সরকার পতনের দিন ৫ আগস্ট সকালে চলছিল কারফিউ, রাজধানীতে তখনও থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছিল। বিজয় মিছিলের দিনেও প্রাণ গেছে ১শ’রও বেশি মানুষের। হতাহত হয়েছে বহু মানুষ। আহতদের অনেকেই এখন হাসপাতালে জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছেন।
প্রগতি সরণি এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ট্রিপল ই’ বিভাগের শিক্ষার্থী খায়রুল আলম। বুকে রক্ত জমাসহ নানা জটিলতা নিয়ে তিনি এখন লাইফ সাপোর্টে। খায়রুলের ভাই জানান, বুকে গুলি লেগেছে তার। বুকে প্রচণ্ড ব্যথা নিয়ে ছিলো তা প্রথমে বুঝতে পারেনি পরিবারের কেউই। ডাক্তাররাও তাদের এমন কিছু আগে জানায়নি বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন ২৬ বছর বয়সী রনি শেখ। তারও লাগবে জটিল অপারেশন। সদ্য পড়াশোনা শেষ করে একটা চাকরিতে ঢুকেছিল রনি। রনির বাবা জানান, ৫ আগস্ট সকাল সাড়ে ১০টার দিকে গুলিবিদ্ধ হয় রনি। তার মুখে গুলি লেগে সেটি এখন মেরুদণ্ডের হাড়ে আটকে আছে।
গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালের লাইফ সাপোর্টে আছেন প্রাইভেটকার চালক রাজু আহমেদ। একমাত্র ছেলেকে হাসপাতালের বেডে রেখে পাগলপ্রায় রাজুর মা। তার ছেলেকে কেন গুলি করা হলো এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পাচ্ছেন না এই মা।
লক্ষ্মীপুর কলেজের আরেক শিক্ষার্থী অন্তরও জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। তার চিকিৎসায় এগিয়ে এসেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহযাত্রীরা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক মুনিমা মাহরিন জানান, নিহত এবং আহতদের সংখ্যা কম নয়। বিভিন্ন হাসপাতালে কাতরাচ্ছে আন্দোলনের অনেকেই। এখনো যাদের খোঁজ নিচ্ছে না কেউ।
সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক সমন্বয়ক আয়াতুল্লাহ বেহেশতী। আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিতে প্রতিদিন ছুটছেন হাসপাতাল থেকে হাসপাতালে। তিনি জানান, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এখনও অনেকে নিখোঁজ। যত দিন যাচ্ছে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে বলেও জানান এই সমন্বয়ক।
বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবর বলছে ৪, ৫ ও ৬ আগস্ট সংঘর্ষ আর গোলাগুলিতে প্রাণ গেছে ৩শ’রও বেশি মানুষের।
আখলাকুস সাফা