সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন তৃতীয় আরেকটি মামলায় অভিযুক্ত হলেন তখন প্রেসিডেন্ট বাইডেন নিজের অঙ্গরাজ্যে ডেলাওয়ারে অবসর সময় কাটাচ্ছেন। সেখানে তিনি ডেলাওয়ার সমুদ্রসৈকতে ম্যাটস ফিশ ক্যাম্পে গেছেন। রেস্তোরাঁয় বসে ফ্রাইড মাছ খেলেন। ‘ওপেনহেইমার’ সিনেমা দেখলেন। সেখানে বেশ আয়েশে সময় কাটাচ্ছেন তিনি।
প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সঙ্গে যেসব সাংবাদিক ডেলাওয়ারে গেছেন, তাঁদের প্রেসিডেন্টের কাছ থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করছেন হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তারা। কেউ যাতে তাঁকে ডোনাল্ড ট্রাম্পের মামলা নিয়ে প্রশ্ন করতে না পারেন, সে জন্যই বোধ হয় এই ব্যবস্থা। আইনি ঝামেলা নিয়ে ব্যাপক চাপের মধ্যে আছেন আগামী নির্বাচনে তাঁর সম্ভাব্য রিপাবলিকান প্রতিদ্বন্দ্বী।
প্রেসিডেন্ট বাইডেন এক সপ্তাহের ছুটিতে রয়েছেন। রেস্তোরাঁয় রাতের খাবার সেরে গতকাল মঙ্গলবার রাতে তিনি ‘ওপেনহেইমার’ সিনেমা দেখতে হলে যান।
ওই দিনই বিশেষ কৌঁসুলি জ্যাক স্মিথ ২০২০ সালের নির্বাচনের ফল উল্টে দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগে করা মামলায় ট্রাম্পকে অভিযুক্ত করেন। তিনি ট্রাম্পের ওই চেষ্টাকে ‘আমেরিকার গণতন্ত্রে নজিরবিহীন আঘাত’ বলে উল্লেখ করেছিলেন।
হোয়াইট হাউস ও বাইডেনের পুনর্নির্বাচন প্রচার দলের কোনো সদস্য ট্রাম্পের সেই মামলার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র ইয়ান স্যামস সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা বরং আপনাদের বিচার বিভাগের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দিচ্ছি। এই ফৌজদারি মামলায় তারা স্বাধীনভাবে কাজ করবে।’
ট্রাম্পের ব্যাপক আইনি ঝামেলা আর বাইডেনের নীরবতা এমন সময়ে দেখা যাচ্ছে, যখন ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ঘনিয়ে আসছে। ২০২০ সালের তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনে ট্রাম্পকে হারিয়ে হোয়াইট হাউসে যান বাইডেন। মনে হচ্ছে, প্রেসিডেন্ট রাজনীতির এই আপ্তবাক্য মেনে চলছেন, ‘যখন তোমার প্রতিদ্বন্দ্বী ঝামেলার মধ্যে পড়বে, তখন তুমি পরিষ্কার অবস্থান নেবে এবং যেকোনো ধরনের সমালোচনা থেকে বিরত থাকবে।’
অধিকাংশ প্রেসিডেন্টের আমলে হোয়াইট হাউস বিচার বিভাগকে প্রভাবিত করতে পারে, এমন অবস্থান থেকে সব সময় নিজেকে আড়াল করে রেখেছে। প্রেসিডেন্ট বাইডেন প্রশাসন এমন এক পরিস্থিতি মোকাবিলা করছে যে এখন তাদের আরও বেশি সতর্ক থাকতে হচ্ছে।
হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি কারিন জিন–পিয়েরে গত শুক্রবার সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিচার বিভাগ স্বাধীন। কথাটা আপনারা আমাদের মুখ থেকে সব সময় শুনবেন। আমরা আইনের শাসনে বিশ্বাস করি। প্রেসিডেন্ট এ ব্যাপারে সব সময় একই অবস্থানে আছেন।
বাইডেনের চুপ থাকার এই পরীক্ষা তাঁকে ভবিষ্যতে আরও বেশি মোকাবিলা করতে হবে। কারণ, ট্রাম্প সমানতালে বাইডেন ও তাঁর পরিবারকে আক্রমণ করে যাচ্ছেন। ট্রাম্প তাঁর পরিবারকে ‘বাইডেনের অপরাধী পরিবার’ বলে আখ্যা দিচ্ছেন। তাঁর অভিযোগ, বিচার বিভাগকে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হচ্ছে।
সর্বশেষ জরিপে দেখা যাচ্ছে, বাইডেন (৮০) ও ট্রাম্পের (৭৭) মধ্যে আগামী নির্বাচনে তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে।