বাইডেনকে ঠেকাতে আরব-আমেরিকানদের ঐক্যবদ্ধের ডাক

0
131
আরব-আমেরিকানদের ঐক্যবদ্ধের ডাক

যুক্তরাষ্ট্রের আরব বংশোদ্ভূত মার্কিন মুসলমান অধ্যুষিত প্রদেশ মিশিগানে আসন্ন নির্বাচনে বর্তমান প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে পরাজিত করার জন্য ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে স্থানীয় মুসলিমরা। গাজা যুদ্ধে ইসরায়েলের পাশে অনড় অবস্থানে থাকার কারণে তারা এমন সিদ্ধান্তের কথা ব্যক্ত করেছেন। রাজনৈতিক সংগঠক সামারা লুকমান গত এক সপ্তাহ ধরে নামাজের পর মসজিদের বাইরে প্রচারপত্র বিলি করেছেন। ‘ফিলিস্তিনের জন্য ভোট করুন, বাইডেনের জন্য নয়’ এসব শ্লোগানে চালানো হচ্ছে প্রচারণা।

মিশিগানে গাজায় যুদ্ধ বন্ধের দাবিতে সোচ্চার শক্তিশালী আরব-আমেরিকান কমিউনিটি। ফিলিস্তিনের পতাকা, ব্যানার হাতে শ্লোগানে মুখরিত মুসলিম অধ্যুষিত ডিয়ারবোর্নের রাজপথ। একইসাথে আওয়াজ ওঠে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বিরুদ্ধে। ইয়েমেনি বংশোদ্ভূত এই অ্যাকটিভিস্ট আরবিতে বলেন, ‘বাইডেনকে ভোট দেবেন না।’ পথচারী অনেকেই তার সাথে একমত পোষণ করে বলছেন, ‘অবশ্যই’।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মিশিগানকে ‘সুইং স্টেট’ বা দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্য হিসেবে বিবেচনা করা হয়। দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্যগুলোর মধ্যে অন্যতম মিশিগান। এখানে কে জিতবে তা বলা কঠিন। ২০২০ সালের নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ এই অঙ্গরাজ্যে মাত্র দেড় লাখ ভোটের ব্যবধানে জিতেছিলেন বাইডেন। গাজা উপত্যকায় মৃত্যুর মিছিল বড় হতে থাকায় এখানকার বাসিন্দারা, যারা একসময় ডেমোক্র্যাট প্রার্থীকে বেছে নিয়েছিলেন, তারাই এখন বাইডেনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিচ্ছেন। যেখানে বেশিরভাগই আরব-আমেরিকান। চলতি মাসের শুরুতে সেখানে প্রচারণায় গিয়েছিলেন জো বাইডেন। কৃষ্ণাঙ্গ নেতাদের সাথে সাক্ষাৎ করলেও এড়িয়ে যান মুসলিম কমিউনিটিকে। তখনও বাইডেনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছিল মুসলিম আমেরিকানরা। নাখোশ মুসলিম ভোটারদের কমিউনিটি এবার আরও একাট্টা।

ডিয়ারবোর্নের মেয়র আব্দুল্লাহ হামাউদ বলেছেন, মিশিগানে হাজার হাজার মুসলিম ভোটার রয়েছে, যারা তাদের সমর্থন তুলে নেয়ার পরিকল্পনা করছে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের মতো ব্যক্তি আবার দায়িত্ব নিতে পারেন সে ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও বাইডেনকে ভোট দিতে নারাজ তারা। অনেকে প্রেসিডেন্টের কাছে প্রশ্ন করেন, গণতন্ত্র ধ্বংস ঠেকাতে কী পদক্ষেপ নেবেন তিনি?

ডেমোক্র্যাটদের সমর্থন দিলেও বাইডেন প্রার্থী হলে তাকে বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন মুসলিম কমিউনিটির নেতারা। এমনকি ডোনাল্ড ট্রাম্পসহ যে কাউকে ভোট দিতেও রাজি তারা।

আমেরিকান মুসলিম পলিটিক্যাল অ্যাকশন কমিটির প্রধান ড. মোহাম্মদ আলম বলেন, এটা যুদ্ধ নয়। গণহত্যার মাধ্যমে জাতিগত নিধন। যথেষ্ট হয়েছে। দিন শেষে জো বাইডেন নিজেকে ব্যর্থ প্রমাণ করেছেন। ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিশংসন ইস্যুতে আমেরিকান মুসলিমরা ৩ লাখ স্বাক্ষর সংগ্রহ করেছিলাম। অথচ তার নির্দেশে বিশ্বে একটি বোমাও পড়েনি। জো বাইডেন প্রার্থী হলে, ডোনাল্ড ট্রাম্পকেই ভোট দেবো। বাইডেনের বিপরীতে শয়তান দাঁড়ালেও তাকেই ভোট দেবো।

এর আগে, ২০২০ সালের নির্বাচনে ৬৪ শতাংশ মুসলিম ভোট পেয়েছিলেন জো বাইডেন। ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঝুলিতে পড়েছিল ৩৫ শতাংশ। তবে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদ সংস্থা এপি’র একটি জরিপ বলছে, গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন শুরুর পর বাইডেনের সমর্থন নেমে এসেছে ১৭ শতাংশে। কাকে ভোট দেবেন তা নিয়ে অনিশ্চয়তায় ২৫ শতাংশ মুসলিম আমেরিকান ভোটার।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.