ময়মনসিংহের তারাকান্দা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে ‘বিদ্রোহী প্রার্থী’ মোকাবিলা করতে হবে। আওয়ামী লীগের নেতারা বলেন, তাঁরা বিদ্রোহী প্রার্থীকে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে ও দলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কাজ করার অনুরোধ করবেন।
নির্বাচন কমিশন সূত্র জানায়, আগামী ১২ জুন তারাকান্দা উপজেলা পরিষদের নির্বাচন হবে। চেয়ারম্যান পদে চারজন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে তিনজন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে তিনজন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দেন। গতকাল বৃহস্পতিবার মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ে চেয়ারম্যান পদে চারজন প্রার্থীর মনোনয়নই বৈধ হয়েছে। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে একজনের প্রার্থিতা বাতিল হয়েছে।
চেয়ারম্যান পদে প্রার্থীরা হলেন, আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান ফজলুল হক, আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদবিষয়ক সম্পাদক নুরুজ্জামান সরকার, জাতীয় পার্টির প্রার্থী এম এ মাসুদ তালুকদার, ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী রফিকুল ইসলাম মণ্ডল।
২৫ মে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বিদ্রোহী প্রার্থীকে শেষ পর্যন্ত দলের স্বার্থে নিজের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের অনুরোধ করা হবে বলে জানিয়েছেন তারাকান্দা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রদীপ চক্রবর্তী। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে মুঠোফোনে তিনি বলেন, তাঁরা বিদ্রোহী প্রার্থীকে বোঝাবেন, তিনি যেন নিজের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে দলের পক্ষে কাজ করেন। তবে যদি বিদ্রোহী প্রার্থী শেষ পর্যন্ত মাঠে থাকেন, তাহলেও আওয়ামী লীগের প্রার্থীর জয় পেতে সমস্যা হবে না।
আওয়ামী লীগের প্রার্থী ফজলুল হক বলেন, তিনিও মনোনয়ন পাওয়ার পর নুরুজ্জামান সরকারকে ব্যক্তিগতভাবে অনুরোধ করেছেন প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে তাঁর পক্ষে কাজ করার জন্য।
তবে শেষ পর্যন্ত নির্বাচনের মাঠে থাকার কথা বলেছেন বিদ্রোহী প্রার্থী নুরুজ্জামান সরকার। তিনি বলেন, ‘জনগণের ইচ্ছায় আমি প্রার্থী হয়েছি। কাজেই সরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। হয়তো দল থেকে আমাকে বহিষ্কার করা হবে। তবু শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে আছি।’
আওয়ামী লীগের দলীয় সূত্রে জানা যায়, তারাকান্দা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রদীপ চক্রবর্তী, সাধারণ সম্পাদক বাবুল মিয়া সরকারসহ মোট ৮ জন আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন। দল থেকে বর্তমান চেয়ারম্যান ফজলুল হককেই মনোনয়ন দেওয়া হয়। ফজলুল হক ময়মনসিংহ জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক। তিনি দলীয় কোনো পদে নেই। পরে দলের এক সভায় মনোনয়নপ্রত্যাশীরা একমত হন যে মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে সবাই কাজ করবেন।
তবে নুরুজ্জামান সরকার বলেন, তিনি ওই সভাতেও বলেছেন, মনোনয়ন না পেলেও এবার তিনি নির্বাচনে অংশ নেবেন। বিদ্রোহী প্রার্থী হলেও এখন পর্যন্ত তাঁর ওপর তেমন চাপ নেই। তবে কর্মী-সমর্থকদের ওপর কিছুটা চাপ সৃষ্টি হচ্ছে।
তারাকান্দা নির্বাচন কর্মকর্তা সজল চন্দ্র সরকার বলেন, ২৬ মে প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে শুরু হবে প্রচারণা।