বোলিংয়ে মোস্তাফিজদের নতুন কোচ

0
685
বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের নতুন পেস বোলিং কোচ চার্ল ল্যাঙ্গেভেল্ট। ফাইল ছবি: এএফপি
শ্রীলঙ্কা সফরের পরেই বাংলাদেশ দলের সঙ্গে যোগ দেবেন নতুন পেস বোলিং কোচ চার্ল ল্যাঙ্গেভেল্ট। কীভাবে বাংলাদেশের পেস বোলারদের তৈরি করতে চান, এ বিষয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন তিনি।

 

চার্ল ল্যাঙ্গেভেল্টের সময় শুরু হচ্ছে বাংলাদেশের ক্রিকেটে। সাবেক দক্ষিণ আফ্রিকান এ পেসার দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন বাংলাদেশের পেস বোলিং বিভাগের। ২০২০ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ পর্যন্ত মোস্তাফিজুর রহমান, তাসকিন আহমেদ, রুবেল হোসেনদের উইকেট শিকারের পথ বাতলে দেওয়ার দায়িত্ব তাঁর। কোর্টনি ওয়ালশের সময়ে বাংলাদেশের গতি আক্রমণে যে বড় প্রশ্নবোধক চিহ্ন, সেটিকে কাটিয়ে ওঠার গুরুদায়িত্ব এ প্রোটিয়ার। এখনো দায়িত্ব নেননি, তবে নিজের নতুন চাকরি নিয়ে এরই মধ্যে ভাবতে শুরু করেছেন ৪৪ বছর বয়সী ল্যাঙ্গেভেল্ট। ইএসপিএন ক্রিকইনফোকে জানিয়েছেন তাঁর ভাবনা ও পরিকল্পনার কথা।

পেস বোলিংটা এখন বিরাট চিন্তার জায়গা। সেটা বোঝা গেছে বিশ্বকাপের সময়। শ্রীলঙ্কার প্রথম দুই ওয়ানডেতেও রুবেল, মোস্তাফিজদের নখদন্তহীন মনে হয়েছে। অথচ একটা সময় মনে হচ্ছিল গতির জায়গাটা আমাদের শক্তিরই। তাসকিন, মোস্তাফিজরা ভীতি আর সমীহ জাগিয়েছিলেন ক্রিকেট দুনিয়ায়। কিন্তু এখন তাঁদেরই দেখাচ্ছে নির্বিষ। ২০১৯ সালে নতুন বলে প্রথম পাওয়ার প্লেতে বাংলাদেশের পেসারদের মাত্র ৭ উইকেট নেওয়ার রেকর্ডটা কিন্তু দুশ্চিন্তারই জন্ম দেয়। ল্যাঙ্গেভেল্ট ব্যাপারটি নিয়ে ভেবেছেন। তিনি চান বাংলাদেশের বোলারদের শারীরিকভাবে শক্তিশালী করে তুলতে। মাথায় গেঁথে দিতে চান সঠিক জায়গায় ধারাবাহিকভাবে বল করে যাওয়ার ব্যাপারটাও, ‘প্রতিটি সংস্করণেই নতুন বলে আপনাকে ধারাবাহিকভাবে ভালো বোলিং করতে হবে। ধারাবাহিকভাবে লাইন-লেংথ ঠিক রাখা জানতে হবে। প্রতি ওভারে অন্তত ৪ থেকে ৫টি বল সঠিক জায়গায় করতে হবে।’

বাংলাদেশের কন্ডিশনটাও তিনি মাথায় রাখছেন। রাখছেন সিমিং কন্ডিশনের কথাটাও, ‘ঘরের মাঠে বেশির ভাগ সময় তাঁরা একজন বা দুজন পেসার খেলাতে পারেন। কিন্তু আপনি যখন দক্ষিণ আফ্রিকা, নিউজিল্যান্ড এবং অস্ট্রেলিয়ায় খেলবেন, সেখানে তিনজন পেসার ব্যবহার করতে হবে। সে জন্য আমাকে তিনজন শারীরিকভাবে সম্পূর্ণ ফিট পেসার খুঁজে বের করতে হবে যারা ধারাবাহিকভাবে ঠিক জায়গায় বোলিং করতে পারবে এবং সেটি করবে আগ্রাসী মনোভাব নিয়েই।’

ভালো করতে হলে নতুন বলের সঠিক ব্যবহার গুরুত্বপূর্ণই মনে করেন তিনি, ‘ভালো করতে হলে নতুন বলে ধারাবাহিক হতে জানতে হবে। লেংথেও হতে হবে ধারাবাহিক।’

মোস্তাফিজের দিকে এই প্রোটিয়া কোচের যে আলাদা নজর থাকবে, সেটাও জানিয়েছেন তিনি। এই বাঁহাতি পেসারের প্রতি তাঁর কিছু পরামর্শও আছে, ‘বলের গতির বৈচিত্র্য হিসাব করলে মোস্তাফিজ ভালো বোলার। কিন্তু নতুন বলে এই বৈচিত্র্য আনা কষ্টকর। উইকেটও সে সময় উপযোগী থাকে না। তবে আমি মনে করি, বলের সিম সোজাসুজি রাখাটা জরুরি। মোস্তাফিজ অনেক বেশি অফ কাটার ব্যবহার করে। তবে আমার কাছে মনে হয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হচ্ছে ডানহাতি ব্যাটসম্যানের বেলায় সুইং করে ভেতরে বল আনা আর বাঁহাতিদের বেলায় বল বাইরে টেনে নেওয়া।’

বাংলাদেশের পেস বোলিং কোচ হিসেবে চাকরিটা চ্যালেঞ্জিংই মনে করেন ল্যাঙ্গেভেল্ট, ‘এটা আমার জন্য দারুণ চ্যালেঞ্জ। আমি যখন দক্ষিণ আফ্রিকার কোচ ছিলাম, তখন দেখেছি, বাংলাদেশি বোলাররা বিদেশি কন্ডিশনে কী ধরনের সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে। দেখেছি লাইন ও লেংথ বজায় রাখতে কী ধরনের গলদঘর্ম হতে হচ্ছে তাদের। এই জায়গায় কাজ করার জায়গা আছে। এটা কী ধরনের সমস্যা সেটা খুঁজে বের করাই আমার বড় চ্যালেঞ্জ।’

বিদেশের মাটিতে ভালো করার জন্য পেস বোলিংয়ে উন্নতি করাটা যে গুরুত্বপূর্ণ সেটা বলেছেন ল্যাঙ্গেভেল্ট। তিনি ভালো পেসার খুঁজে বের করার ওপরও গুরুত্ব দিয়েছেন, ‘বিদেশে ভালো করতে হলে দলে ভালো পেসার থাকতেই হবে। ভারত এখন ভালো করছে কারণ তারা যেকোনো জায়গায় ভালো করছ। তাদের দারুণ স্পিনার তো আছেই সেই সঙ্গে আছে দুর্দান্ত সব পেসার। আমি চেষ্টা করব আমার সময় বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পারফরম করার মতো বেশ কয়েকজন পেসার খুঁজে বের করতে পারব।’

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.