি বাসায় চুপচাপ থাকি বলে আমার নানাকে বিশ্বাস করাতে পারিনি আমি অভিনয় করি। মা ও নানি একসঙ্গে আমার নাটক দেখেন। আর বাবা কোথাও যদি দেখেন কেউ আমার নাটক দেখছেন, তিনি গোপনে ছবি তুলে এনে দেখান। সম্প্রতি এমন ঘটনা ঘটেছে। মাঝেমধ্যে লজ্জাও পাই। কাছের লোকেরাই আমার নাটকের বড় সমালোচক।

নেতিবাচক মন্তব্য কীভাবে নেন?

আমার চরিত্রের কথা বলার স্টাইল, অভিনয় ও কাজ নিয়ে কথা বললে ফিডব্যাক হিসেবেই নেওয়ার চেষ্টা করি। কারণ, এগুলো আমি পরিবর্তন করতে পারব। কিন্তু ব্যক্তিগত কোনো ইস্যু নিয়ে কথা বললে খারাপ লাগে। আমি দেখতে কেমন, আমার উচ্চতা, গায়ের রং বা অন্যান্য কিছু নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য করলে খারাপ লাগে। এর জন্য আমি দায়ী নই, এর কিছুই আমার হাতে নেই। এর কোনো পরিবর্তনও আমি করতে পারব না। শক্ত থাকার চেষ্টা করলেও মাঝেমধ্যে খারাপ লাগে। দুশ্চিন্তায় থাকলে আমার ভাই ও পরিবারের লোকেরা সাপোর্ট দেয়।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.