আইসিসির বিশ্বকাপ ২০২৩-এর সেরা একাদশ (ব্যাটিং অর্ডার অনুযায়ী)
কুইন্টন ডি কক (উইকেটকিপার), দক্ষিণ আফ্রিকা
৫৯.৪০ গড়ে ৫৯৪ রান
বিশ্বকাপ দিয়েই ওয়ানডে ক্রিকেটকে বিদায় বলেছেন ডি কক, তবে যাওয়ার আগে ইতিহাস গড়ে গেছেন। বিশ্বকাপের ইতিহাসে প্রথম উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান হিসেবে এক আসরে ৫০০ রান ও ২০টি ডিসমিসালের রেকর্ড গড়েছেন। ডিসমিসালের দিক দিয়ে ২০০৩ সালে অ্যাডাম গিলক্রিস্টের চেয়ে মাত্র ১টি পিছিয়ে তিনি। রোহিত শর্মার গড়া এক বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ পাঁচ শতকের রেকর্ডেও ঠিক তাঁর পরেই আছেন ডি কক। এবার তাঁর শতক চারটি।
রোহিত শর্মা (অধিনায়ক), ভারত
৫৪.২৭ গড়ে ৫৯৭ রান
টানা দ্বিতীয়বার আইসিসির সেরা একাদশে এলেন রোহিত। বিশ্বকাপে ভারতের ব্যাটিংয়ের সুরটা ধরে দিয়েছেন তিনি। গ্রুপ পর্বে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে ৬ বল খেলে ০ রানে আউট হয়েছিলেন। তবে পরের ম্যাচেই আফগানিস্তানের বিপক্ষে খেলেন ৮৪ বলে ১৩১ রানের ইনিংস, এরপর আর পেছেন ফিরে তাকাতে হয়নি। পাকিস্তানের বিপক্ষে সর্বোচ্চ ৮৬ রানের পর ইংল্যান্ডের বিপক্ষে খেলেন ৮৭ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস। দুটি ইনিংস ছাড়া ফাইনালসহ প্রতিবারই ৪০ পেরিয়েছেন তিনি।
বিরাট কোহলি, ভারত
৯৫.৬২ গড়ে ৭৬৫ রান
ডি কক, রোহিতের পর টপ অর্ডারে আছেন কোহলিও। গত বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মতো এবারও তিনি টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহক। ২০০৩ সালে শচীন টেন্ডুলকারের ৬৭৩ রানের রেকর্ড ভেঙে ৯৫.৬২ গড়ে এক আসরে সর্বোচ্চ ৭৬৫ রান করেছেন কোহলি। সেরা পারফরম্যান্স সেমিফাইনালে। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ১১৭ রানের ইনিংসটি ছিল টুর্নামেন্টে কোহলির তৃতীয় ও ওয়ানডেতে ৫০তম শতক, যে সেমিফাইনালে জিতে ১২ বছর পর ফাইনালে যায় ভারত।
ড্যারিল মিচেল, নিউজিল্যান্ড
৬৯ গড়ে ৫৫২ রান
ক্যারিয়ারের প্রথম ৫০ ওভারের বিশ্বকাপে চারে ব্যাটিং করে দুটি শতক করেছেন মিচেল, দুটিই ভারতের বিপক্ষে। যদিও দুটিতেই হেরেছে নিউজিল্যান্ড। গ্রুপ পর্বে ১৩০ রানের পর সেমিফাইনালে ১৩৪ রান, সব মিলিয়ে করেছেন ৫৫২।
লোকেশ রাহুল, ভারত
৭৫.৩৩ গড়ে ৪৫২ রান
পাঁচ নম্বরে নেমে টুর্নামেন্টে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলেছেন রাহুল, নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে পেয়েছেন শতকও। ফাইনালে ভারতের হয়ে সর্বোচ্চ ৬৬ রানের ইনিংস খেলেন, যদিও অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে শেষ পর্যন্ত পেরে ওঠেনি ভারত।
গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, অস্ট্রেলিয়া
৬৬.৬৬ গড়ে ৪০০ রান ও ৫৫ গড়ে ৬ উইকেট
ফাইনালে ছয়ে নামা ম্যাক্সওয়েলের ব্যাট থেকে আসে জয়সূচক রান। তবে এর আগেও টুর্নামেন্টে দলের হয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন তিনি। আফগানিস্তানের বিপক্ষে রান তাড়ায় খেলেছেন রেকর্ড ২০১ রানের অপরাজিত ইনিংস, যে ম্যাচ জিতে সেমিফাইনালে জায়গা নিশ্চিত করে অস্ট্রেলিয়া। তার আগে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ৩০৯ রানের রেকর্ড ব্যবধানের জয়ে ৪৪ বলে ১০৬ রানের ইনিংস খেলেন ম্যাক্সওয়েল, গড়েছেন বিশ্বকাপের দ্রুততম শতকের রেকর্ডও।
রবীন্দ্র জাদেজা, ভারত
৪০ গড়ে ১২০ রান ও ২৪.৮৭ গড়ে ১৬ উইকেট
অলরাউন্ডার হিসেবে পরের জায়গাটি জাদেজার। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে যুবরাজ সিংয়ের পর মাত্র দ্বিতীয় ভারতীয় স্পিনার হিসেবে বিশ্বকাপে ৫ উইকেট নেন। তিন দিন পর নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ২ উইকেট নিয়ে যুবরাজ ও অনীল কুম্বলেকে ছাড়িয়ে এক বিশ্বকাপে ভারতীয় স্পিনার হিসেবে সর্বোচ্চ উইকেটের রেকর্ড গড়েছেন।
যশপ্রীত বুমরা, ভারত
১৮.৬৫ গড়ে ২০ উইকেট
রোহিতের মতো বুমরাও টানা দ্বিতীয়বার বিশ্বকাপের সেরা একাদশে জায়গা করে নিলেন। গতবারের চেয়ে এবার ২টি বেশি উইকেট নিয়েছেন এ পেসার। ফাইনালেও নতুন বলে হুমকি হয়ে উঠেছিলেন, মিচেল মার্শ ও স্টিভেন স্মিথের উইকেট নিয়ে ভারতের ফিরে আসার ইঙ্গিতও দিয়েছিলেন।
দিলশান মাদুশঙ্কা, শ্রীলঙ্কা
২৫ গড়ে ২১ উইকেট
সেমিফাইনালে খেলা চার দলের বাইরে সেরা একাদশে আছেন শুধু শ্রীলঙ্কার এই উদীয়মান পেসার, ভারতের বিপক্ষে ৮০ রানে নেন ৫ উইকেট। তার আগেই নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ৪, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৩ এবং পাকিস্তান ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ২টি করে উইকেট নিয়েছেন এ বাঁহাতি পেসার। সর্বোচ্চ উইকেটশিকারির তালিকায় আছেন তিনে।
অ্যাডাম জাম্পা, অস্ট্রেলিয়া
২২.৩৯ গড়ে ২৩ উইকেট
টুর্নামেন্টজুড়েই বিশ্বের সেরা ব্যাটসম্যানদের ধন্দে ফেলে দেওয়া এ লেগ স্পিনার সব মিলিয়ে নিয়েছেন ২৩ উইকেট। শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান ও নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে টানা ৩ ম্যাচে নেন ৪টি করে উইকেট। সেমিফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে উইকেটশূন্য থাকলেও ফাইনালে বুমরার উইকেট নিয়ে এক বিশ্বকাপে মুত্তিয়া মুরালিধরনের ২৩ উইকেটের রেকর্ড ছুঁয়েছেন তিনি।
মোহাম্মদ শামি, ভারত
১০.৭০ গড়ে ২৪ উইকেট
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৭ উইকেট নিয়ে বিশ্বকাপের নকআউট পর্বে সেরা বোলিংয়ের রেকর্ড গড়েছেন। তার আগে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৫৪ রানে ৫টি ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১৮ রানে ৫ উইকেট নেওয়া শামিই এবারের বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি।
দ্বাদশ ব্যক্তি: জেরাল্ড কোয়েৎজি, দক্ষিণ আফ্রিকা
১৯.৮০ গড়ে ২০ উইকেট
আইসিসির টুর্নামেন্টের অভিষেকে প্রতি ম্যাচেই উইকেট নিয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকান পেসার। আনরিখ নর্কিয়া ও সিসান্দা মাগালার চোটের পর দক্ষিণ আফ্রিকার অন্যতম বড় অস্ত্র ছিলেন তিনি। ৮ ম্যাচে ২০ উইকেট নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে এক বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ উইকেটের রেকর্ডও গড়েছেন ২৩ বছর বয়সী।