বানেশ্বরে আম বেচাকেনা শুরু, গতবারের তুলনায় দাম কিছুটা কম

0
90
মৌসুমের প্রথম দিনে রাজশাহীর বানেশ্বর বাজারে গোপালভোগ আম

রাজশাহীর সবচেয়ে বড় আমের মোকাম বানেশ্বর বাজারে আম বেচাকেনা শুরু হয়েছে। গতকাল সোমবার মৌসুমের প্রথম দিনে প্রায় ১০০ মণ গোপালভোগ আম বেচাকেনা হয়েছে। তবে গত বছরের তুলনায় এবার আমের দাম কিছুটা কম। উৎকৃষ্ট জাতের আমের মধ্যে গোপালভোগই আগাম পাকে।

গতকাল সারা দিন বানেশ্বরে আম কেনার পর রাতে ট্রাক বোঝাই করে সেই আম দেশের বিভিন্ন এলাকায় পাঠানো হয়। হিসাব শেষে ব্যবসায়ীরা জানান, প্রথম দিনে প্রায় ১০০ মণ গোপালভোগ আম বেচাকেনা হয়েছে। তবে গুটি আমের পরিমাণ বেশি ছিল। গুটি আম ৪ মে থেকে পাড়ার জন্য জেলার আম সংগ্রহ, পরিবহন, বিপণন ও বাজারজাত মনিটরিং–সংক্রান্ত সভায় সিদ্ধান্ত হয়।

ক্রেতা-বিক্রেতারা জানান, গতবারের তুলনায় এবার আমের দাম কিছুটা কম। গত বছর মৌসুমের শুরুতে গোপালভোগ প্রতি মণ ২ হাজার থেকে ২ হাজার ২০০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। তবে এবার ভালো মানের আম ১ হাজার ৫০০ থেকে ১ হাজার ৯০০ টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে। যদিও মানভেদে ১ হাজার ৩০০ টাকা মণ দরে কিছু গোপালভোগ আম পাওয়া যাচ্ছে।

বানেশ্বর বাজারের বড় আমের আড়ত ‘মেসার্স হালিম এন্টারপ্রাইজের’ স্বত্বাধিকারী খাইরুল ইসলাম বলেন, প্রথম দিন বেচাকেনা শেষে বানেশ্বর থেকে প্রায় পাঁচ ট্রাক আম দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পাঠানো হয়েছে। তবে গোপালভোগ আম খুব বেশি ছিল না। তিনি বলেন, সব মিলিয়ে গোপালভোগ প্রায় ১০০ মণ ছিল। প্রথম দিনে ১ হাজার ৩০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা মণ দরে গোপালভোগ বেচাকেনা হয়েছে। ধীরে ধীরে বাজারে এই আম বাড়তে থাকবে।

‘ফ্রুটস হান্ট’ নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে রাজশাহীর আম বিক্রি করেন আলমগীর হোসেন। তিনি বলেন, প্রথম দিন অল্প পরিমাণে গোপালভোগ আম বাজারে ওঠে। যাঁরা অনলাইনে নতুন আম বিক্রি করছেন, তাঁরা প্রথম দিনে অল্প করে আম পাঠিয়েছেন। তিনি আরও দু-এক দিন পর গোপালভোগ আম ক্রেতাদের পাঠাবেন।

বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আগের দিনের চেয়ে অনেক বেশি গোপালভোগ আম বাজারে এসেছে। আমের গাড়ির কারণে রাজশাহী-নাটোর সড়কের ওপর যানজট সৃষ্টি হয়। ব্যবসায়ীরা রাস্তার পাশে বসে আম কেনাবেচা করেন। রাজশাহীতে ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, গুটি আমের পর গোপালভোগ ১৫ মে, লক্ষণভোগ বা লখনা ও রানীপছন্দ ২০ মে এবং হিমসাগর বা ক্ষীরশাপাতি ২৫ মে থেকে বাজারজাত করা যাবে। অন্যান্য জাতের আম আরও পরে আসবে বাজারে।

অতি উৎকৃষ্ট জাতের আমের মধ্যে অন্যতম গোপালভোগ। মাঝারি আকৃতির আমটি কিঞ্চিৎ লম্বা ও অনেকটা গোলাকার। ফলের বুক মাঝারি ও কাঁধ উঁচু। পাকার সময় বোঁটার পাশে হলুদ হয়। অন্যান্য অংশে কালচে সবুজ রঙের হয়ে থাকে। আমটির আঁশ নেই। অত্যন্ত রসাল আমটি মিষ্টিতে ভরা।

‘আম’ বইয়ের লেখক মাহবুব সিদ্দিকী লিখেছেন, উন্নত জাতের আমের মধ্যে গোপালভোগ খুবই মিষ্টি। এর খোসা সামান্য পুরু ও আঁটি পাতলা। মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে এ আম পাকতে শুরু করে। জুন মাসের প্রথম সপ্তাহের পর ধীরে ধীরে কমতে থাকে। জুনের মাঝামাঝি সময়ে দুষ্প্রাপ্য হয়ে যায়। পরিপক্ব গোপালভোগ মে মাসের ২০ তারিখের পর বাজারে আসে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.