সরকারি চাকরিতে নিয়োগে কোটা ব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে দেশব্যাপী ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি পালন করছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। রাজধানীর মেরুল বাড্ডা এলাকায় সড়ক অবরোধ করে যানচলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা। তবে তাদের এ কর্মসূচিতে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে পুলিশ। এরই মধ্যে কয়েক দফায় দুপক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। একই পরিস্থিতি বিরাজ করছে রামপুরা এলাকায়ও।
বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০টার পর থেকে অবরোধ কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষার্থীরা।
সরেজমিনে মেরুল বাড্ডা এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের সড়কে অবস্থান নিয়েছেন কয়েকশ শিক্ষার্থী। তাদের কণ্ঠে শোনা যাচ্ছে বিভিন্ন স্লোগান। অবরোধের কারণে বন্ধ হয়ে গেছে যান চলাচল।
অবরোধের একপর্যায়ে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া দেয় পুলিশ। এ সময় প্রথমবার শিক্ষার্থীরা পিছু হটলেও পরে তারাও পুলিশের দিকে তেড়ে যান। পুলিশকে লক্ষ্য করে ছুড়তে থাকেন ইটপাটকেল। শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করতে সাউন্ড গ্রেনেড এবং কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে পুলিশ। এ সময় শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের ভিতর ঢুকে গেলেও তাদের দিকে রাবার বুলেট ছোড়া হয়।
এদিকে পুলিশ সংঘর্ষে জড়িয়েছে কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের সঙ্গেও। ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার এক পর্যায়ে ক্যাম্পাসের ভিতরে ঢুকে পড়ে পুলিশ সদস্যরা। পরে আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে রাবার বুলেট ছোড়ে তারা। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০ শিক্ষার্থী আহত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
রামপুরায় অবরোধ কর্মসূচি পালনকালে অন্দোলনকারীদের ওপর চড়াও হয়েছে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ-যুবলীগ নেতাকর্মীরা। বেলা সাড়ে ১১টার পর থেকে বাংলাদেশ টেলিভিশনের ২ ও ৩ নম্বর গেটের সামনের সড়কে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে তাদের কয়েক দফায় ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। একপর্যায়ে আগুন জ্বলতে দেখা গেছে রামপুরা পুলিশ বক্সে।
প্রসঙ্গত, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি ঘিরে সকাল থেকেই থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছিল রাজধানীজুড়ে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে উত্তপ্ত হয়ে উঠছে বিভিন্ন এলাকার পরিস্থিতি। রাজধানীর রামপুরা, মৌচাক, মালিবাগ, শান্তিনগর, কাকরাইল, পুরানা পল্টন ও গুলিস্তান এলাকায় যান চলাচল একেবারেই সীমিত। নিরাপত্তার শঙ্কায় বেশিরভাগ দোকানপাটও বন্ধ দেখা গেছে।
শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে পুলিশ-বিজিবি-র্যাব ও সোয়াটের হামলা, খুনের প্রতিবাদ, খুনিদের বিচার, সন্ত্রাসমুক্ত ক্যাম্পাস নিশ্চিত করা এবং কোটা ব্যবস্থার যৌক্তিক সংস্কারের দাবিতে বৃহস্পতিবার সারাদেশে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ বা সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচি পালন করছেন আন্দোলনকারীরা। কর্মসূচি চলাকালে শুধু হাসপাতাল, গণমাধ্যমসহ অন্য জরুরি সেবাগুলো ছাড়া সবকিছু বন্ধ থাকবে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।