বিশ্বকাপ জিতে এমবাপ্পেকে নিয়ে বিদ্রূপ, যে ব্যাখ্যা দিলেন মার্তিনেজ

0
255
কাতার বিশ্বকাপে সেরা গোলরক্ষকের পুরস্কার গোল্ডেন গ্লভ জেতেন এমিলিয়ানো মার্তিনেজ, রয়টার্স

তিন যুগ পর আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ে বড় ভূমিকা ছিল মার্তিনেজের। এর মধ্যে ফাইনালে ফ্রান্সের বিপক্ষে ছিলেন আর্জেন্টিনা রক্ষণের প্রধান ত্রাতা। শেষ মুহূর্তে র‍্যান্ডাল কোলো-মুয়ানির শট অবিশ্বাস্য সেভ করার পর টাইব্রেকারে রুখে দেন কিংসলি কোম্যানের শট। এমন নৈপুণ্যের স্বীকৃতি হিসেবে পান বিশ্বকাপের সেরা গোলরক্ষকের পুরস্কার গোল্ডেন গ্লভ।

তবে ফাইনালের পর উদ্‌যাপনের কারণে ভীষণভাবে সমালোচিত হন। অন্তত দুবার ফাইনালে হ্যাটট্রিক করা কিলিয়ান এমবাপ্পেকে নিয়ে ‘বিদ্রূপে’র দৃশ্য সামনে আসে। প্রথমবার ফাইনালের পরপর লুসাইল স্টেডিয়ামের লকার রুমে। আর্জেন্টিনার খেলোয়াড়েরা দল বেঁধে নেচে-গেয়ে উদ্‌যাপন করার সময় আচমকাই এমবাপ্পের জন্য ‘এক মিনিট নীরবতা’র ঘোষণা দিয়ে গান ধরেন, ‘এমবাপ্পে মরে গেছে!’ এরপর ট্রফি নিয়ে আর্জেন্টিনায় ফেরার পর আরেকবার এমবাপ্পেকে সামনে টেনে আনেন তিনি। বুয়েনস এইরেসের রাজপথে ছাদখোলা বাসে একটি পুতুল হাতে দেখা যায় মার্তিনেজকে। সেই পুতুলের মুখে ছিল এমবাপ্পের মুখের ছবি।

বিশ্বকাপ ফাইনালের পর প্রায় দুই মাস পর ফরাসি ক্রীড়া সাময়িকী ফ্রান্স ফুটবলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এমবাপ্পেকে নিয়ে করার মজার দীর্ঘ ব্যাখ্যা দিয়েছেন মার্তিনেজ।

বিশ্বকাপ ফাইনালে হ্যাটট্রিক করেন কিলিয়ান এমবাপ্পে

বিশ্বকাপ ফাইনালে হ্যাটট্রিক করেন কিলিয়ান এমবাপ্পে
রয়টার্স

আর্জেন্টাইন ফুটবলে ‘দিবু’ নামে পরিচিত এই গোলরক্ষক বলেন, ‘আমি কাউকে আঘাত করতে চাইনি। ক্যারিয়ারজুড়ে আমি ফরাসিদের সঙ্গে বেড়ে উঠেছি। কখনো একটুও সমস্যা হয়নি। আপনারা অলিভিয়ের জিরুকে জিজ্ঞেস করতে পারেন আমি কেমন মানুষ। আমি সত্যিই ফরাসি সংস্কৃতি এবং মানসিকতাকে পছন্দ করি।’

লকার রুমে এমবাপ্পেকে নিয়ে ‘এক মিনিটের নীরবতা’র গান ধরার ঘটনাটিতে ভিন্ন কিছু দেখছেন না মার্তিনেজ। বরং যুক্তি দিয়েছেন, ‘লকার রুমের ঘটনা কখনো বাইরে আসা উচিত নয়। তবু বলব, ২০১৮ বিশ্বকাপে আমাদের হারানোর পর ফ্রান্সও মেসিকে নিয়ে গান ধরেছিল। একইভাবে কেউ ব্রাজিলকে হারালে নেইমারকে নিয়ে গান ধরবে। এখানে এমবাপ্পের সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত কোনো ঝামেলা নেই। আমি তাকে অতিশয় সম্মান করি। আমরা যদি তাকে অথবা নেইমারকে নিয়ে গান ধরি, সেটা তারা সেরা খেলোয়াড় বলেই করি।’

ওর মুখোমুখি হয়ে বুঝেছি, সে খুবই প্রতিভাবান। লিও যখন ফুটবল ছাড়বে, সে অনেক অনেক ব্যালন ডি’অর জিতবেকিলিয়ান এমবাপ্পেকে নিয়ে এমিলিয়ানো মার্তিনেজ

আর্জেন্টিনায় ছাদখোলা বাসে ‘পুতুল এমবাপ্পে’ নিয়ে উদ্‌যাপনের বিষয়ে মার্তিনেজের বক্তব্য এ রকম, ‘ওই সময় মানুষ আমাদের দিকে প্রচুর পুতুল ছুড়ে মারছিল। পুরো পথে অন্তত এক শর মতো পুতুল এসেছে আমাদের কাছে। এর মধ্যে এমবাপ্পের মুখ লাগানো একটা পুতুল আমার পায়ের কাছে এসে পড়ে। দেখে হাসি আসায় ওটা আমি তুলে নিই। দুই সেকেন্ডের মতো আমার হাতে ছিল। এর পর ছুড়ে দিই। ঘটনা এটাই। এখানে এমবাপ্পেকে নিয়ে আমি মজা কীভাবে করলাম? সে তো আমার বিপক্ষে চারবার বল জালে পাঠিয়েছে। বিশ্বকাপ ফাইনালে চার গোল…আমাকে তো ওর মূর্তি ভাবার কথা। আবারও বলছি, আমি এমবাপ্পেকে অতিশয় সম্মান করি এবং এটাও বলে দিচ্ছি, আমার দেখা ফ্রান্সের খেলোয়াড়দের মধ্যে সে–ই সেরা।’

ফাইনালের পর এমবাপ্পের সঙ্গে কথা বলেছেন জানিয়ে মার্তিনেজ বলেন, ২৪ বছর বয়সী ফরাসি ফরোয়ার্ডই ভবিষ্যৎ ফুটবলের মহাতারকা, ‘ম্যাচের পর তাঁকে বলেছি, তুমি নিজের জন্য গর্বিত হতে পারো। মাথা উঁচু রাখো, তুমি দুর্দান্ত খেলেছ, তুমি বিশ্বসেরা খেলোয়াড়দের একজন। এটাও বলেছি, তোমার সঙ্গে খেলে আনন্দ পেয়েছি। একাই ফাইনাল জিতিয়ে ফেলছিল। ওর মুখোমুখি হয়ে বুঝেছি, সে খুবই প্রতিভাবান। লিও যখন ফুটবল ছাড়বে, সে অনেক অনেক ব্যালন ডি’অর জিতবে।’

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.