রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার একটি বাসায় বিষক্রিয়ায় স্কুলপড়ুয়া দুই ভাইয়ের মৃত্যুর ঘটনায় গ্রেপ্তার ব্যক্তির সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেছে পুলিশ। ভাটারা থানা-পুলিশ এই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছে।
গ্রেপ্তার ব্যক্তির নাম টিটু মোল্লা। তিনি ডিসিএস অরগানাইজেন লিমিটেড নামের একটি বালাইনাশক (পেস্ট কন্ট্রোল) প্রতিষ্ঠানের কর্মী। গতকাল সোমবার রাতে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ভাটারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ বি এম আসাদুজ্জামান আজ মঙ্গলবার বলেন, বাসাটিতে তেলাপোকাসহ পোকামাকড় নিধনে কীটনাশক প্রয়োগ করেছিলেন টিটু।
চিকিৎসকের বরাতে পুলিশ ও পারিবারিক সূত্র বলছে, এই কীটনাশকের বিষক্রিয়ায় শাহির মোবারত জায়ান (৯) ও শায়ান মোবারত জাহিন (১৫) নামের দুই ভাইয়ের মৃত্যু হয়।
শিশু দুটির বাবা মোবারক হোসেন, মা শারমিন জাহান। এই দম্পতির অপর সন্তান (মেয়ে) সুস্থ আছে।
দুই শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় মোবারক হোসেন গতকাল সোমবার তিনজনকে আসামি করে ভাটারা থানায় একটি মামলা করেন।
ভাটারা থানা-পুলিশ সূত্র জানায়, অবহেলাজনিত মৃত্যুর অভিযোগে করা এই মামলায় টিটুকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে। তাঁর সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে।
মামলার এজাহার, পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গত শুক্রবার পোকামাকড় নিধনে একটি পেস্ট কন্ট্রোল প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের বাসায় ডেকে আনেন এই দম্পতি। কীটনাশক স্প্রে করার পর কর্মীরা বলে যান, ছয় ঘণ্টা যেন কেউ বাসায় না ঢোকেন। এরপর পুরো বাসা পরিষ্কার করে বসবাস করতে হবে। পরিবারটি বাইরে সময় কাটিয়ে বাসায় ফিরে ঘুমিয়ে পড়ে।
পরদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে অসুস্থ হয়ে পড়ে ছোট ছেলে শাহির। এরপর অসুস্থ হয়ে পড়ে তার বড় ভাই শায়ান। রোববার ভোরে দুই ভাইকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে শাহিরকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শায়ানও মারা যায়।
মোবারক হোসেনের বন্ধু এস এম সেলিম বলেন, তেলাপোকা মারার ওষুধের বিষক্রিয়া থেকে দুই ভাই মারা গেছে বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন।
মোবারকের বাড়ি কুমিল্লার মুরাদনগরে। তিনি ঢাকা রয়েল ক্লাব লিমিটেডের (উত্তরা) প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি।