আপিল বিভাগের দুজন বিচারপতি সম্পর্কে সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্যের সূত্রে বিএনপিপন্থী সাত আইনজীবীর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ এনে করা আবেদনের ওপর আগামী ১৯ অক্টোবর শুনানি হবে।
প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বিভাগ আজ বুধবার শুনানির এই দিন ধার্য করেন।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনে ২৭ আগস্ট ওই সংবাদ সম্মেলন হয়। এতে দেওয়া বক্তব্যের কয়েকটি লাইন উদ্ধৃত করে গতকাল মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. নাজমুল হুদা আবেদনটি করেন। এতে বিচারপতিদের নিয়ে ব্যানার, লিফলেটসহ বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের মিছিল ও অবস্থানের ছবি যুক্ত করা হয়। যে আইনজীবীদের বিরুদ্ধে আবেদনটি করা হয়েছে, তাঁরা হলেন কায়সার কামাল, এ জে মোহাম্মদ আলী, ফাহিমা নাসরিন, মো. আবদুল জব্বার ভূঁইয়া, মো. রুহুল কুদ্দুস, মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান খান ও গাজী কামরুল ইসলাম।
আদালত অবমাননার অভিযোগে করা আবেদনটি আজ আপিল বিভাগের কার্যতালিকার ১ নম্বরের ছিল। সকাল ৯টা ১৩ মিনিটে এজলাসে আসেন প্রধান বিচারপতি ও আপিল বিভাগের অপর তিন বিচারপতি।
বিচারপতিদের আসন গ্রহণের পর ক্রমানুসারে বিষয়টি ডাকা হলে আইনজীবী নাহিদ সুলতানা যূথী শুনানির জন্য ডায়াসের সামনে গিয়ে দাঁড়ান। এ সময় প্রধান বিচারপতি বলেন, অবমাননার আবেদনের ওপর অবকাশের পর শুনানি হবে। পরে আদালত ১৯ অক্টোবর শুনানির দিন রেখে আদেশ দেন। একই সঙ্গে হাইকোর্টের (১৫ বিএলটি) স্বতঃপ্রণোদিত রায়ের নির্দেশনা কঠোরভাবে মেনে চলতে বলা হয়েছে।
আইনজীবীরা বলছেন, হাইকোর্টের ওই রায়ে সুপ্রিম কোর্ট চত্বরে মিছিল-সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আর আগামী ৩ সেপ্টেম্বর থেকে সুপ্রিম কোর্টের অবকাশ শুরু হচ্ছে। সাপ্তাহিক ছুটিসহ অবকাশ শেষে ৮ অক্টোবর নিয়মিত আদালত বসবেন।
অবমাননার আবেদনকারীর আইনজীবী নাহিদ সুলতানা যূথী পরে সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিচারপতি এম এ মতিনের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চের দেওয়া রায়ের নির্দেশনা অনুসরণ করতে হবে বলেছেন আপিল বিভাগ। রায়ের সারাংশ অনুসারে আদালত প্রাঙ্গণে কোনো ঘেরাও, প্রিকেটিং, সমাবেশ অথবা এমন কোনো কাজ, যা বিচারকাজে বাধা প্রদান করে, তা করতে পারবে না। আদালত প্রাঙ্গণে কোনো ধরনের মিছিল-মিটিং, প্রিকেটিং করতে পারবে না। এ ছাড়া যারা আদালত অবমাননা করবে, তারা বাংলাদেশের কোনো আদালতে আইনজীবী হিসেবে দাঁড়াতে পারবে না, ওই রায়ে রয়েছে।’
পরে নিজ কার্যালয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, ‘হাইকোর্টের স্বতঃপ্রণোদিত রায়ের নির্দেশনা কঠোরভাবে পালন করতে সবাইকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নির্দেশনায় ছিল, সব আদালত প্রাঙ্গণে মাইক ব্যবহার করা যাবে না, মিছিল-মিটিং করা যাবে না। এই আদেশ অমান্য করে কোনো কাজ করলে আদালত অবমাননা হবে। অবমাননার বিষয়টি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সব ধরনের আদালতের কার্যক্রম থেকে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বিরত থাকবেন।