বিশ্ববিদ্যালয় ওয়েবসাইটে মোদির ডিগ্রি পাওয়া যায়নি, রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন

0
212
নরেন্দ্র মোদি

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ডিগ্রি মামলার রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন জানালেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী ও আম আদমি পার্টির নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়াল। গুজরাট হাইকোর্টের কাছে তাঁর আবেদন, গুজরাট বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট অথবা অন্য কোথাও প্রধানমন্ত্রীর ডিগ্রির হদিস পাওয়া যায়নি। অথচ ওই বিশ্ববিদ্যালয় ও তাদের হয়ে আদালতে উপস্থিত দেশের সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা বলেছিলেন, ডিগ্রির প্রতিলিপি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটসহ অন্যত্রও জনসমক্ষে রয়েছে।

গুজরাট হাইকোর্টের বিচারপতি বীরেন বৈষ্ণব আবেদনটি গ্রহণ করেছেন। এ বিষয়ে তিনি গুজরাট বিশ্ববিদ্যালয়, কেন্দ্রীয় সরকার, মুখ্য তথ্য কমিশনার ও সাবেক তথ্য কমিশনার এম শ্রীধর আচার্যুলুকে নোটিশ পাঠিয়েছেন। আবেদনের পরবর্তী শুনানি ৩০ জুন।

কেজরিওয়াল আবেদনে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও তাঁর আইনজীবীর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি রায় দিয়েছিলেন। সেই রায়ের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে কোথাও প্রধানমন্ত্রীর স্নাতকোত্তর ডিগ্রি খুঁজে পাওয়া যায়নি। এর বদলে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ‘অফিস রেজিস্ট্রার’ রাখা হয়েছে। অফিস রেজিস্ট্রার ও ডিগ্রি এক হতে পারে না।
কেজরিওয়াল আবেদনে বলেছেন, মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত হাইকোর্টের রায় যেন বলবৎ করা না হয়।

গত মার্চে গুজরাট হাইকোর্ট প্রধানমন্ত্রীর ডিগ্রি দাখিল করতে মুখ্য তথ্য কমিশনারের নির্দেশ খারিজ করে দিয়েছিলেন। ওই মামলার দরুন কেজরিওয়ালের ২৫ হাজার রুপি জরিমানাও হয়েছিল।

সাবেক মুখ্য তথ্য কমিশনারকে এক চিঠিতে কেজরিওয়াল বলেছিলেন, কেন প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষাগত যোগ্যতা তথ্য কমিশন আড়াল করতে চায়, তা বিস্ময়কর! ওই চিঠির ওপর ভিত্তি করে সাবেক তথ্য কমিশনার গুজরাট বিশ্ববিদ্যালয়কে মোদির ডিগ্রি কেজরিওয়ালকে জানাতে নির্দেশ দেন।

ওই সময় গুজরাট বিশ্ববিদ্যালয় সেই নির্দেশের বিরোধিতা করে জানায়, কারও ‘শিশুসুলভ ও দায়িত্বজ্ঞানহীন কৌতূহল’ জনস্বার্থের বিষয় হতে পারে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের হয়ে সলিসিটর জেনারেল হাইকোর্টে বলেছিলেন, এ নিয়ে লুকোনোর কিছুই নেই। প্রধানমন্ত্রীর ডিগ্রি জনসমক্ষে রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটেও আছে।

গুজরাট হাইকোর্টের রায়ের পর কেজরিওয়াল রাজনৈতিকভাবে বিষয়টির মোকাবিলা করেছিলেন। প্রকাশ্যে বিস্ময় প্রকাশ করে বলেছিলেন, প্রধানমন্ত্রীর ডিগ্রি থেকে থাকলে তা প্রকাশে কেন এত আপত্তি, তা বোঝার অতীত। দেশের তো অবশ্যই, নিজের সম্মানের স্বার্থেও প্রধানমন্ত্রীর উচিত তাঁর ডিগ্রি–সম্পর্কিত যাবতীয় কৌতূহলের নিরসন করা।

পরবর্তী সময়ে কেজরিওয়াল এ কথাও বলেছিলেন, প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষিত হওয়া দেশের পক্ষে অত্যন্ত জরুরি। শিক্ষিত না হলে আমলাশাহি তাদের মতো করে প্রধানমন্ত্রীকে পরিচালনা করতে উৎসাহিত হবে।

নরেন্দ্র মোদির দাবি, তিনি ১৯৭৮ সালে গুজরাট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক পাস করেন। স্নাতকোত্তর ডিগ্রি পান দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৮৩ সালে। তাঁর বিষয় ছিল ‘এন্টায়ার পলিটিক্যাল সায়েন্স’। এই নামে ভারতের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো বিষয় পড়ানো হয় না বলে বিরোধীরা বলছেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.